X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্ববাসীর কাছে মুক্তিযুদ্ধের চিত্র যেভাবে তুলে ধরেছিলেন কবরী

বিনোদন ডেস্ক
১৭ এপ্রিল ২০২১, ০২:৪৩আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২১, ১১:৪৫

১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে জন্মগ্রহণ করে ছোট্ট শিশু মিনা পাল। বাবা শ্রীকৃষ্ণদাস পাল এবং মা লাবণ্য প্রভা পাল। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে উঠেছিলেন তিনি। তারপর টেলিভিশন ও সবশেষে সিনেমায়। সদর্পের পদচারণা উদ্ভাসিত হওয়া এ শিল্পীর আরও একটি নাম আছে- কবরী, সারাহ বেগম কবরী। বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি।

তবে বিনোদনের এ মাধ্যমগুলোতেই শুধু নয়, প্রথিতযশা এ তারকা কাজ করছেন মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও।

বিশ্ববাসীর কাছে মুক্তিযুদ্ধের চিত্র তুলে ধরেছিলেন। সালটা ছিল ১৯৭১। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কবরী ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন পাক সেনাদের বিরুদ্ধে।

কবরীর ভাষ্য ও নথি ঘেঁটে দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ১৯ এপ্রিল পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি চলে যান তিনি। এরপর আশ্রয় নেন ভারতে।

গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কবরী বলেছিলেন, ‘তখন তো আমি আওয়ামী লীগের কিংবা কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য ছিলাম না। একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে, সাধারণ মানুষ, একজন অভিনেত্রী এবং শিল্পী হিসেবে মানবতা লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। বাবা, মা, ভাই-বোন, সম্পদ, লোভ-লালসা সবকিছুর মায়া ত্যাগ করে আমি ভাষণ দিয়েছিলাম এবং জনসম্মুখে কাঁদছিলাম এজন্য যে, পাকিস্তানি বাহিনী যেভাবে হত্যা-নির্যাতন চালাচ্ছিল আমাদের দেশের মানুষের ওপর তার হাত থেকে যেন আমার দেশের মানুষ অতি দ্রুত রক্ষা পায়। সেজন্য আমি মানুষের কাছে, বিশ্ববাসীর কাছে যে আহ্বান জানিয়েছিলাম তার পরিণতি যে কী হতে পারে তা একবারও আমার মনে আসেনি এবং ভাবার কোনও অবকাশও ছিল না।’

জার্মান সংবাদ সংস্থা ডয়েচে ভেলেকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে কবরী জানান, কলকাতা গিয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে বিভিন্ন সভা-সমিতি ও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অংশ নেন প্রচুর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে।

এ সময়ের একটি স্মৃতি তুলে প্রয়াত এ তারকা বলেছিলেন, ‘সেখানে একটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলছিলাম। সেখানে আমি তুলে ধরি, কীভাবে আমি আমার মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন সবাইকে ছেড়ে এক কাপড়ে একেবারে কপর্দকহীন অবস্থায় পালিয়ে এসেছি। সেটা বলতে বলতে আমি বিশ্ববাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন করি আমার দেশের মানুষকে বাঁচানোর জন্য, আমার মা-বোনকে বাঁচানোর জন্য। তারপর আমি কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞানহারা হয়ে পড়ি। আর কিছুই জানি না।’

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবারও চলচ্চিত্র জগতে মনোনিবেশ করেন কবরী সারোয়ার। সুভাষ দত্তের পরিচালনায় ‘সুতরাং’ ছবির নায়িকা হিসেবে অভিনয় জীবন শুরু তার। কাজ করেছেন শতাধিক ছবিতে। এমনকি করেছেন নির্মাণও।

এরপর যুক্ত হয়েছেন রাজনীতিতে। হয়েছেন সংসদ সদস্যও।

এই করোনাকালেও তিনি যুক্ত ছিলেন তার পরিচালিত নতুন সিনেমা ‘এই তুমি সেই তুমি’ নিয়ে। শেষ করেছেন এর শুটিং।

প্রসঙ্গত, কিংবদন্তি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী (৭০) আর নেই। টানা ১২ দিন করোনাভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধ করে হেরে গেছেন। শুক্রবার দিবাগত রাত (১৭ এপ্রিল) ১২টা ২০মিনিটে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

/এম/এমএম/
সম্পর্কিত
কবরী: ৭ দশকের জীবনে ৫৬ বছরই ছিলেন সিনেমার সঙ্গে
প্রয়াণ দিনে স্মরণকবরী: ৭ দশকের জীবনে ৫৬ বছরই ছিলেন সিনেমার সঙ্গে
কবরীর জন্মদিনে শিল্পী সমিতিতে আয়োজন
কবরীর জন্মদিনে শিল্পী সমিতিতে আয়োজন
‘মিষ্টি মেয়ে’ কবরীর চলে যাওয়ার এক বছর
‘মিষ্টি মেয়ে’ কবরীর চলে যাওয়ার এক বছর
টিভি পর্দায় কবরীর ‘আয়না’
নারী দিবসের আয়োজনেটিভি পর্দায় কবরীর ‘আয়না’
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
প্রেম নাকি বিয়ে, মুখ খুললেন ইলিয়ানা
প্রেম নাকি বিয়ে, মুখ খুললেন ইলিয়ানা
এফডিসিতে মারামারি: যৌথ বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হলো
এফডিসিতে মারামারি: যৌথ বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হলো
সেন্সর বোর্ডের সিদ্ধান্ত, রাফীর সিনেমাটি প্রদর্শনের অযোগ্য!
সেন্সর বোর্ডের সিদ্ধান্ত, রাফীর সিনেমাটি প্রদর্শনের অযোগ্য!