বিআরটিসি বাসের ট্রিপ ব্যবস্থাপনায় জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এটি সম্ভব হলে কোন বাস কোথায় আছে তা সহজে জানা যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ওবায়দুল কাদের রবিবার (১১ এপ্রিল) তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে এ নির্দেশনা দেন। তিনি বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশন-বিআরটিসি’র ২৪২ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর জন্য তিন কোটি টাকার গ্র্যাচুইটি ঘোষণা করেন।
বিআরটিসির ট্রিপ ব্যবস্থাপনা ও টিকেটিংসহ রাজস্ব আয়ের কাতগুলো ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে অনিয়ম কমে আসে। ট্রিপ ব্যবস্থাপনায় জিপিএস প্রযুক্তির ব্যবহার করা যেতে পারে। তাহলে কোন গাড়ি কোথায় আছে সহজেই জানা যাবে।’
বিআরটিসি’র নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা দক্ষতার উন্নয়ন জরুরি মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিআরটিসি বহরে গাড়ির সংখ্যা ঠিকই বেড়েছে, কিন্তু যে হারে আয় বাড়ার কথা তা বাড়ছে না। বিআরটিসি’র রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য বিশেষ নজর আমাদের দিতে হবে।’
প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য নির্ধারণ, সেবার গুণগত মানোন্নয়ন, জনআস্থা তৈরি, ব্যবস্থাপনার দক্ষতা, সময়মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং অনিয়ম ও জবাবদিহিতার ঘাটতির কারণে সরকারি খাতের অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান লোকসান দিচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘অনিয়মের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসে বিআরটিসিকে জনগণের আস্থার বাহনে রূপান্তর করতে হবে।’
এ সময় মন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিআরটিসিকে এগিয়ে নিতে, এর বহরে সহস্রাধিক বাস ও ট্রাক সংযোজনসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।’
‘আওয়ামী লীগ নিজস্ব ইতিহাস তৈরি করছে’—বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ অবান্তর দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নিজস্ব ইতিহাস তৈরির কোনও কারখানা নেই, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা তথা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের মীমাংসিত সত্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং এর চর্চাও অনুসরণ করে।’
মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার পূর্বাপর ইতিহাস বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘দেশের এই বিকৃত ইতিহাসের জনক বিএনপি। মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ককে বাদ দিয়ে তারা রচনা করতে চেয়ছিল খণ্ডিত ও বিকৃত ইতিহাস। তারা ৭৫ এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনি “জয় বাংলা”কে নির্বাসনে পাঠিয়েছিল। স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে করেছিল নিষিদ্ধ। ইতিহাসের নায়ককে তারা ভিলেনে রূপ দেওয়ার অপচেষ্টা করেছিল। তারা স্বাধীনতার ঘোষণার অন্যতম পাঠককে ঘোষক বানাতে চেয়েছিল। ইতিহাসের ফুটনোটকে ইতিহাসের নায়ক বানাতে চেয়েছিলেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইতিহাস চলে ইতিহাসের গতিতে। হাতের তালু দিয়ে যেমনি সূর্যকে ঢাকা যায় না, তেমনি স্বাধীনতার ইতিহাস আজ স্বমহিমায় সমুজ্জ্বল।’
যারা ইতিহাসের পায়ে শিকল পরিয়েছিল, আজ তাদের স্বরূপ উন্মোচিত হচ্ছে মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘তাইতো তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, শুরু করছে পুরনো খেলা।’ তিনি বলেন, ‘জনগণ এখন সজাগ রয়েছে স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি ও স্বাধীনতার মূল্যবোধ বিনষ্টের বিরুদ্ধে।’