চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের ওপর ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ’ চালিয়ে যাচ্ছে বেইজিং। মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বৈশ্বিক মানবাধিকার বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছর জিনজিয়াং-এ উইঘুর ছাড়াও অন্যান্য জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর বিরুদ্ধেও গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জিনজিয়াং-এ ১০ লাখেরও বেশি সাধারণ মানুষকে নিয়মবহির্ভূতভাবে আটক করে রাখা হয়েছে। ধর্ষণ, নির্যাতনের পাশাপাশি বলপূর্বক সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। বাধ্যতামূলক শ্রম আর কঠোর নিষেধাজ্ঞা তো রয়েছেই।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মানবাধিকার সংক্রান্ত এই প্রতিবেদনে বিশ্বের ১৮০টিরও বেশি দেশের পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। তিনি বলেন, ২০২০ সালের রেকর্ড প্রমাণ করেছে যে, বিশ্বের প্রতিটি অঞ্চলে মানবাধিকার ভুল পথে অগ্রসর হচ্ছে।
এদিকে চীনের নজরদারি থেকে রেহাই পাচ্ছে না বিদেশে বসবাসরত উইঘুর সম্প্রদায়ের সদস্যরাও। ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও ওয়েবসাইট বানিয়ে, নজরদারি সফটওয়্যারের মাধ্যমে তাদের টার্গেট করে চীনা হ্যাকাররা। উইঘুর নেতাকর্মী, সাংবাদিক ও বিক্ষুব্ধদের কম্পিউটার ও স্মার্ট ফোন হ্যাক করার চেষ্টা করতো তারা। এক পর্যায়ে সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুকের কাছে বিষয়টি ধরা পড়ে।
দুইটি চীনা কোম্পানি হ্যাকিং-এর জন্য অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপও তৈরি করেছিল। ফেসবুক জানিয়েছে, পুরো বিষয়টি বুঝতে পেরে তারা হ্যাকিং কার্যক্রমে বাধা দেয়। এতে ব্যবহৃত প্রায় শখানেক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
জিনজিয়াং থেকে হ্যাকাররা ৫০০ উইঘুর অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার চেষ্টা করেছিল। উইঘুর সম্প্রদায়ের এসব মানুষ মূলত অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, কাজাখস্তান, সিরিয়া, তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা।
ফেসবুক জানিয়েছে, উইঘুরদের নিউজ সাইটের মতো অবিকল দেখতে ওয়েবসাইট বানিয়েছিল হ্যাকাররা। তার মাধ্যমে এবং ফেসবুক অ্যাকাউন্টকে হাতিয়ার করে তারা নজরদারির চেষ্টা করছিল। নানাভাবে সাইবার-চরবৃত্তির চেষ্টা করছিল। তারা উইঘুরদের ওয়েবসাইট, স্মার্টফোন বিকল করার চেষ্টাও করছিল। ফেসবুক এই ধরনের সব ওয়েবসাইটের নাম জানাবে বলে জানিয়েছে। সূত্র: আল জাজিরা, ডিডাব্লিউ।