খুলনায় করোনার সংক্রমণ রোধে জেলা প্রশাসনের সাত দিনের ঘোষিত লকডাউনের প্রথম দিন মঙ্গলবার (২২ জুন)। সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা দেখা গেছে। দিনের শুরুতে শহরে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি বেড়ে যায়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত লোক সমাগম আগের দিনের অবস্থায় ফিরেছে। নির্দেশনা উপেক্ষা করে ব্যারিকেড ভেঙে ইজিবাইক, ট্রাক ও ভারী যানবাহন শহরে চলাচল করতে দেখা গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শহরের অধিকাংশ রাস্তায় বাঁশের ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। এতেও সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ করা যাচ্ছে না। জেলখানা ঘাট ও রূপসা ঘাটের মাঝিদের মাঝেও লকডাউন মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখা গেছে।
সোমবার রাতে রূপসা ট্রাফিক স্ট্যান্ড মোড়ের চার পাশের রাস্তায় বাঁশ বেঁধে ব্যারিকেড দেওয়া হয়। যেন একপাশের মানুষ অন্য পাশে আসতে না পারে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ১০ জনের অধিক যাত্রী পারাপার করা যাবে না। কিন্তু বাস্তব চিত্র দেখা গেছে ভিন্ন।
ফুলবাড়ি গেট এলাকায় পুলিশের ব্যারিকেড টপকে ট্রাক, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন শহরে প্রবেশ করতে দেখা যায়। এ সময় কয়েকটি প্রাইভেটকার তল্লাশি এবং চালকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। শহরের বিভিন্ন স্থানে ইজিবাইকে ৪-৬ জন যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মী আজিজুল ইসলাম রাজু বলেন, স্বাভাবিক সময়ে ট্রলারের মাঝিরা ১০-১২ জন যাত্রী তুললেও লকডাউনের প্রথম দিনে ৩০ জন যাত্রী নিয়ে পার করছেন। তারা নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেন না।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকালে শহরে কিছু ফলের দোকান খোলা থাকলেও অন্যান্য দোকানপাট খুলতে দেখা যায়নি। তবে কিছু দোকানের সামনে মালিক ও কর্মচারীদের বসে থাকতে দেখা গেছে। প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্যোগে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বাঁশ বেঁধে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দূরপাল্লার কোনও বাস খুলনা থেকে ছেড়ে যায়নি।
সকাল থেকে মহানগরীর ডাকবাংলা, পিকচার প্যালেস মোড়, শিববাড়ি ও সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে পুলিশের তৎপরতা ছিল চোখে পড়া মতো। ডাকবাংলা ও পিকচার প্যালেস মোড়ের সব দোকান বন্ধ ছিল। শিববাড়ি মোড়ে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। সোনাডাঙ্গা থেকে কোনও বাস ছেড়ে যায়নি।
খুলনা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম বলেন, লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে রয়েছে প্রশাসন। বিনা কারণে রাস্তায় ঘোরাফেরা এবং মাস্ক না থাকায় নগরীর সাতরাস্তা মোড় থেকে সাতজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।