নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সোমবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর পৌনে ২টায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ফেসবুক লাইভে এসে তারা একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। ফেসবুক লাইভে উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বাদল।
ফেসবুক লাইভে মিজানুর রহমান বাদল অভিযোগ করে বলেন, ‘আজ সকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিরাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরনবী চৌধুরী (৬৬) ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে কাজ শেষ করে বসুরহাট বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে কাদের মির্জার ভাই শাহাদাত হোসেন ও তার ছেলে তাশিক মির্জার নেতৃত্বে কাদের মির্জার নির্দেশে এই বয়োবৃদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতাকে নৃশংসভাবে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে তার পায়ের নিচে গুলি করা হয়। তার হাঁটু ভেঙে চুরমার হয়ে নিচের দিকে দেবে গেছে। কাদের মির্জা কয়েক দিন আগে ঘোষণা দিয়েছেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যারা আছেন তাদের যেখানে পাবে সেখানে হাঁটুর নিচে ভেঙে ফেলবে, চুরমার করে ফেলবে। তার সেই দিক-নির্দেশেনা অনুযায়ী গতকাল রাত থেকে আমাদের নেতাদের হত্যা করার মিশনে নেমেছেন তারা। মানুষের কারণে নুরনবী চৌধুরী প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। নুরনবী চৌধুরীর ওপর হামলার খবর শুনে বসুরহাট বাজারে আসার পথে আওয়ামী লীগ নেতা স্বপনের ওপর কাদের মির্জার ভাই শাহাদাত হোসেন ও ছেলে তাশিক মির্জার নেতৃত্বে নৃশংসভাবে হামলা করা হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধুরী ও আওয়ামী লীগ নেতা স্বপনের ওপর হামলার ঘটনায় আজকে দিনের মধ্যে যদি আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করা হয়, তা হলে কোম্পানীগঞ্জের আপামর জনতাকে নিয়ে রাজপথে নেমে আমরা এটার বিচার করবো। প্রধানমন্ত্রী, ওবায়দুল কাদের ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যেন অনতিবিলম্বে এটার সমাধান হয়। যেন সন্ত্রাসীদের সঠিক বিচার হয়। না হলে, আমরা প্রতিরোধ করতে আসলে অনেকে আমাদের খারাপ বলবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও ভাইস-চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেল, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল ইসলাম রাহাত ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জায়দল হক কচি প্রমুখ।
অপরদিকে, এর পর দুপুর ২টার দিকে কাদের মির্জা তার অনুসারী স্বপন মাহমুদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে দাবি করেন, ‘আজকে (সোমবার) সকাল বেলা সিরাজপুরের এক কুলাঙ্গার চেয়ারম্যান তথাকথিত চেয়ারম্যান, যে মানুষের সালিশের নামে বাড়ির ভিটা পর্যন্ত বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছে। গরিব অটোরিকশার ড্রাইভারদের আমি আড়াই হাজার টাকায় অটোরিকশার লাইসেন্স দিয়েছি। সে ৬০টা লাইসেন্স আমার থেকে নিয়েছে। সে প্রত্যেকটা লাইসেন্স থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে নিয়েছে। তারপরে ভিজিডি, ভিজিএফ, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা থেকে টাকা নিয়েছে। স্বামী পরিত্যক্ত নারীদের কাছ থেকে সে টাকা নিয়েছে। তারপরে প্রাইমারি স্কুলের দুই পিয়নের চাকরি দিতে সে টাকা নিয়েছে। এমনিভাবে এলাকায় লুটপাট করছে। তারা এ অবস্থায় রইছে টাকার জন্য। টাকার জন্য তাদের সঙ্গে মারামারি হইছে, এখন এটা আমার ওপর, আমার কর্মীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছে।’
উল্লেখ্য, সোমবার (১৯ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বুসরহাট পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ১ নম্বর সিরাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরনবী চৌধুরীকে গুলি করে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে দুই পা ভেঙে দেয় দুর্বৃত্তরা।
