X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

আমাদের বক্তব্য শুনে বিভ্রান্ত হবেন না : সংসদে অর্থমন্ত্রীকে ফিরোজ রশীদ

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৭ জুন ২০২১, ১৮:২০আপডেট : ০৭ জুন ২০২১, ১৮:২০

নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় কোন বক্তব্য শুনে বা বেসরকারি টেলিভিশনের টক শো দেখে বিভ্রান্ত না হতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ।

সোমবার সংসদে ২০২০-২১ অর্থ বছরের সম্পূরক বাজেটের আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের মঞ্জুরী দাবির ওপর আনা ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, অর্থমন্ত্রী অত্যন্ত দক্ষ। তিনি জানেন কখন কোন আইনটি করতে হবে। অপ্রদর্শিত আয় সম্পর্কিত আইন শেয়ার বাজারকে উচ্চ স্তরে নিয়ে গেছে। আমরা চাই যতদিন পর্যন্ত প্রয়োজন হবে, এই আইনটি বলবৎ থাকবে। আপনি টক শো দেখে, পত্রিকা পড়ে আর আমাদের বক্তব্য শুনে বিভ্রান্ত হবেন না। অনেক কষ্টে স্বাধীনতা দেশের স্বাধীনতা এসেছে। দেশটি চালাতে হবে।

ফিরোজ রশীদ বলেন, আমরা বার বার বলছিলাম আমাদের কালো টাকা বলতে কোনো টাকা নাই। টাকা সব বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এই টাকা বিদেশ থেকে ফেরত আনেন। এখন আমেরিকা থেকে টাকা ফেরত আসছে। কেন আসতেছে? কারণ তারা জানেন এই দেশে যদি টাকা আনেন তাহলে হিসাব দিতে হবে না। শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করে অথবা কোনো সম্পদ কেনে তাহলে টেন পারসেন্ট দিয়ে এই টাকা লগ্নি করতে পারবেন। আমরা চাই আমাদের দেশের টাকা দেশে থাকুক। দেশের টাকা বিদেশে চলে যাবে, আমরা কোনো সুযোগ দেবো না?

কানাডায় দুদকের হেড অফিস চাই

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয় বাংলাদেশের পরিবর্তে কানাডায় স্থাপনের প্রস্তাব করে ফিরোজ রশীদ বলেন, দুদকের হেড অফিস আপাতত বাংলাদেশে রাখার দরকার নাই। ওটা কানাডায় সৃষ্টি করুক। আরেকটি মালয়েশিয়ায় ব্রাঞ্চ করুক। একটি আমেরিকায় করুক, অস্টেলিয়ায় করুক, দুবাই করুক। এইখান থেকে তাহলে আমরা বুঝতে পারবো সঠিক চিত্রটা কি।

তিনি বলেন, আমি বলবো, ইতিমধ্যে হাইকোর্ট আমাদের বলে দিয়েছেন যে আপনারা আমাদেরকে লিস্ট দেন, কারা কারা বিদেশে বাড়ি করেছেন, বেগম পাড়া বলেন, যে পাড়া বলেন। আমেরিকায় কারা বাড়ি করেছে, মালয়েশিয়ায় কারা বাড়ি করেছে, লিস্ট দেন। সাম্প্রতিককালে গিয়ে, দীর্ঘকাল যারা সেখানে বসবাস করেন, ব্যবসা-বাণিজ্য করেন তারা তো সেখানে বাড়ি করবেন। কিন্তু সেই লিস্টটা কিন্তু বার বার দুদক দিতে পারে নাই। দুদক যায় আর আসে - এইভাবে শত শত কোটি টাকা ব্যয় হবে, কিছুই হবে না। 

মন্ত্রীর নেতৃত্ব কঠিন, কর্তৃত্ব দুর্বল

ফিরোজ রশীদ বলেন, আমাদের আর্থিকখাতে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্ব খুব কঠিন। কিন্তু উনার কর্তৃত্ব অত্যন্ত দুর্বল। উনি কর্তৃত্ব অথরিটি খাটাতে পারেন না। ওনার যে মন্ত্রণালয় - এর মধ্যেই উনি কর্তৃত্ব খাটান। কিন্তু বাইরে যে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আছে ব্যাংক এখানে ওনার কোনো কর্তৃত্ব নেই। অন্যান্য যে সিডিউল ব্যাংকগুলো আছে, লিজিং কোম্পানিগুলো আছে, ইন্স্যুরেন্সগুলো আছে কোনো জায়গায় যদি কর্তৃত্ব না থাকে অবাধে সব কিছু হবে। একটি ব্যাংক থেকে আরেকটি ব্যাংক টাকা নিচ্ছে। একটি ব্যাংকের ডাইরেক্টর অন্য ব্যাংক থেকে টাকা নিচ্ছে। ওই ব্যাংকের ডাইরেক্টর এই ব্যাংক থেকে টাকা নিচ্ছে। টাকাটা নিয়ে তারা হুন্ডি করে বিদেশে পাচার করতেছে। এইভাবে তারা বহু টাকা, হাজার হাজার লক্ষ কোটি টাকা তারা বিদেশে পাচার করতেছে। 

জাতীয় পার্টির এই এমপি বলেন, আমাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এই যে পি কে হালদার, উনি এতগুলো টাকা নিলেন। আমাদের বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি অডিট সেকশন আছে। তারা যদি সব সময় অডিট করতো তাহলে কিন্তু এইটা হতো না। বাংলাদেশ ব্যাংক যদি অডিট করে ওই ব্যাংকগুলোকে, লিজিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাহলে কিন্তু কেউ চুরি করার সুযোগ পায় না। চুরি করার সুযোগটা আমরা করে দিচ্ছি। অর্থমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ে বসে বসে কী করবেন? সমস্ত দোষ মন্ত্রীর ঘাড়ে পড়ে। আসলে মন্ত্রীর তো করার কিছু থাকে না। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো অডিট করবে প্রতি মাসে, তাহলে তারা এই সমস্ত টাকা পাচার করতে পারে না। এই সমস্ত বাজে ঋণ হতে পারে না। দেশটা আজকে অনেক উন্নয়নের দিকে গেছে। আরো উন্নয়ন হতো। নিজস্ব টাকায় একটা পদ্মা ব্রিজ না, আরো একটা পদ্মা ব্রিজ আমরা করতে পারবো যদি এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়মটা একটু নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসেন। 

তিনি বলেন, পি কে হালদার চলে গেল, বললো আমরা মাত্র ৯ মিনিটের জন্য ধরতে পারি নাই। তাকে ৯ ঘন্টা আগে থেকে অ্যারেস্ট করলেন না কেন? টাকাটা দেশে রেখে দিতাম। পারলো না কেন? এইটা আমরা মন্ত্রীর দোষ দেবো কী? সবার কিন্তু দায়িত্ব ভাগ করা আছে। আমি মনে করি, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতার জন্য আজকে এইগুলো হচ্ছে। অর্থাৎ অথরিটি নাই। এখানে দুইটা জিনিস দরকার। একটা হচ্ছে নেতৃত্ব, আরেকটা কর্তৃত্ব। নেতৃ্ত্ব ঠিকই দিচ্ছেন, কিন্তু কর্তৃত্ব নেই।

/ইএইচএস/এমএস/
সম্পর্কিত
আসন্ন বাজেটে যুক্ত হবেন ২০ লাখের বেশি দরিদ্র মানুষ
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী
কৃষকরাই অর্থনীতির মূল চলনশক্তি: স্পিকার
সর্বশেষ খবর
রাব্বির ব্যাটে শাইনপুকুরকে হারালো শেখ জামাল
রাব্বির ব্যাটে শাইনপুকুরকে হারালো শেখ জামাল
সমবায় সমিতির নামে কোটি টাকার দুর্নীতি: দুদকের অনুসন্ধান শুরু
সমবায় সমিতির নামে কোটি টাকার দুর্নীতি: দুদকের অনুসন্ধান শুরু
পার্বত্য অঞ্চলে অদৃশ্য শক্তি বলে কোনও কথা নেই: পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী
পার্বত্য অঞ্চলে অদৃশ্য শক্তি বলে কোনও কথা নেই: পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নারী কর্মচারীর অকস্মাৎ মৃত্যু, অভিযোগ সচিবের দিকে!
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নারী কর্মচারীর অকস্মাৎ মৃত্যু, অভিযোগ সচিবের দিকে!
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা