X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

পথে এত অসহায় মানুষ কেন?

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৬ মে ২০২১, ০৯:১৮আপডেট : ১৬ মে ২০২১, ০৯:১৮

‘কাজ নাই বাবা, বয়সের ভারে শরীর চলে না। হাত না পাতলে খামু কী?’—এভাবেই আফসোস করে একটু ভাত খাওয়ার জন্য সাহায্য চাচ্ছিলেন বাগেরহাটের আক্কাস আলী। তিনি পেশায় একজন ক্লিনার। কয়েকমাস আগেও বিভিন্ন বিল্ডিংয়ে কাজ করতেন। করোনা পরিস্থিতি এবং লকডাউনের কারণে কাজ হারিয়ে জীবনধারণের জন্য বেছে নিয়েছেন ভিক্ষাবৃত্তি।

করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশে নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন দুই কোটি ৪৫ লাখ মানুষ। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের জরিপে এই তথ্য উঠে আসে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের এক জরিপে বেরিয়ে এসেছে দেশে সার্বিক দারিদ্র্যের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদের সময় কিংবা আগে মৌসুমি ভিক্ষুকের সংখ্যা সাধারণত বেড়ে যায়। নিয়মিত ভিক্ষাবৃত্তি যারা শহরে করেন তারা ঈদের সময় বাড়ি যান। তবে এবার পরিবহন সংকট থাকায় অনেকেই চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তাই জীবন জীবিকার তাগিদে ভিক্ষাবৃত্তি করেই চালাতে হচ্ছে ঘর। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ঈদকে কেন্দ্র করে শহরে আসা মৌসুমি ভিক্ষুক। দু’য়ে মিলে তাই পথে এসব অসহায় মানুষের আনাগোনা বেড়েছে।

সমাজসেবা অধিদফতরের দেওয়া তথ্য মতে, বাংলাদেশে ভিক্ষুকদের সংখ্যা নির্ধারণের জন্য সমন্বিতভাবে কোনও জরিপ হয়নি। তবে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পরিচালিত জরিপের তথ্যের ভিত্তিতে ভিক্ষুকের সংখ্যার হিসাব দেওয়া হয়েছে মোট জনসংখ্যার শূন্য দশমিক ১৭ শতাংশ। অর্থাৎ সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। আর করোনাকালীন এই সংখ্যা আরও বেড়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা জানা নেই কারও।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদের ছুটিতে ফাঁকা রাজধানীর সিগন্যালগুলোতেও অসহায় এসব মানুষের সংখ্যা অন্যদিনের তুলনায় কিছুটা বেশি। একটি গাড়ি সিগন্যালে এসে থামলেই ঘিরে ধরছেন তারা। ভাত কাপড়ের জন্য তাদের যত আকুতি। কেউ কেউ সাহায্য করলেও অনেকে মৌসুমি ব্যবসা মনে করে এড়িয়ে যান।

পান্থপথ সিগন্যালে সায়িদা নামের একজনের সঙ্গে কথা হয়। জানা যায় তার বাড়ি ময়মনসিংহে। তিনি দুটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতেন। একটি বাসায় যেখানে কাজ করতেন, তারা ঢাকা ছেড়ে চলে গেছেন এবং ওপর বাসার মালিক করোনার কারণে আসতে মানা করেছেন। তাই তিনি কর্মহীন। সংসার চালাতে এখন ভিক্ষাবৃত্তি করছেন।

কাওরানবাজার এলাকায় বৃষ্টির মধ্যেই সাহায্য খুঁজছেন শাহ্‌ আলী। তার বাড়ি খুলনায়। তিনি ঈদকে কেন্দ্র করে ঢাকায় এসেছেন বলে জানান। তার ভাষ্য, করোনার কারণে সেখানে কাজ কমে গেছে। কয়েকমাস আয় বলতে গেলে নেই, তাই ঢাকায় আয়ের আশায় চলে আসা।

নতুন এই ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে জড়িত হয়েছেন রিকশাচালকরাও। রিকশা চালিয়ে আয় কমে যাওয়ায় এখন তারা সাধারণ মানুষের কাছে সাহায্য চান। আবার অনেকেই পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার জন্যও সাহায্য খুঁজে ফিরেন।      

 

/এসও/আইএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা