করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সময় সারাদেশে আট থেকে ১৪ বছর বয়সী ড্রপ আউট (ঝরে পড়া) শিক্ষার্থী জরিপ শুরু করেছে সরকার। যেসব এলাকায় বিদ্যালয়বহির্ভূত শিশু রয়েছে তার একটি ম্যপিং করে শিক্ষার্থী যাচাই-বাছাই করা হবে। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর (বিএনএফই) জরিপ যাচাই-বাছাই করে ড্রপ আউট চিহ্নিত করা হবে।
জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘কত এনরোলমেন্ট রয়েছে এবং কত ড্রপ আউট হয়েছে তা জানার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা লক্ষ করেছি, বিভিন্ন এলাকায় অনেক বেশি ভর্তি হয়েছে। সেটা কোথা থেকে গিয়ে ভর্তি হলো? ঢাকা শহর থেকে গিয়ে হলো? অনেক কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে গেছে। এদের অনেকে বিভিন্ন এলাকার বিদ্যালয়ে গিয়ে ভর্তি হয়েছে। পুরো চিত্র পেলে আমরা বুঝতে পারবো, ঢাকা শহরে প্রাথমিকের শিক্ষার্থী কমে গেছে কিনা। শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করা যাবে। ড্রপ আউট কত তাও চিহ্নিত করা যাবে।’
করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সময় ড্রপ আউট চিহ্নিত করতে জরিপ পরিচালনায় গত ২৭ মে দেশের সব উপজেলায় পত্র পাঠান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক। ওই পত্রের নির্দেশনায় বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪)-এর আওতায় আউট অব স্কুল চিলড্রেন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো (বিএনএফই)। রিচিং আউট অব স্কুল চিলড্রেন (রস্ক-২) ছাড়া দেশের ৬৪ জেলার ৩৪৫টি উপজেলায় এবং সব সিটি করপোরেশনসহ ১৫টি শহর এলাকায় এটি বাস্তবায়ন করা হবে। রস্ক বাস্তবায়ন কৌশল অনুযায়ী শিশু নির্বাচন কমিটির (ক্যাম্পেইন কমিটি) সভাপতি হিসেবে সংশ্লিষ্ট ক্যাচমেন্ট এরিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। যেসব এলাকায় বিদ্যালয়বহির্ভূত শিশু রয়েছে তার একটি ম্যাপিং এবং তালিকা প্রস্তুত করে বিদ্যালয়বহির্ভূত ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের শনাক্ত করার জন্য জরিপ পরিচালনা করতে হবে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই করে যারা কখনও বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়নি এবং ড্রপ আউট হয়েছে, ড্রপ আইট হলে কোন শ্রেণি থেকে ড্রপ আউট হয়েছে এবং পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্ত আছে কিনা—এসব তথ্য নিশ্চিত করবেন। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো থেকে পাওয়া তালিকা যাচাই করতে হবে এ কার্ক্রমে।
এছাড়া জরিপ করা শিক্ষার্থী তালিকাটি যাচাই-বাছাই করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।