দেশে বেগম খালেদা জিয়া সর্বোচ্চ চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছেন জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে আদৌ বিদেশ নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন আছে কিনা সেটিই এখন বড় প্রশ্ন। বিএনপি কেন যে তাকে বিদেশে নিয়ে যেতে চায় সেটি বোধগম্য নয়।
শনিবার (৮ মে) দুপুরে বিশ্ব রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট দিবস-২০২১ উপলক্ষে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম জেলা ও সিটি ইউনিট যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী প্রধান অতিথি ছিলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তিনি এখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি দ্রুত আরোগ্য লাভ করুন এটিই মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা, এটিই আমাদের কাম্য। বেগম খালেদা জিয়া যাতে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা পান সেটির জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমস্ত নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি সর্বোচ্চ চিকিৎসা সুবিধা এখন বাংলাদেশে পাচ্ছেন। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, তাকে বিদেশ নিয়ে যাওয়ার জন্য এখন বিএনপি ও পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে। যে সমস্ত দেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে, বিশেষ করে ইংল্যান্ডে, সেখানে করোনা মহামারিতে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে।
বিএনপি সমগ্র দেশের মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে মেটেও উদ্বিগ্ন নয়, এ নিয়ে তাদের কোনও চিন্তা নেই উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, তাদের সমস্ত চিন্তা এখন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে। তাদের নেত্রীর শরীরের তাপমাত্রা আছে কী নাই, এটি কত ডিগ্রি আছে, হাঁটুর ব্যথা আছে কী নাই এটার মধ্যেই বিএনপির রাজনীতিটা এখন সীমাবদ্ধ।
বাংলাদেশে তিন প্রকার বিশেষজ্ঞ আছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, এক দল হচ্ছেন সত্যিকারের বিশেষজ্ঞ, আরেকদল হচ্ছেন বিশেষ কারণে অজ্ঞ (বিশেষ + অজ্ঞ)= বিশেষজ্ঞ, আর কিছু বিশেষজ্ঞ আছেন যারা সব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। যেমন, উনি পড়েছেন রাজনীতি আবার তিনি অর্থনীতির বিশেষজ্ঞ, উনি পড়েছেন আইন কিন্তু উনি আবার পরিবেশ বিশেষজ্ঞ। এভাবে কিছু বিশেষজ্ঞ আছে যারা সব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ।
তিনি বলেন, সব বিষয়ে যারা বিশেষজ্ঞ, আবার বিশেষ কারণে যারা অজ্ঞ হয়ে বিশেষজ্ঞ তারা করোনা মহামারির শুরুতে মত প্রকাশ করেছিলেন বাংলাদেশে হাজার হাজার মানুষ অনাহারে থাকবে এবং লাশ রাস্তায় পড়ে থাকবে। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমত এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রীর সঠিক নেতৃত্বের কারণে গত ১৪ মাসে একজন মানুষও না খেয়ে মৃত্যুবরণ করেনি।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মানুষ প্রচণ্ড আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গেছে, শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবে, অন্যকে নিয়ে ভাবে না। মানুষ ক্রমাগত যন্ত্রের ব্যবহারের সাথে সাথে নিজেরাও যেন যন্ত্র হয়ে যাচ্ছে। যন্ত্রের যেমন অনুভূতি নেই, মানুষও অনুভূতিহীন প্রাণী, জড়পদার্থে রূপান্তরিত হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে রেড ক্রিসেন্টের কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর্ত-মানবতার পাশে দাঁড়িয়ে রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা যেভাবে কাজ করছেন সেটি সমাজের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এই দেশ দুর্যোগ-দুর্বিপাকের দেশ। সমস্ত দুর্যোগ-দুর্বিপাকে রেড ক্রিসেন্টের অকুতোভয় সদস্যরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সেবা দিয়েছেন। স্বাধীনতা অর্জনের পর গত পঞ্চাশ বছরের পথচলায় কোটি কোটি মানুষ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির দ্বারা উপকৃত হয়েছে। করোনা মহামারির মধ্যে ত্রাণ বিতরণসহ টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা যেভাবে আর্ত-মানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছেন সেটি অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।
রেড ক্রিসেন্ট চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ডা. শেখ শফিউল আজমের সভাপতিত্বে ও যুব রেড ক্রিসেন্টের যুব প্রধান গাজী ইফতেখার হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী, সংবর্ধিত অতিথি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নবনিযুক্ত ট্রেজারার এমএ ছালাম, জেলা ইউনিটের সেক্রেটারি মো. আসলাম খাঁন, সিটি ইউনিটের সেক্রেটারি আবদুল জব্বার প্রমুখ।
