X
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১

চার বছরেও পূর্ণাঙ্গ হলো না নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক কমিটি

সালমান তারেক শাকিল
৩১ মে ২০২১, ২৩:৫৪আপডেট : ৩১ মে ২০২১, ২৩:৫৭

সামাজিক সংগঠন হিসেবে ৯ বছর এবং রাজনৈতিক দল হিসেবে চার বছর পার করছে মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য। এতদিনেও পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি করতে পারেনি দলটি। অবশ্য ঐক্যের নেতারা বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, এক বছরের মধ্যে তারা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সংগঠন গুছিয়ে ঢাকায় সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করবেন।

নাগরিক ঐক্যের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১২ সালের ১ জুন রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে নাগরিক সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ‘নাগরিক ঐক্য’। ২০১২ সালের ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাহমুদুর রহমান মান্না ‘নাগরিক ঐক্য’র ব্যানারে সক্রিয় হন। ওই সময় সামাজিক সংগঠন হিসেবে কাজ করে দলটি।

নেতারা জানান, ওই বছর সিটি নির্বাচন না হলেও মান্নার নেতৃত্বে বিভিন্ন সামাজিক দাবি-দাওয়া নিয়ে সক্রিয় থাকে নাগরিক ঐক্য। পরে ২০১৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে নিখোঁজ হন মাহমুদুর রহমান মান্না। একই বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি র‌্যাব তাকে গ্রেফতারের কথা স্বীকার করে। এর প্রায় ২১ মাস পর ২০১৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান মান্না।

মুক্তি পাওয়ার কয়েক মাস পর ২০১৭ সালের ২ জুন জাতীয় প্রেসক্লাবে রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ‘নাগরিক ঐক্য’।

১৮৩ থেকে কমে ৩৯

দলটির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও সিনিয়র নেতা শহীদুল্লাহ কায়সার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মাহমুদুর রহমান মান্না জেলে যাওয়ার পর থেকে আমরা নাগরিক ঐক্যের উদ্যোগে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, মানববন্ধন করেছি। তাকে সামনে রেখে আমরা সক্রিয় থেকেছি। প্রথমে যখন আমরা নাগরিক সংগঠন হিসেবে সক্রিয় হই। তখন প্রায় ১৮৩ জনের আহ্বায়ক কমিটি ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরে মাহমুদুর রহমান মান্না জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ২০১৭ সালে আমরা রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় করি সংগঠন। আমরা সবাই রাজনীতির মানুষ। তবে, কেউ কেউ সরাসরি কমিটিতে থাকতে অনাগ্রহী থাকায় কমিটিতে সদস্য কমে যায়। এখন ৩৯ জনের আহ্বায়ক কমিটি আছে।’

নাগরিক ঐক্যের নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সবগুলো বিভাগীয় শহরেই এখন দলটির কমিটি আছে। দেশের অন্তত এক তৃতীয়াংশ জেলায় নাগরিক ঐক্যের নেতাকর্মীরা সক্রিয়। এই জেলা কমিটিগুলোর আওতায় উপজেলা ও থানা পর্যায়েও দলটি সক্রিয়।

সংগঠনের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, চার বছর পার হলেও আহ্বায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে রাজনৈতিক চাপ প্রতিকূলতা তৈরি করেছে। সেক্ষেত্রে অনুকূল সময় না হলে সম্মেলন পিছিয়ে যাবে।

সোমবার (৩১ মে) সন্ধ্যায় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শহীদুল্লাহ কায়সার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আমরা সারাদেশে অন্তত ১০০টি উপজেলা, ২০-২২টি জেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রম শেষ করেছিলাম। কিন্তু নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন দেয়নি।’

আহ্বায়ক কমিটির আরেক সদস্য সাকিব আনোয়ার জানান, নাগরিক ঐক্যের বর্তমানে ২৮টি জেলা কমিটি রয়েছে। এসব জেলার উপজেলা পর্যায়েও সক্রিয় কমিটি আছে। কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটিতে সদস্য আছেন ৩৭ জন।

আছে সহযোগী সংগঠনও

রাজনৈতিক দল হিসেবে কার্যক্রম শুরুর পর ইতোমধ্যে কয়েকটি সহযোগী সংগঠনও করেছে নাগরিক ঐক্য। দলটির তরুণ নেতা সাকিব আনোয়ার জানান, সহযোগী সংগঠনগুলো হচ্ছে- নাগরিক ছাত্র ঐক্য, নাগরিক যুব ঐক্য, নাগরিক নারী ঐক্য ও রিকসা শ্রমিক ঐক্য।

নাগরিক ঐক্যকেই বেশি চেনে

সাংগঠনিকভাবে এখনও শক্ত অবস্থান জানান দিতে না পারলেও নাগরিক ঐক্যের নেতারা মনে করছেন, রাজনৈতিকভাবে দলটির নাম ও মান্নার গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে বর্তমান সরকারের সমালোচনা ও কর্মসূচিতে নাগরিক ঐক্য সামনের সারিতে আছে বলে দাবি দলের নেতাদের।

তারা বলছেন, নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে বিএনপি ও অন্য কয়েকটি রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক বোঝাপড়া এখন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছে। বিশেষত ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন প্রক্রিয়ায় মান্নার ভূমিকা নিয়ে বিএনপির হাইকমান্ডও ব্যাপক সন্তুষ্ট।

বিএনপির উচ্চপর্যায়ের একজন দায়িত্বশীল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, নাগরিক ঐক্য ও মান্নাকে নিয়ে বিএনপির শীর্ষনেতৃত্বের ইতিবাচক মনোভাব আরও কার্যকর হবে।

জানতে চাইলে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘সামাজিক সংগঠন থেকে নাগরিক ঐক্য রাজনৈতিক দল হিসেবে কাজ করছে। নাগরিক ঐক্যের বড় সাফল্য হচ্ছে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা। এখন আমার চেয়ে নাগরিক ঐক্যকেই লোকে বেশি চেনে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দুই বছর কারাগারে কেটেছে আমার। জেল-জুলুম আর অবরুদ্ধ পরিবেশের মধ্য দিয়ে রাজনীতি করছে নাগরিক ঐক্য। এখন সরকারের জনপ্রিয়তা যেভাবে কমছে, তেমনি নাগরিক ঐক্যের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে।’

কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার বিষয়ে মান্নার মন্তব্য, অনুকূল সময় হলেই আমরা সম্মেলন করে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করবো।

প্রসঙ্গত, নবম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার (১ জুন) দলীয় পতাকা উত্তোলন কর্মসূচি ও বিকালে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাবেশ করবে নাগরিক ঐক্য।

/এফএ/
সম্পর্কিত
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
রোজার পরে আন্দোলন জোরদার করতে হবে: মান্না
বাজার সিন্ডিকেটের দায় বিরোধী দলের ওপর চাপাতে চায় সরকার, অভিযোগ জোনায়েদ সাকির
সর্বশেষ খবর
ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট কাল
ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট কাল
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
ইইউ দেশগুলোকে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র-বিধ্বংসী অস্ত্র পাঠাতে হবে: বোরেল
ইইউ দেশগুলোকে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র-বিধ্বংসী অস্ত্র পাঠাতে হবে: বোরেল
কানের সমান্তরাল তিন বিভাগে কোন কোন দেশের ছবি
কান উৎসব ২০২৪কানের সমান্তরাল তিন বিভাগে কোন কোন দেশের ছবি
সর্বাধিক পঠিত
এএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
রেস্তোরাঁয় ‘মদ না পেয়ে’ হামলার অভিযোগএএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
‘আমি এএসপির বউ, মদ না দিলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেবো’ বলে হামলা, আহত ৫
‘আমি এএসপির বউ, মদ না দিলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেবো’ বলে হামলা, আহত ৫
রাজধানীকে ঝুঁকিমুক্ত করতে নতুন উদ্যোগ রাজউকের
রাজধানীকে ঝুঁকিমুক্ত করতে নতুন উদ্যোগ রাজউকের
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট