X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১
ঈদ বিশেষ

মুম্বাই থেকে ফিরে ‘বঙ্গবন্ধু’র অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন শুভ

ওয়ালিউল বিশ্বাস
১৫ মে ২০২১, ১১:১৩আপডেট : ১৫ মে ২০২১, ১৮:১৪

বাংলা চলচ্চিত্রে এখন অন্যতম সমাদৃত নায়ক হিসেবে ধরা হচ্ছে আরিফিন শুভকে। কারণটা বায়োপিক ‘বঙ্গবন্ধু’ চলচ্চিত্র। সাম্প্রতিক সবচেয়ে আলোচিত ও বৃহৎ পরিসরে কাজ হওয়া এ ছবিটির পৃষ্ঠপোষক দুই রাষ্ট্র বাংলাদেশ-ভারত। চলচ্চিত্রটির প্রধান চরিত্র হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকায় আছেন এই অভিনেতা।

গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত মুম্বাইয়ে হয়েছে ছবিটির প্রথম লটের কাজ। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বাংলাদেশে হবে শেষ অংশের দৃশ্যধারণ। চলচ্চিত্রটি ঘিরে মুম্বাইয়ের তিন মাসের অনবদ্য সেই স্মৃতি তুলে ধরলেন আরিফিন শুভ-

বাংলা ট্রিবিউন: ২৫৭ টাকায় ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় এসেছিলেন। এবার রাষ্ট্রীয় খরচে মুম্বাই গেলেন। করলেন সর্বকালের সেরা নেতাদের একজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে অভিনয়। জার্নিটা কেমন ছিল?

আরিফিন শুভ: দুটি জার্নির মধ্যে বিশাল ফারাক। ময়মনসিংহে আমার দুই বন্ধু আসিফ আর ইমতিয়াজ বলতো, ‘তুই পারবি’। তারা দুজনে মিলে একদিন ২৫৭ টাকা পকেটে দিয়েছিল। সেই টাকা নিয়ে ঢাকার ট্রেন ধরেছিলাম। ছিল অনিশ্চয়তা, দুশ্চিন্তা কিন্তু ছিল স্বপ্নও। এবারের জার্নিটাও স্বপ্নের, তবে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার স্বপ্ন। অসাধারণ এক জার্নি।

বাংলা ট্রিবিউন: মুম্বাই ফ্লাইটের যখন দিনক্ষণ চূড়ান্ত হচ্ছে তখন আপনি করোনায় আক্রান্ত। এমনকি যাওয়ার আগে করোনামুক্ত হলেও ছিল প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট। আবার চরিত্রের জন্য কি পরিচালক শ্যাম বেনেগালের বিশেষ কোনও চাহিদা ছিল?

আরিফিন শুভ: আমি যখন ফ্লাইট ধরি তখনও শরীরটা অনেক দুর্বল ছিল। শ্বাসকষ্টের চেয়ে দুর্বলতাটা বেশি। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গেলে পা কাঁপতো। এর আগে বহুবার অসুস্থ হয়েছি, সার্জারিও হয়েছে আমার, কিন্তু এতটা দুর্বল জীবনে আর কখনও হইনি। আর চরিত্রের কথা বললে, আমাদের চোখে যে শেখ মুজিব লেগে আছেন, সেটি আর ২৬-২৭ বছরের বঙ্গবন্ধু তো এক ছিলেন না। অনেক ছিপছিপে, স্লিম ছিলেন। সে হিসেবে প্রস্তুতিও নিচ্ছিলাম। করোনার আগ পর্যন্ত সবকিছুই ঠিকমতো যাচ্ছিল। কিন্তু করোনার পর ক্লান্তির জন্য চিকিৎসক আমাকে অনেক খেতে বলেন। চাইলেও ডায়েট করতে পারছিলাম না। এটা নিয়ে ‌‌‘বঙ্গবন্ধু’ টিমের সঙ্গে কথা হয়। তখন তারা আমাকে আশ্বস্ত করে। বলে, চিন্তা না করতে। তাদের এমন সমর্থন আমাকে উজ্জীবিত করেছে। আর আমি বিশ্বাস করি, পরিচালক শ্যাম বেনেগাল নিশ্চয়ই আমার মধ্যে বিশেষ কিছু দেখেছিলেন, না হলে পাঁচবার আমার অডিশন নিতেন না।

বাংলা ট্রিবিউন: পরিচালকের প্রসঙ্গ যখন এলোই, তার প্রসঙ্গে কী বলবেন? তার নেতৃত্বে দীর্ঘ প্রায় তিন মাস কাজ চললো। অভিজ্ঞতা কেমন?

আরিফিন শুভ: শ্যাম বেনেগালকে সত্যজিৎ রায়ের পরই স্থান দেওয়া হয়। এ মানুষটির সংস্পর্শে গিয়েছি। সেই লোকটার পাশে বসবো, কথা শুনবো, আমাকে নির্দেশনা দেবেন- আগে কখনও কল্পনা করিনি! স্বপ্নের মধ্যে মানুষ স্বপ্ন দেখে- সেই স্বপ্নেও এটা কোনোদিন দেখিনি।

বাংলা ট্রিবিউন: শুটিং ইউনিটের নিশ্চয়ই অনেক স্মৃতি রয়েছে। বিশেষ বলবেন কোন ঘটনাকে? চুক্তির ভেতরে থেকে যতটুকু বলা যায়।

আরিফিন শুভ: প্রত্যেকটা মুহূর্তই বিশেষ। আমাদের এখানে যেভাবে কাজ হয় তার থেকে এতটাই ভিন্নভাবে মুম্বাইয়ে কাজ হয় যে মুগ্ধ হয়েছি। দারুণ একটা ইউনিট। আর যে মানুষটার চরিত্র ধারণ করেছি বা করার চেষ্টা করেছি সেটার মধ্যে ডুবে গিয়েছিলাম। এখনও ডুবেই আছি। আমি প্রথম থেকেই বলেছি কোনও চ্যালেঞ্জ নিয়ে নয়, প্রেম থেকে কাজটি করবো। সেটাই চেষ্টা করছি। তাই প্রত্যেকটা মুহূর্তই আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে আছে।

বাংলা ট্রিবিউন: আর ফেব্রুয়ারিতে ছিল আপনার জন্মদিন। সেখানে হুট করেই সেটা পালন করা হয়। সেটিকে কীভাবে দেখছেন?

আরিফিন শুভ: ভাবতেই পারিনি, সবাই আমাকে এতটা সারপ্রাইজ দেবেন। ভেবেছিলাম, আমার জন্মদিনের খবর ওখানকার কেউ হয়তো টের পাবে না। উল্টো সবাই যে জেনেশুনে উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তা টের পাইনি। পরে বিষয়টি বুঝতে পারি। সত্যি বলতে, শ্যাম বেনেগাল স্যারের উপহারসহ পুরো বিষয়টিই আমার কাছে ছিল স্বপ্নের মতো। শ্যাম বেনেগাল স্যার আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন, উপহার তুলে দিচ্ছেন- এগুলো দারুণ অনুভূতির।

আরিফিন শুভ/ ছবি: সাজ্জাদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউন: আপনার আরেক স্বপ্নের মানুষ জাভেদ আখতার। তার দেখাও পেয়েছেন। রীতিমতো আপনাকে দাওয়াত দিয়ে বাসায় নিয়ে গেছেন।

আরিফিন শুভ: আমি বলবো সেই সন্ধ্যার কয়েক ঘণ্টা আমার জীবনের অপার্থিব মুহূর্ত। জাভেদ সাহেবের ব্যাপারে আমার পাগলামির কথা তাকে জানিয়েছিলেন আমার এক বন্ধু। তখন তিনি আমার বন্ধুকে বলেছিলেন, শুটিংয়ের ফাঁকে যেন আমাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। কাকতালীয়ভাবে এর পরদিনই আমাদের শুটিং ছিল না। তার কাছে নিয়ে যায়। অসাধারণ মুহূর্ত ছিল সেটা।

বাংলা ট্রিবিউন: প্রায় মাসখানেক হলো দেশে ফিরেছেন। নতুন ছবি ‘নূর’-এ চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এটি তো আপনার জন্য পুরনো প্রজেক্টই?

আরিফিন শুভ: হ্যাঁ, এটার চুক্তি হয়েছে সাত মাস আগে। দীর্ঘ অপেক্ষার প্রজেক্ট এটা। কাজও এর মাসখানেক পরই শুরু হয়। কিন্তু তখন অনেক কিছু ঘটে যায়। আমার কোভিড-১৯ হয়, অনেক প্রজেক্ট রি-শিডিউলড করতে হয়। করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পরই ‘বঙ্গবন্ধু’ চলচ্চিত্র সামনে এসে যায়। ভারত থেকে ফেরার পর ছবিটি নিয়ে ঘোষণা এলো। এখনও করোনা পরিস্থিতি ভালো নয়। তবে সবকিছু অনুকূলে থাকলে এর কাজ হবে। রায়হান রাফিকে ধন্যবাদ এমন সুন্দর ছবিতে আমাকে ভাবার জন্য।

/এমএম/এমওএফ/
সম্পর্কিত
ঈদ শুভেচ্ছায় যা বলছেন তারকারা
ঈদ শুভেচ্ছায় যা বলছেন তারকারা
৮ বছরের যুদ্ধ শেষে মা হারালেন আরিফিন শুভ
৮ বছরের যুদ্ধ শেষে মা হারালেন আরিফিন শুভ
‘মুজিব’ নায়ক পেলেন রাজউকের ১০ কাঠার প্লট!
‘মুজিব’ নায়ক পেলেন রাজউকের ১০ কাঠার প্লট!
ওয়েব সিরিজে আরিফিন শুভ, সঙ্গে সোহিনী সরকার
ওয়েব সিরিজে আরিফিন শুভ, সঙ্গে সোহিনী সরকার
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
১৬ বছর পর জেনস সুমনের ফেরা (ভিডিও)
১৬ বছর পর জেনস সুমনের ফেরা (ভিডিও)
মা হারালেন বেবী নাজনীন
মা হারালেন বেবী নাজনীন
ওমর: ‘নায়িকাবিহীন’ এক থ্রিলার
সিনেমা সমালোচনাওমর: ‘নায়িকাবিহীন’ এক থ্রিলার