মহান একুশের চেতনা শিশু কিশোরদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কুড়িগ্রামে পাড়ায় মহল্লায় অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরির প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে জেলার ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রচ্ছদ কুড়িগ্রাম। প্রচ্ছদের আয়োজনে সাড়া দিয়ে জেলা শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় প্রায় অর্ধশত অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করেছে শিশু কিশোররা। একুশের প্রথম প্রহরসহ প্রভাতেও সেসব শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে শিশু কিশোররা।
প্রচ্ছদের সংস্কৃতিকর্মীরা জানান, আয়োজনটি সফল করতে প্রচ্ছদ কুড়িগ্রামের সংস্কৃতিকর্মীরা গত ১৫ দিন ধরে জেলা শহরের প্রতিটি পাড়া মহল্লা ও অলি-গলিতে শিশু কিশোরদের সংগঠিত করে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, মহান একুশে ফেব্রুয়ারির তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন। তাদেরকে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করে ভালোবাসা দিয়ে বাঁশ, গাছের ডাল, কলাগাছ, কাঠ, পুরোনো পেপার, মাটি, ইট, পাথর, বালিসহ হাতের কাছে যা পাওয়া যাবে তাই দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য উজ্জীবিত করে প্রচ্ছদের কর্মীরা। সাড়াও মেলে অভূতপূর্ব।
প্রচ্ছদ কুড়িগ্রামের সংগঠক ইমতে আহসান শিলু জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে সারা দেশের মতো কুড়িগ্রামেও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড থমকে গিয়েছিল। এছাড়াও এবারে শহীদ মিনারে ব্যাপক সমাগমে নিষেধাজ্ঞা ছিল। ফলে হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে পাড়া মহল্লায় শিশু কিশোরদের অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরিতে উৎসাহিত করতে আমরা এ আয়োজনটি করেছি। এটাকে প্রতিযোগিতা বলা মূলত শিশুদের উৎসাহিত করা।
প্রচ্ছদ কুড়িগ্রামের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল ভৌমিক জানান, একুশ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার এই চেতনা বর্তমান প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার পাড়ায় মহল্লায় অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণে উৎসাহিত করতে প্রচ্ছদ এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে কোমলমতি শিশু কিশোরদের মাঝে একুশের চেতনায় বাঙালি জাতীয়তাবোধের উন্মেষ ঘটবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবোধে শিশুরা বেড়ে উঠবে।
সকলের সহযোগিতায় এ আয়োজনটি প্রতি বছর অব্যাহত রাখার চেষ্টা করবে প্রচ্ছদ।
শ্যামল ভৌমিক বলেন, ‘আমরা চাই ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিময় এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে সারাদেশে এই উদ্যোগ ছড়িয়ে পড়ুক।’
শহীদ মিনার তৈরিতে অংশ নেওয়া শিশু কিশোরদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।