বাংলাদেশ ব্যাংকে বর্তমানে কর্মরতএকজন নির্বাহী পরিচালক, প্রভাবশালী সাবেক দুই ডেপুটি গভর্নরসহ পাঁচ শীর্ষ কর্মকর্তাকে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতি ধরতে গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। মঙ্গলবার (২২ জুন) সকাল ১১টা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়, ধারাবাহিকভাবে চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
শুরুতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী ও এস এম মনিরুজ্জামান। তাদের পৃথকভাবে দুই ঘণ্টা করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এরপর সাবেক নির্বাহী পরিচালক (ইডি) মাহফুজুর রহমান ও শেখ আব্দুল্লাহ এবং বর্তমান নির্বাহী পরিচালক (ইডি) শাহ আলমকে সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ চলে। এর আগে সোমবার সাবেক ডেপুটি গভর্নরসহ অন্যদের ডেকে পাঠায় তদন্ত কমিটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা সোমবার কমিটির মুখোমুখি হন।
তিনটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফসি), পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের অনিয়মের কারণ উদঘাটনে (ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং) এই কমিটি গঠন করা হয়।
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির প্রধান এ কে এম সাজেদুর রহমান খান এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে এলে প্রশ্ন করা হয় এস কে সুর চৌধুরীকে। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে করা যেসব অভিযোগ তার সবই মিথ্যা। আমার যা বলার তা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটিকে বলেছি।’ এরপর আর কোনও কথা না বলে দ্রুত গাড়িতে উঠে বাংলাদেশ ব্যাংক ভবন এলাকা ত্যাগ করেন তিনি।
সাবেক প্রভাবশালী ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান খান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের কোনও অভিযোগ নেই। সাক্ষাতের জন্য আমাকে ডাকা হয়েছিল। এজন্য আমি বাংলাদেশ ব্যাংকে এসেছিলাম।’
সাবেক নির্বাহী পরিচালক (ইডি) মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আমি সে সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে দায়িত্ব পালন করেছিলাম, তাই আমাকে ডাকা হয়েছিল। তবে কোনও অনিয়মের সঙ্গে আমি জড়িত ছিলাম না।’
প্রসঙ্গত, আদালতের পর্যবেক্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি গঠিত এ কমিটির সভাপতি করা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এ কে এম সাজেদুর রহমান খানকে, সদস্য সচিব করা হয় বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক মো. সারোয়ার হোসেনকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন— বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এ কে এম ফজলুর রহমান, ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক মো. কবির আহাম্মদ, ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ-৪-এর মহাব্যবস্থাপক মো. নুরুল আমীন। আর আদালত থেকে কমিটিতে রয়েছেন দুই জন। তারা হলেন সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মহিদুল ইসলাম ও সাবেক সচিব নুরুর রহমান।