মেসে প্রবেশ করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত (১৭ ফেব্রুয়ারি) ১টায় রূপাতলী হাউজিং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বুধবার সকাল ৭টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় একটি বাস ভাঙচুর করা হয়। সড়কে ইট ও কাঠ ফেলে সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়।
পরিবহন শ্রমিকদের হামলার ঘটনায় আহত ২০ জনের মধ্যে ১১ জনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের নুরুল্লাহ সিদ্দিকী, রসায়ন বিভাগের এসএম সোহানুর রহমান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আহসানুজ্জামান, গণিত বিভাগের ফজলুল হক রাজীব, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের আলীম সালেহী, বোটানি ও ক্রপ সাইন্সের আলী হাসান, বাংলা বিভাগের মো. রাজন হোসেন এবং মার্কেটিং বিভাগের মাহবুবুর রহমান, মাহাদী হাসান ইমন, মিরাজ হাওলাদার ও সজীব শেখ। আহতরা শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে (পুরুষ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহতরা জানান, বুধবার রাতে রূপাতলী হাউজিং এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা মাহমুদুল হাসান তমালের মেসে হামলা চালায় কতিপয় পরিবহন শ্রমিক। তমাল মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারীদের একজন। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তমালকে উদ্ধারে এগিয়ে আসে আশপাশের বিভিন্ন মেসের শিক্ষার্থীরা। তখন ধারালো দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়।
হামলায় আহত ১১ জনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সকাল ৭টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় একটি বাস ভাঙচুর করা হয়। সড়কে ইট ও কাঠ ফেলে সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। অবরোধের কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। হামলাকারীদের গ্রেফতার ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত সড়ক অবরোধ অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সুব্রত কুমার দাস জানান, রাতে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান তিনিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক-কর্মকর্তা। পরবর্তীতে আহত সব শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তৌফিকুল সজল ও ফারজানা আক্তার মেমি নিজ বাড়ি খুলনায় যাওয়ার জন্য রুপাতলীস্থ বিআরটিসি কাউন্টারে যান। সেখানে কাউন্টার স্টাফ রফিক তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে মারধর ও লাঞ্চিত করেন ওই দুই শিক্ষার্থীকে। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে এবং রফিককে গ্রেফতারের দাবি জানায়। পুলিশ রফিককে ১ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করে। এর জের ধরে রাতে শিক্ষার্থীদের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে।