X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

ফসল নষ্ট করে খাল পুনর্খননের অভিযোগ

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
১৬ এপ্রিল ২০২১, ১৭:৪৩আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২১, ১৭:৪৩

জয়পুরহাটে কৃষকের জমি দখল ও ফসল নষ্ট করে খাল পুনর্খননের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলার সদর উপজেলার সোয়া ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ হেলকুন্ডা খাল গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পুনর্খননের কাজ শুরু হয়েছে। এতে খালের দুই পাড়ের বেশ কিছু জমির ধান মাটিচাপা পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে।

সদর উপজেলার হেলকুন্ডা, হানাইল ও কাদিপুর মৌজার কৃষকরা ফসলের ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি ধান কেটে ঘরে না তোলা পর্যন্ত খাল খননের কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছে।

কৃষকরা জানিয়েছে, গত সোমবার তারা এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে জানা গেছে, জয়পুরহাট সদর উপজেলার ৬ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ হেলকুন্ডা খাল পুনর্খনন কাজ শুরু হয় গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে। এতে বরাদ্দ হয় ৯০ লাখ টাকা। খাল খননের দায়িত্ব পায় যশোরের মিশনপাড়া পুরাতন কসবার মেসার্স নুর হোসেন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধি হিসেবে খনন কাজ দেখভাল করছেন নাটোরের মুক্তার হোসেন নামের এক ব্যক্তি। কৃষকদের দাবি, খালটির প্রস্থ মাত্র ১০ ফুট। অথচ ঠিকাদার তাদের ব্যক্তিগত ৪৫ ফুট জমি দখলে নিয়ে আধপাকা ধান ক্ষেতে খাল পুনর্খনন ও মাটি ভরাট করছে। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। বাধা দিতে গেলে ঠিকাদারের পক্ষ থেকে মামলাসহ নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। ভয়ভীতির কারণে অনেকেই কাঁচা ধান গাছ কেটে মাটি ভরাটের জায়গা করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

কৃষকদের দাবি, এক মাস পর খাল খনন করলে তাদের বোরো ধানের ক্ষতি হতো না। এ অবস্থায় চলমান খাল খননে ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি এক মাসের জন্য খাল খনন কাজ বন্ধের দাবিতে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে তারা আবেদন করেছেন।

হেলকুন্ডা গ্রামের কৃষক আবু মাসুম বলেন, ‘অনেক টাকা খরচ করে আমরা বোরো চাষ করেছি। জমিতে ধানও প্রায় পেকে গেছে। আর এক মাস পর এই ধান তাদের ঘরে ওঠার কথা। কিন্তু যেভাবে মাঠের ভিতর দিয়ে স্কাভেটর মেশিনে খাল পুনর্খনন কাজ করা হচ্ছে তাতে তার বেশ কিছু আধপাকা ধান নষ্ট হয়ে যাবে।

হানাইল গ্রামের কৃষক মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আগে জানলে আমরা খালপাড়ের জমিতে ধানচাষ করতাম না। এখন আধপাকা ধান কেটে খালের মাটি ভরাটের জায়গা খালি করতে হচ্ছে। না কাটলে ঠিকাদার ধানক্ষেতের উপর মাটি ভরাট করছে।

একই এলাকার কৃষক হাফিজুল, ফিরোজ আলম ও রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা খাল কাটার বিরোধিতা করছি না। আমাদের দাবি, ধান কেটে নেওয়ার পর খাল খনন করা হোক। এতে ক্ষতি থেকে আমরা রেহাই পাব। কিন্তু ঠিকাদার আমাদের কোন কথায় শুনছেন না। জোর করে তিনি খাল খনন অব্যাহত রেখেছেন।

কৃষকের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারের প্রতিনিধি নাটোরের মুক্তার হোসেন মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমরা কৃষকের জমিতে নয়, খাল খনন করছি পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায়। সময় কম থাকার কারণে বিলম্ব করাও সম্ভব হচ্ছে না। কাজেই দ্রুত সময়ে খাল খনন কাজ শেষ করা হবে’।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের নীতিমালা মেনে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে হেলকুন্ডা খাল পুনর্খননের কাজ শান্তিপূর্ণভাবে চলছে। কৃষকের কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘কৃষকের ক্ষতি করে খাল খনন করা যাবে না। ক্ষতি করলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে’।

 

/এনএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না কয়েকটি এলাকায়
৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না কয়েকটি এলাকায়
জাবির সিনেট ও সিন্ডিকেট প্রতিনিধি নির্বাচন: বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নিরঙ্কুশ জয়
জাবির সিনেট ও সিন্ডিকেট প্রতিনিধি নির্বাচন: বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নিরঙ্কুশ জয়
ঝুঁকি নিয়ে পজিশন বদলে সব আলো কেড়ে নিলেন রাফায়েল
ঝুঁকি নিয়ে পজিশন বদলে সব আলো কেড়ে নিলেন রাফায়েল
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক