মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার যমুনা নদীর দুর্গম চরাঞ্চল আলোকদিয়ায় নির্মাণ হচ্ছে তিন তলা বিশিষ্ট ‘মুজিব কিল্লা’। আর এটি হলে চরাঞ্চলের হাজারো মানুষ বন্যা, ভাঙন, ঝড়-বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে সেখানে আশ্রয় নিতে পারবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তিন তলা বিশিষ্ট ‘মুজিব কিল্লা’ নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় চরবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে উৎসাহ উদ্দীপনা।
প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এই মুজিব কিল্লার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে অবহেলিত চরাঞ্চলের হাজারো মানুষজন প্রাকৃতিকসহ নানা ধরনের দুর্যোগে পরিবার পরিজন, গবাদি পশু নিয়ে এখানে আশ্রয় নিতে পারবে। এই কিল্লার আয়তন হবে ৫৭ দশমিক ৬৪৬ বর্গ ফিট।
যমুনার বিস্তীর্ণ-বিচ্ছিন্ন আলোকদিয়া চরে গিয়ে দেখা গেছে, মুজিব কিল্লাকে ঘিরে সেখানকার অবহেলিত মানুষের চোখে মুখে আনন্দের ছাপ। ভাঙন কবলিত এই অঞ্চলের বেশির মানুষের কেউ কৃষি কাজ করে কেউ নদীতে মাছ ধরে আবার কেউ দিনমুজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। তাদের সব চেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে যমুনার ভাঙন। যমুনার করাল গ্রাসে স্থায়ীভাবে কোনও মানুষ সেখানে বসবাস করতে পারে না। এ ছাড়া ঝড়-তুফান আর নানা সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে সংগ্রাম করে দিন মাস ও বছরের পর বছর কেটে যায় চরাঞ্চলের মানুষের। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগে মুজিব কিল্লা আশীর্বাদ হয়ে এসেছে বলে চরবাসী মনে করছেন। আগামী ডিসেম্বর নাগাদ এই মুজিব কিল্লা নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হওয়া কথা রয়েছে।
স্থানীয় তেওতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের বলেন, সংসদ সদস্য এএম নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের প্রচেষ্টায় অবহেলিত চরবাসী পেতে যাচ্ছে মুজিব কিল্লা। নদী ভাঙনে দিশেহারা মানুষগুলোর জন্য এই কিল্লা স্বপ্নের মতো। অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চিত চরাঞ্চলে মুজিব কিল্লা নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় তারা খুশি। চরের চারিদিকে যমুনা নদী আর নদী ভাঙনে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এই কিল্লার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে ঝড়বৃষ্টি, বন্যা, ভাঙনসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে তারা মাথা গোঁজার আশ্রয় খুঁজে পাবে।
মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এএম নাঈমুর রহমান দুর্জয় বলেন, নদী ভাঙন কবলিত ও বিস্তীর্ণ-বিচ্ছিন্ন এই চরাঞ্চলে যখন বন্যা আসে এবং ভাঙন শুরু হয়; তখন নদীতে অনেক বাড়ি ঘর বিলীন হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে তারা তখন রাস্তা ঘাটসহ বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের দুঃখ দুর্দশা লাঘবে মুজিব কিল্লা নির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের বিভিন্ন অবহেলিত অঞ্চলের জন্য এই ধরনের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। আমরা সৌভাগ্যবান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আলোকদিয়ার মতো দুর্গম চরাঞ্চলের জন্য এই ধরনের একটি প্রকল্প পেয়েছি।