এখন পর্যন্ত ইউরোতে সবচেয়ে উপভোগ্য ম্যাচ কোনটি? উত্তরে জার্মানি-ফ্রান্স ম্যাচের কথা বলবেন অনেকেই। সেটা স্বাভাবিকও, শিরোপা প্রত্যাশী দুই দলের লড়াই বলে কথা!
তবে নেদারল্যান্ডস-ইউক্রেনের ম্যাচ দেখে থাকলে উত্তর পাল্টাতেও পারে। অসাধারণ ফুটবলে উপভোগ্য এক ম্যাচ মঞ্চায়িত হয়েছিল আমস্টারডাম অ্যারেনায়। শেষ ১০ মিনিটে ডাচদের কাঁপিয়ে দিয়েও ৩-২ গোলে হারতে হয় ইউক্রেনকে। তাতে ইউরোতে জয়হীন থাকার সময় আরও দীর্ঘ হয় তাদের। অবশেষে ভাগ্য বদলালো। উত্তর মেসিডোনিয়াকে হারিয়ে ছয় ম্যাচ পর ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় জয়ের হাসি ইউক্রেনের।
আজ (বৃহস্পতিবার) বুখারেস্টে ‘সি’ গ্রুপে উত্তর মেসিডোনিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়েছে ইউক্রেন। প্রথমার্ধের দুই গোলে সুবিধাজনক স্থানে থেকে ইউক্রেন বিরতিতে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধে উত্তর মেসিডোনিয়া খেলায় ফিরলে বাকি সময়টা চরম উত্তেজনায় কেটেছে। তবে ওই স্কোরলাইন ধরে রেখে ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ইউক্রেন।
ডাচদের কাছে হারলেও আদ্রেই শেভচেঙ্কোর দলের পারফরম্যান্স ছিল আশা জাগানিয়া। উত্তর মেসিডোনিয়ার বিপক্ষে তারাই ছিল ফেভারিট। মাঠের ফুটবলেও তার স্পষ্ট ছাপ। ২৯ মিনিটে তারা এগিয়ে যায় আন্দ্রেই ইয়ারমোলেঙ্কোর লক্ষ্যভেদে। কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন অলেক্সান্দর কারাভায়েভ। বল গোলমুখে রাখতে না পারলেও দূরের পোস্ট থেকে জাল খুঁজে নিতে ভুল হয়নি ইয়ারমোলেঙ্কোর।
মিনিট পাঁচেক পর আবার ইউক্রেনের গোল উদযাপন। ঠিক যেন নেদারল্যান্ডস ম্যাচের মতো! ইয়ারমোলেঙ্কোর গোল পাওয়ার কয়েক মিনিট পরই জাল খুঁজে পেয়েছিলেন রোমান ইয়ারেমচুক। উত্তর মেসিডোনিয়ার বিপক্ষেও ৩৪ মিনিটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। তাতে ইউরোতে নতুন এক কীর্তিও গড়লেন ইয়ারমোলেঙ্কো-ইয়ারেমচুক। প্রথম জুটি হিসেবে তারা নির্দিষ্ট কোনও ইউরোর প্রথম দুই ম্যাচে গোল করলেন।
তবে বিরতির পর স্বস্তিতে থাকতে পারেনি ইউক্রেন। এজগিয়ান আলিয়োস্কির গোলে খেলায় ফেরে উত্তর মেসিডোনিয়া। গোলটি তিনি পেতে পারতেন পেনাল্টি থেকে। কিন্তু লিডস ইউনাইটেডের উইঙ্গারের নেওয়া স্পটকিক ঝাঁপিয়ে প্রতিহত করেন ইউক্রেনিয়ান গোলকিপার। কিন্তু ফিরতি বলে আবার শট করে জালে জড়ান আলিয়োস্কি।
এবারের ইউরো যেন পেনাল্টি মিসের টুর্নামেন্ট। বুখারেস্টের এই ম্যাচে মিস হয়েছে আরেকটি পেনাল্টি। এবার হতাশায় ডোবে ইউক্রেন। দলটির মিডফিল্ডার রুসলান মালিনোভোস্কির মিস করেন স্পটকিক। এরপরও জয় পেতে সমস্যা হয়নি। ইউরোতে ছয় ম্যাচ পর প্রথমবার পূর্ণ ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছে তারা। এর আগে সবশেষ তারা জিতেছিল ২০১২ সালে ঘরের মাঠের ইউরোতে, সুইডেনের বিপক্ষে উদ্বোধনী ম্যাচে।