X
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদের দিনেও বাড়ি ফেরা

গাজীপুর প্রতিনিধি
১৪ মে ২০২১, ১৮:৪১আপডেট : ১৪ মে ২০২১, ১৮:৪১

আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর। সারা দেশে চলছে ঈদ উদযাপন। তবে এইদিনেও বাড়ি ফেরা মানুষ রয়েছে সড়কে। করোনা ভীতি ও লকডাউনের কারণে যারা আগে যেতে পারেননি আজ তাদের একাংশ নেমেছেন সড়কে, বাড়ির পথ ধরার উদ্দেশ্যে। শুক্রবার (১৪ মে) সকাল ১০টা থেকে দুপুর বিকেল ৩টা পর্যন্ত গাজীপুরের টঙ্গী, স্টেশন রোড, চেরাগআলী বোর্ড বাজার, মালেকের বাড়ী, চান্দনা চৌরাস্তা, চন্দ্রা, কালিয়াকৈর, শ্রীপুরের মাওনা বাসস্ট্যান্ডে ঘুরে দেখা যায় অনেকেই গ্রামের বাড়িতে যেতে বাসস্ট্যান্ডে আসছেন। তবে এদের গন্তব্য খুব দূরে নয়, বেশিরভাগই ময়মনসিংহ বিভাগ ও আশেপাশের জেলাগুলোর বাসিন্দা। তাদের কেউ ময়মনসিংহ, কেউ নেত্রকোনা কিংবা কিশোরগঞ্জ, অন্য পথের যাত্রীরা টাঙ্গাইল যাচ্ছেন পরিবারের স্বজনদের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে।

তারা জানান, ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন কারণে ঈদের আগে নিজ এলাকায় যেতে পারেননি। পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের এক নজর দেখতে ঈদের দিনও গাড়ি ধরতে সড়কে এসেছেন তারা। তবে সরাসরি যোগাযোগের গাড়ি পাচ্ছেন না অনেকেই। সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে সড়কে দূরপাল্লার বাস নেই। তাই নানাভাবে গাড়ি বদল করে করে, কখনো বা হেঁটেই যেতে হচ্ছে তাদের। তবে যেটুকু পথই যান না কেন, সব শ্রেণির যাত্রীকেই গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। আজও সড়কে প্রাইভেটকার, ট্রাক ও সিএনজি করে গ্রামের উদ্দেশ্যে অনেককে যেতে দেখা গেছে।

ঈদের দিনেও ছুটছে কিছু বাস। ঢাকা ও গাজীপুর ছাড়ছেন আশেপাশের জেলাগুলোর মানুষেরা।

সরেজমিন দেখা যায়, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে দুই সিটেই যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় তাকওয়া পরিবহন। তারা ভাড়াও নিচ্ছে দ্বিগুণ। ১০০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ দূরত্ব ভেদে ৩০০ টাকা করেও নেওয়া হচ্ছে জনপ্রতি।

প্রাইভেটকারও যাচ্ছে ভাড়ায়। দূরত্ব ভেদে জনপ্রতি নিচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করে। জয়দেবপুরের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ময়মনসিংহের ভালুকা ৩০০ টাকা এবং ময়মনসিংহ পর্যন্ত ৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।

প্রাইভেটকার চালক আবুল কালাম বলেন, আমরা মালিকের গাড়ি চালাই। লক ডাউনের কারণে মালিক গাড়ি বের করতে দেননি। তাই ইনকাম না থাকায় আমরাও বোনাস পাইনি। মালিকের সম্মতিতে আজ ঈদের দিন গাড়ি নিয়ে সড়কে বের হয়েছি। যা পাবো তাই আমাদের পকেটে থাকবে। সামনে আবার লকডাউন, আজকে যা ইনকাম করতে পারি তা দিয়েই কয়েকদিন বউ-বাচ্চা নিয়ে দু’মুঠো খেতে পারবো।

আবার ঈদের দিনে অনেককে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়েও গ্রামের উদ্দেশ্যে যেতে দেখা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাজীপুরের এক পোশাক কারখানার মহা-ব্যবস্থাপক (জিএম) সকালে বলেন, তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জে। বাড়ি গিয়ে আজ সন্ধ্যায় অথবা শনিবার গাজীপুরে ফিরে আসার চিন্তা আছে।

ঢাকার নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেনের বাড়ি ময়মনসিংহ সদরের দাপুনিয়ায়। বাবা-মা ও স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঢাকায় থাকেন। গ্রামের বাড়িতে নিকট আত্মীয়রা আছেন। তাদের সঙ্গে দেখা করতে এবং ঈদের উপহার দিতে তিনি আজ দেশের বাড়ি যাচ্ছেন। লক ডাউনের কারণে দোকান বন্ধ থাকায় ঈদের রাত পর্যন্ত বেচাকেনা হয়েছে। তাই, গ্রামে যাওয়ার সময় পাননি। প্রতিবছর সবাই মিলে ঢাকা থেকে বাড়িতে গিয়ে ঈদ করা হয়। কিন্তু এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে কেউ গ্রামে যেতে চায়নি। ফলে একাই যাচ্ছেন।

তাকওয়া পরিবহনের চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, মাওনার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছি। প্যাসেঞ্জার পেলে ও ভাড়ায় পোষালে ময়মনসিংহ পর্যন্ত যাওয়ার চিন্তা আছে। ভাড়া আজ একটু বেশি নিলেও সড়ক ফাঁকা থাকায় সেখানে আজ পৌনে এক ঘণ্টায় পৌঁছে যাওয়ার আশা করেন তিনি।

নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার আনোয়ার হোসেন চাকরি করেন উত্তরার একটি কসমেটিকস্ দোকানে। তিনি জানান, ঈদের আগের দিন রাত পর্যন্ত দোকানে বেচাকেনা থাকায় বাড়িতে যেতে পারেননি। তাই আজ ঈদের দিন গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। ভাড়া বেশি নিচ্ছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, সমস্যা নাই। অন্য দিনের চেয়ে আজকে আরামে এবং কম সময়ে বাড়ি যেতে পারবো।

কবির হোসেন। স্ত্রী ও ৮ বছরের মেয়ে শারমিনকে নিয়ে শ্রীপুরের এমসি বাজার এলাকার ফজলু খা’র বাড়িতে ভাড়া থেকে স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই স্থানীয় জাবের স্পিনিং মিলের ফিনিশিং শাখায় অপারেটর পদে চাকরি করেন। মেয়ে দাদা-দাদি ও চাচাতো ভাইদের সাথে খেলা করে। তার কান্নায় বাধ্য হয়ে গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার সাধুয়া যাচ্ছি। জানান, ছুটি না থাকায় ঈদের আগে বাড়িতে যেতে পারেননি তিনি।

জয়দেবপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় কথা হয় টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে। স্ত্রী ও বাচ্চাদের নিয়ে গ্রামের বাড়ি ঈদ করতে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, বছরের এই একটি দিনের জন্য সবাই অপেক্ষা করে। হাজারো কষ্ট সামলে সবাই গ্রামের বাড়ি পরিবারের সদস্যদের সাথে ঈদ করতে চায়। পরিবহন সমস্যা ও যানজটের কারণে স্ত্রী ও বাচ্চাদের নিয়ে বাড়ি যাওয়ার সাহস পাইনি। আজ ঈদের দিন সড়ক ফাঁকা থাকায় বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি।

/টিএন/
সম্পর্কিত
৫৫০ টাকার ভাড়া ৭০০ নেওয়ায় লাল সবুজ পরিবহনকে ২০ হাজার জরিমানা
ফিরতি ঈদযাত্রা: আগের দামে টিকিট নেই, দ্বিগুণ দিলে আছে
ঈদের ছুটি শেষ, কাজে ফিরছে মানুষ
সর্বশেষ খবর
যুক্তরাষ্ট্র বড় শক্তি, তাদের পরোয়া করতে হয়: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্র বড় শক্তি, তাদের পরোয়া করতে হয়: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
ব্যাংক ডাকাতি রোধে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে
ব্যাংক ডাকাতি রোধে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে
রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে
কাতারের আমিরের সফররাজনৈতিক সম্পর্ক জোরালো হয়েছে ঢাকা ও দোহার মধ্যে
পুড়ছে সড়ক, তবু অবিরাম কাজ তাদের
পুড়ছে সড়ক, তবু অবিরাম কাজ তাদের
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
৭ দফা আবেদন করেও প্রশাসনের সহায়তা পায়নি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট
৭ দফা আবেদন করেও প্রশাসনের সহায়তা পায়নি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট