X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

সড়কে ফেলে যাওয়া বৃদ্ধা হালিমার ইচ্ছা পূরণ!

হিলি প্রতিনিধি
১৬ এপ্রিল ২০২১, ১৭:১৩আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২১, ১৭:১৩

সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া শত বছর বয়সী বৃদ্ধা হালিমার ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার শৌলা গ্রামের রজ্জব আলীর স্ত্রীর হালিমা বেগমকে চলাফেরার সুবিধার জন্য একটি হুইল চেয়ার দেওয়া হয়েছে। থাকার জন্য তৈরি করে দেওয়া হবে একটি ঘর। আর সেইসঙ্গে দেওয়া হয়েছে ভাতার কার্ড। জীবনের শেষ সময়টা যাতে শান্তিমতো কাটাতে পারেন সেই সুযোগ করে দিয়েছেন ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফিউল আলম ও ঘোড়াঘাট থানার ওসি আজিম উদ্দিন।

গত ২৮ মার্চ শত বছর বয়সী হালিমাকে রাস্তায় ফেলে রেখে যায় সৎ ছেলে আতিয়ার রহমান। এরপর স্থানীয় সমাজসেবক ইঞ্জিনিয়ার ছাপ্পু জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল দিলে ঘোড়াঘাট থানার ওসি আজিম উদ্দিন গভীর রাতে রাস্তার পাশ থেকে হালিমাকে উদ্ধার করেন। এরপর ওসি বৃদ্ধা হালিমার খোঁজ খবর রাখতেন।

জানা যায়, প্রায় ১০ বছর আগে হালিমার স্বামী রজ্জব আলী মারা যান। রজ্জব আলীর প্রথম স্ত্রী ছিলেন হালিমা। তবে সন্তান না হওয়ায় রজ্জব আলী দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বৃদ্ধা হালিমার সতীন একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়ে মারা যান। সেই থেকে সতীনের মেয়েকে নিজের মেয়ের মতো বড় করেছেন হালিমা। পরে তার স্বামী তৃতীয় বিয়ে করেন। তৃতীয় স্ত্রীও একটি ছেলে সন্তান জন্ম দিয়ে মারা যান। এর পর দুই সতীনের দুই ছেলে-মেয়েকে মায়ের আদরে বড় করেছেন হালিমা।

তবে বুড়ো বয়সে ভ্যানচালক ছেলে এবং দিনমজুর মেয়ের জামাই চাইলেও হালিমার সব ইচ্ছা পূরণ করতে পারতেন না। গত ২০১৯ সালে কিডনি জনিত সমস্যায় পড়েন হালিমা। পাশাপাশি বয়সের ভারে বিছানায় পরে যান। কখনও ছেলের ঘর, আবার কখনও মেয়ে জামাইয়ের ঘরে পাল্টাপাল্টি করে দিন কাটছিলো তার। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়া এবং অগণিত শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত বৃদ্ধা হালিমার শেষ ইচ্ছা ছিল একটি ঘর এবং চলাফেরা করার জন্য একটি হুইল চেয়ারের।

এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) হালিমার বাড়িতে গিয়ে তাকে একটি সরকারি বরাদ্দের ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার জায়গা নির্ধারণ এবং বৃদ্ধা হালিমা ও তার মেয়ের জামাইয়ের নামে পৃথক দুটি ভাতার কার্ড হস্তান্তর করেন ইউএনও রাফিউল আলম। আর বৃদ্ধার চলাচলের জন্য ব্যক্তিগত তহবিল থেকে একটি হুইল চেয়ার দেন ওসি আজিম উদ্দিন। এছাড়া বৃদ্ধা যতদিন বেঁচে থাকবেন, ততদিন ওসি তাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

বৃদ্ধা হালিমার মেয়ে তহুরা বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, দিন এনে দিন খেয়ে আমাদের সংসার চলে। ইচ্ছা থাকার পরেও মায়ের অনেক ইচ্ছাই আমরা পূরণ করতে পারি না। আমার নিজের মাকে দেখিনি। তবে আমার এই মা আসল মায়ের অভাব কোনোদিন বুঝতে দেননি। তার শেষ ইচ্ছা পূরণে সরকারি সহায়তা পাওয়ায় আমরা কৃতজ্ঞ।

এ সময় ইউএনও এবং ওসির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ১ নম্বর বুলাকিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান লাভলু, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল আওয়াল, ঘোড়াঘাট থানার উপ-পরিদর্শক দুলু মিয়া এবং খুরশীদ আলম প্রমুখ।

 

/টিটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী