৭০ বছরের প্রচেষ্টার পর অবশেষে চীনকে আনুষ্ঠানিকভাবে ম্যালেরিয়া মুক্ত দেশ ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ১৯৪০ এর দশকে দেশটিতে প্রতিবছর তিন কোটি মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হতো। তখন থেকেই রোগটি নির্মূলে নানা পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয়। ধীরে ধীরে কমতে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু সাধারণত মশার মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। সংক্রমণের চক্র ভেঙে দিতে একাধিক পদ্ধতি অনুসরণ করেছে চীন। ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, বিগত চার বছর ধরে একজনও রোগী শনাক্ত না হওয়ায় দেশটি এখন ম্যালেরিয়া মুক্ত।
ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক টেড্রোস আডানোম গেব্রিয়াসিস বলেন, চীনের সফলতা কষ্টার্জিত আর বিগত কয়েক দশক ধরে সুনির্দিষ্ট এবং ক্রমাগত পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমেই অর্জিত হয়েছে।
এই সপ্তাহে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উদযাপনের আয়োজন করছে বেইজিং। ম্যালেরিয়া মুক্ত ঘোষণার স্বীকৃতিকে মানবাধিকার ইস্যুতে বড় অর্জন বলে দাবি করছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, ‘সিসিপি এবং চীনা সরকার সব সময় মানুষের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধির সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়। মানুষের স্বাস্থ্য এবং বিশ্বের মানবাধিকার সমুন্নত করায় ম্যালেরিয়া নির্মূল করা চীনের বড় ধরনের অবদান।’
মানুষের প্রাণঘাতী রোগ ম্যালেরিয়া। জ্বর, মাথাব্যাথা দিয়ে শুরু হয় এই অসুস্থতা। চিকিৎসা না পেলে এটি দ্রুত মারাত্মক অসুস্থতার দিকে মোড় নেয় আর প্রায়ই মৃত্যু ঘটায়। প্রতিরোধযোগ্য এবং সময় মতো ধরা পড়লে নিরাময়যোগ্য হলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী ২০১৯ সালে বিশ্ব জুড়ে এই রোগে চার লাখ ৯ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। ম্যালেরিয়া সংক্রমণের প্রায় ৯৪ শতাংশই ঘটেছে আফ্রিকা মহাদেশে।
ম্যালেরিয়া আক্রান্তের পরিমাণ কমিয়ে আনতে চীন সরকার রোগ প্রতিরোধক ওষুধ ব্যবহার ছাড়াও মশা নিয়ন্ত্রণ, এবং মশারি বিতরণ করে সফলতা পেয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ৪০তম দেশ হিসেবে ম্যালেরিয়া মুক্ত হলো চীন। গত কয়েক বছরের মধ্যে এই স্বীকৃতি পাওয়া অন্য দেশগুলোর মধ্যে আছে আর্জেন্টিনা, আলজেরিয়া এবং উজবেকিস্তান।