রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) চলমান পরীক্ষা ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে আটকে থাকা পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানান তারা। বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে অবস্থান কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা এ দাবি জানান। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে আগামী রবিবার পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেন তারা।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে প্যারিস রোডে অবস্থান নিয়ে চলমান পরীক্ষার ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবাসিক হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে শিক্ষার্থীরা মেসে ওঠেন। চলতি বছরের ২ জানুয়ারি থেকে পরীক্ষা শুরু হয়। ইতোমধ্যে অনেক বিভাগের পরীক্ষা শেষ পর্যায়ে। কোনও কোনও বিভাগে ল্যাব বাকি আছে। এ অবস্থায় স্থগিতাদেশের কারণে তাদের শিক্ষাজীবন আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে আটকে থাকা পরীক্ষা চালুর দাবি জানান তারা।
কর্মসূচিতে গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সামিরা খাতুন বলেন, ‘আমরা ২০১৯ সালের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। ইতোমধ্যে আমাদের থিওরি ও ভাইভা শেষ হয়েছে। কেবল দুটি গ্রুপের ল্যাব বাকি আছে, যা গত ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পরীক্ষা স্থগিতাদেশে ল্যাবগুলো আটকে গেছে। আমরা যেকোনও মূল্যে পরীক্ষা দিতে চাই।’
ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী তমালিকা হক বলেন, ‘২০১৯ সালের অনার্স শেষ বর্ষ ও মাস্টার্সের পরীক্ষা চলছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হঠাৎ করে এসব পরীক্ষা স্থগিত করে। পরীক্ষা হওয়াটা আমাদের জন্য খুবই জরুরি। ক্যাম্পাস বা হল খোলা নয়, পরীক্ষা নেওয়া হোক– এটাই আমাদের দাবি।’ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান এ শিক্ষার্থী।
পরে দুপুর সোয়া ১টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহামন। তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তার আশ্বাসে রবিবার পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে উপাচার্যকে অবহিত করেছি। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে সুন্দর সমাধান আসবে।’
কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ২ জানুয়ারি থেকে করোনার কারণে আটকে থাকা বিভিন্ন বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষ ও মাস্টার্সের পরীক্ষা শুরু হয়। তবে গত ২২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি সব বিশ্ববিদ্যালয় ২৪ মে খোলার ঘোষণা দেন। এর আগ পর্যন্ত সব পরীক্ষা স্থগিতের নির্দেশ দেয়। ওই দিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব পরীক্ষা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। এতে কয়েকটি বিভাগের পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই ফের স্থগিত হয়ে যায়।