টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পৌরসভা নির্বাচনে কেন্দ্র দখল করে ব্যালটে নৌকা মার্কায় সিল ও বিশঙ্খলার অভিযোগে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তাহেরুল ইসলাম তোতাকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (৩০ জানুয়ারি ) দুপুর আড়াইটার দিকে পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের টেপিবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে তাকে আটক করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, দুপুরের দিকে ওই কেন্দ্রে নৌকার স্লোগান দিয়ে একদল লোক কেন্দ্রে প্রবেশ করে নৌকা প্রতীকে জাল ভোট দিতে থাকে। বেশ কিছু ব্যালট পেপার তারা বাইরেও নিয়ে যায়। এ সময় কেন্দ্রে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র ও কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ভোটগ্রহণও সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয় এ কেন্দ্রে। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তাহেরুল ইসলাম তোতা কেন্দ্রের ভেতরের কক্ষ থেকে বের হতে পারেননি। পরে বিশঙ্খলার দায়ে পুলিশ তাকে আটক করে।
টেপিবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এটিএম শামসুজ্জামান বলেন, একদল লোক নৌকার মিছিল নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে নৌকা প্রতীকে জাল ভোট দিতে থাকে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আসার পর তারা পালিয়ে যায়। এসময় কিছু নৌকা প্রতীকে সিল মারা ব্যালট পাওয়া গেছে। তবে কী পরিমাণ ব্যালটে জাল সিল মারা হয়েছে সেই তথ্য দিতে পারেনি তিনি।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী নুসরাত এদীব লুনা বলেন, নির্বাচনি কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদককে আটক করা হয়েছে।
এর আগে ভূঞাপুর পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের কুতুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কক্ষ বন্ধ করে প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের বিরুদ্ধে নৌকা প্রতীকে সিল মেরে বাক্স বোঝাই করার অভিযোগ তোলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) মেয়র প্রার্থী আব্দুস সাত্তার। তিনি বলেন, ১ নম্বর কেন্দ্রে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সুযোগে প্রিজাইডিং অফিসার শাহীনুর ইসলাম ও পোলিং অফিসাররা কেন্দ্রের সব বাক্স একটি কক্ষে নিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। এরপর তারা ব্যালট পেপারে নৌকায় সিল মেরে বাক্স বোঝাই করে। অনেকগুলো বইয়েও নৌকার সিল দেখা যায়। ১নম্বর কেন্দ্র ছাড়াও প্রতিটি কেন্দ্রে জাল ভোট চলছে বলেও তিনি জানান।
ওই কেন্দ্রে দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসার শাহীনুর ইসলাম বলেন, দুই কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় ৩০-৩৫ মিনিট ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখা হয়। পরে ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
তিনি আরও বলেন, এখানে কোনও সিল মারার ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি খারাপ থাকায় কক্ষগুলো বন্ধ রাখা হয়।