প্রেম-বিয়ের প্রশ্ন এলে বলিউডে দেখা দেয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ টুঁ শব্দটিও করেন না, কেউ আবার বনে যান বিশাল দার্শনিক। যে যেভাবেই আছেন, সেটাকেই ভাবছেন সুখে থাকার মোক্ষ। টাইমস অব ইন্ডিয়া থেকে বলি সেলেবদের গুটিকয়েক প্রেমসূত্র শেখা যাক এবার-
জীবনসঙ্গীর যোগ্যতা জানালেন কঙ্গনা
গ্ল্যামারে যেমন ব্যক্তিত্বেও একেবারে নব্বই টাকা তোলা। বলিউডের ‘কুইন’ কঙ্গনার কাতারে এখনও আসতে পারেনি অন্যরা। অন্তত কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়ানোর মতো পুরুষ সঙ্গী তো নেই-ই। এ কারণে বিয়েশাদির কথা এতোদিন মাথাতেই ছিল না তার। তবে এবার মন নরম হলো বলে। কঙ্গনা রনৌত জানালেন, বিয়ে নিয়ে ইদানীং ভাবছেন একটু আধটু!
এ অসাধ্য সাধন হলো কী করে! ভারতের সংবাদসংস্থা আইএএনএস-এর খবরে প্রকাশ, কদিন আগেই পরিচালক নিতেশ তিওয়ারি ও তার পরিচালক স্ত্রী অশ্বিনি আইয়ারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন কঙ্গনা। এই দম্পতির ভেতর যে বন্ধুত্ব ও প্রেমের নমুনা দেখেছেন সে গল্প সামনে যাকে পাচ্ছেন তাকেই শোনাচ্ছেন কঙ্গনা।
‘বিয়ে নিয়ে আমার ধারণা বদলে গেছে কিন্তু। সে (নিতেশ) তার স্ত্রীকে একেবারে হৃদয় নিঙড়ানো দিয়ে সাপোর্ট দিচ্ছে। তাদের দেখে মনে হলো আমাকে দিয়েও বিয়ে করা হবে। তবে হ্যাঁ, আমার যাকে চাই, তাকে কিন্তু বুদ্ধিমান হতে হবে, হ্যান্ডসামও হওয়া চাই। আমার চেয়ে একটু বেশিই ট্যালেন্টেড হতে হবে।’ শর্ত কঙ্গনার।
সব ফাঁস করবেন না অনন্যা
মাত্র তিনটি ছবি করেই ইদানীং সবার চোখের মণি হয়েছেন চাংকি পান্ডের কন্যা অনন্যা। ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার-২’তে অভিষেক হওয়া এ অভিনেত্রীর বয়ফ্রেন্ড নিয়েও কানাঘুষো চলছে খুব। তবে সদ্য তারকাখ্যাতিতে মজে যাওয়া এ নায়িকা জানালেন, এসব নিয়ে খানিকটা ধোঁয়াশা না থাকলে জমে না। একবারে সব ফাঁস করাও ঠিক নয় বললেন পান্ডে কন্যা। সামনে ইশান খাত্তারের সঙ্গে ‘খালি পিলি’ ছবিতে দেখা যাবে অনন্যাকে। সেইসঙ্গে দীপিকা ও সিদ্ধান্ত চতুর্বেদির ছবিতেও থাকছেন।
পতিভক্ত কারিনা
বিয়ের পর দ্রুত সময়ে দুই সন্তানের মা হয়েছেন। প্রচলিত ধারণা গুড়িয়ে দেদার ছবিও করছেন। এর জন্য মসৃণ দাম্পত্যকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন কারিনা কাপুর খান।
‘আমি মনে করি, সাইফ এমন এক মানুষ যে নীরবে সবসময়ই আমার জন্য গর্ববোধ করে। সে চায় আমি কাজ করি। যা চাই তা অর্জন করি। সে সবসময় চুপচাপ হাসে আর দেখে।’ স্বামী সম্পর্কে কারিনার মন্তব্য এমনই।
প্রায়ই বলিউডের সুখী দাম্পত্যের উদাহরণ হিসেবে উঠে আসে এই তারকা দম্পতির নাম। নিয়মিত কাজ করছেন দুজনই। কারিনাকে খুব তাড়াতাড়ি দেখা যাবে অক্ষয় কুমারের সঙ্গে ‘গুড নিউজ’ ছবিতে। সাইফকে দেখা যাবে ‘তানহাজি: দ্য আনসাং ওয়ারিয়র’-এর খল চরিত্রে।
শ্রুতির সুখসূত্র
কমল হাসানের সঙ্গে স্ত্রী সারিকার ছাড়াছাড়ি নিয়ে মোটেও মাথাব্যথা নেই তাদের তারকা কন্যা শ্রুতি হাসানের। কদিন আগে প্রেমিকের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় নিজেও এখন একা। মিডিয়াকে বলেছেন, বাবা-মায়ের ডিভোর্স সবার কাছে ‘খবর’ হলেও তার কাছে খুব স্বাভাবিক। বরং এতে তিনি খুশি।
জানালেন, বিয়ের আগে তার বাবা-মা তো দুজন মানুষই ছিলেন। তো তাদের খুশি থাকাটাই তো বড় কথা। জোর করে সম্পর্ক ঝালাইয়ের চেয়ে আলাদা থাকাই শ্রুতির কাছে সুখের সূত্র।
ভালো ছেলে কার্তিক
বলিউডের নতুন স্ফুলিঙ্গ কার্তিক আরিয়ান। প্রশংসায় ভাসছেন প্রায়ই। তাই সিনেমার বাইরে নাকি আর কিছু নিয়ে ভাবতে নারাজ। সারা আলি খান ও অনন্যা পান্ডের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা নিয়ে খানিকটা শোর উঠলেও কার্তিক পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ‘মাকে জিজ্ঞেস না করে এখন ওসব নিয়ে ভাবছি না। এখন ক্যারিয়ার নিয়েই ভাবছি।’
এদিকে সারার সঙ্গে কার্তিকের একটু আধটু যা-ই হোক না কেন, তা মেয়ের বাবা সাইফ আলির কান পর্যন্ত গিয়েছিল। তিনি আবার এক কাঠি বেশি সরেস। আগাম বলে দিয়েছেন, ‘কার্তিক ভালো ছেলে!’
ক্ষমতা ও ইচ্ছে কোনোটাই নেই
ইংরেজি বলে ম্যারেজ ম্যাটেরিয়াল, বাংলা করলে কী দাঁড়াবে? বিবাহ-বস্তু! সেটাই নেই নাকি অক্ষয় খান্নার। আর তাই ৪৬ পেরোতে চললেও বিয়ের পিঁড়িতে বসেননি চুপচাপ থাকা এ তারকা।
মাথার চুল সব হারাতে বসলেও অক্ষয় মনে করেন, বিয়ের পর যে কমিটমেন্ট ও দায়-দায়িত্ব এসে পড়ে সেটা সামলানোর ক্ষমতা ও ইচ্ছে কোনোটাই তার নেই। জীবনটাকে আগাগোড়া নিজের নিয়ন্ত্রণেই রাখতে চান।
বিচ্ছেদের পরও...
২০১৩ সালে ভক্তরা হায় হায় করে উঠেছিল হৃতিক আর সুসানের বিচ্ছেদের খবরে। সেই হা করা মুখগুলোকে বন্ধ করতে বেশ সময় লেগেছে সাবেক এই যুগলের।
কারণ বিচ্ছেদের পরও তাদের ভালোরকমের বন্ধুত্ব টিকে আছে এখনও। এখনও সুসান এসে তাদের সন্তান হৃহান ও হৃধানের সঙ্গে ভালো সময় কাটান। হৃতিকের সঙ্গেও তার সম্পর্কটা বেশ। মোটকথা, বিচ্ছেদেও যেন ছেদ পড়েনি তাদের।
আলিয়ার প্রেমসূত্র
গণমাধ্যমে তার দেওয়া মন্তব্য শুনে মনে হতে পারে প্রেমে বেশ ভালো রকমের আঘাত পেয়েছেন আলিয়া। রনবীর কাপুরের সঙ্গে সম্পর্ক এতোই চাউর হয়েছে যে বিয়েটা বুঝি হয়েই গেলো।
আলিয়ার মতে, প্রেম হলো জীবনের সবচেয়ে শক্তিশালী অনুভূতি। আরও বললেন, ‘জীবনে হৃদয় ভাঙার মতো বুকচেরা যন্ত্রণাটা পুনরায় শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসে, যখন কিনা আপনি আবার প্রেমে পড়বেন।’ আর সবার জীবনে (মানে যারা প্রেম খুইয়েছেন) কোনও না কোনও পর্যায়ে যেন এভাবেই প্রেম ফিরে আসে, এমনটাই চান আলিয়া ভাট।
প্রিয়াঙ্কা যেমনটা চেয়েছিলেন
নিক জোনাসের সঙ্গে বেশ কাটছে দিন তার। এর মধ্যে একবার এক ইন্টারভিউতে প্রিয়াঙ্কা আভাস দিয়েছিলেন, কেমন প্রেমিক চাই তার। প্রেম ও বিয়ে নিয়ে তার কথা একটাই, ‘এমন একজন চাই, যার কাছে আমিই সব। আমাকে ছাড়া দুনিয়ার আর কিছুই তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হবে না। আর সে যদি হও তুমি, তবে তোমার জন্যই আমি অপেক্ষা করছি।’
সুতরাং এ অগ্নিপরীক্ষায় নিক মশাইকে পাস মার্ক দেওয়াই যায়।
ডেট কাকে বলে?
সালমান খান থেকে হালের রনবীর কাপুর, সবার সঙ্গেই মাঝে-সাঁঝে গসিপের খোরাক হয়েছিলেন ক্যাটরিনা কাইফ। আর তিনি কিনা ডেট করা কী বস্তু সেটাই জানেন না!
এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমার এক বন্ধু আমাকে এই বিষয়টা (মানে ডেট করা) নিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে অনেক কিছু বলছিল। মানে, আমার সমস্যাটা কী এ জাতীয় একটা কথা। আমি তাকে অনেক বড় একটা উত্তর দিয়েছিলাম। তখন সে আমাকে বুঝিয়ে দিলো, ডেট কাকে বলে এটা না বোঝাটা আমারই সমস্যা। তার মতে আমি নাকি ভারী আর গভীর সম্পর্ক করাটাই বুঝি।’
