X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা অবমাননা

ক্ষমা চেয়েছেন সেই ১৯ শিক্ষক, বাদী ও ছাত্রলীগ নেতাদের প্রত্যাখ্যান

রংপুর প্রতিনিধি
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০২:১৭আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০২:৩৫

বিজয় দিবসে জাতীয় পতাকাকে বিকৃত করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারকে ফুল দিতে আসা ও সে ছবি ফেসবুকে পোস্ট করা ১৯ শিক্ষক-কর্মকর্তা ঘটনার এতদিন পর উপাচার্যের মাধ্যমে দেশ ও জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। ওই ঘটনার তদন্ত করে প্রায় একমাস পর দেওয়া প্রতিবেদনে এর সত্যতার কথা জানায় গঠিত তদন্ত কমিটি। সে প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এসব শিক্ষক-কর্মকর্তাকে সর্বোচ্চ সতর্ক করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন উপাচার্য। তবে এই অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য জানিয়ে বিষয়টি আদালতে মীমাংসা হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মামলার বাদীসহ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি।

বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের প্রশাসক অধ্যাপক নাজমুল হক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মহান বিজয় দিবসে-বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক চত্বরে কিছু শিক্ষক-কর্মকর্তা শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের জন্য একটি জাতীয় পতাকা সদৃশ ব্যানারসহ ছবি তোলেন যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশব্যাপী সমালোচনার সৃষ্টি হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তদন্তে এর সত্যতা মেলে। ওই তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী সিন্ডিকেট এর বিশেষ সভায় পর্যালোচনায় দেখা যায়, অনাকাঙ্ক্ষিত ওই ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক-কর্মকর্তারা ছবি তোলায় অংশ নিয়েছেন। তবে তাদের বক্তব্য ও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ঘটনাটি অসতর্কতামূলক ও অনিচ্ছাকৃত। তবে বিষয়টি জাতীয়ভাবে সংবেদনশীল হওয়ায় প্রত্যেককে ভবিষ্যতের জন্য সর্বোচ্চ সতর্ক করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়াও সকলকে উপাচার্য মহোদয়ের মাধ্যমে প্রকাশ্যে দেশ ও জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা প্রত্যেকে ক্ষমা চেয়ে উপাচার্য মহোদয়ের কাছে লিখিত বক্তব্য দেন।

বেরোবিতে জাতীয় পতাকা বিকৃতি

এদিকে জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনা ১৯ শিক্ষক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরকারীদের অন্যতম বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সাধারন সম্পাদক মশিউর রহমান তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন ঘটনার পর পরেই জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্ত করে ঘটনার শতভাগ সত্যতা পেয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে। আমরাও তাজহাট থানায় মামলা দায়ের করেছি। সেই মামলায় পুলিশ ও মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়ের করা মামলায় পুলিশ তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। মামলা দুটি এখন বিচারাধীন। এ অবস্থায় উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ তার সহযোগীদের বাঁচাতে যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলেন তারাও উপাচার্যের পক্ষের লোক। সেই তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাকে অসাবধানতা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি বলেন, জাতীয় পতাকার অবমাননার ঘটনায় উপাচার্য নিজেও দায়ী। সে কারণে এতদিন তার মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি হাস্যকর।

অপরদিকে, জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনায় আরও একটি মামলার বাদী মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আসিফ বলেন, ঘটনার পরপরই তারা জাতির কাছে ক্ষমা চাইলে খুশি হতাম । কিন্তু সব ক্ষমা সব সময় ক্ষমার যোগ্য নয়। আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি, আদালতে বিচারে নির্ধারিত হবে তারা অপরাধ করেছেন কী না।

সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খুন করার পর কেউ ক্ষমা চাইলেই ক্ষমা হয় না। তারা ৩০ লাখ মানুষের আত্মাহুতি, দুই লাখ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত জাতীয় পতাকা বিকৃত করে অবমাননা করেছেন। ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। এর জন্য তাদের এতদিন পর ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টির পেছনে রহস্য আছে বলে মনে হয়।

/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
দেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
সিনেমা সমালোচনাদেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
দুবাই হয়ে ট্রানজিট ফ্লাইট স্থগিত করলো এমিরেটস
দুবাই হয়ে ট্রানজিট ফ্লাইট স্থগিত করলো এমিরেটস
ঢাকা শিশু হাসপাতালে আগুন
ঢাকা শিশু হাসপাতালে আগুন
রাজশাহীতে বইছে তাপদাহ, হাসপাতালে বাড়ছে রোগী
রাজশাহীতে বইছে তাপদাহ, হাসপাতালে বাড়ছে রোগী
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ