X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

কর্মমুখী শিক্ষা নিয়ে আসছে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

এস এম আববাস
০৮ জুলাই ২০২১, ১৭:৩৭আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২১, ১৭:৩৭

দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে কর্মমুখী শিক্ষা নিয়ে আসছে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি)। একইসঙ্গে সময়ের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলমান শিক্ষা প্রোগ্রামগুলো ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তিবান্ধব করতে শিগগিরই শিক্ষক-কর্মকর্তাদের নিবিড় প্রশিক্ষণ দিতে বছরব্যাপী কর্মসূচি হাতে নেওয়া হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, উন্মুক্ত শিক্ষার বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রামগুলোকে বিশ্বমানের করে তোলার জন্য উন্মুক্ত ও দূরশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তিতে সংযুক্ত। তাই উন্মুক্ত শিক্ষার বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রামগুলোকে বিশ্বমানের করে তোলার জন্য সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। এ লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন লেভেলের শিক্ষা কার্যক্রম প্রয়োজন অনুযায়ী ঢেলে সাজানো হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রায় তিন মাস ধরে  উপাচার্য নিয়মিত না থাকায় আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে গুরুত্বপূর্ণ অনেক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি। এ ছাড়া করোনার কারণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতোই গত এক বছরে শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়াও সম্ভব হয়নি।

এ অবস্থায় রাষ্ট্রপতি ও আচার্য মো. আবদুল হামিদ উপাচার্য পদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সদ্য অবসরে যাওয়া বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতারকে উপাচার্য পদে নিয়োগ দেন। গত ৩০ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন তিনি। যোগদানের পরপরই বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যার সমাধানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে গতি আনতে বেশকিছু পরিকল্পনা হাতে নেন তিনি। অফিসিয়াল ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শিক্ষার্থীদের সমস্যা সংক্রান্ত মন্তব্য যাচাই করে সমাধান দেওয়ারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এরই মধ্যে।

জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশসহ বিশ্বের চাহিদা বিবেচনা করে শিক্ষাকে গণমুখী করা হবে। পাশাপাশি ডিপ্লোমা, সার্টিফিকেট লেভেলের প্রোগ্রাম চালু এবং কর্মমুখী শিক্ষা চালু করা হবে। বেকারত্ব দূর করার জন্য বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করেই শিক্ষা প্রোগ্রামগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলাই আমার লক্ষ্য। চাকরি, ব্যবসা, উদ্যোক্তা তৈরিই হবে বাউবির শিক্ষা প্রোগ্রামের লক্ষ্য। এক কথায় ‘নীড বেজ এডুকেশন’ পরিচালিত হবে বাউবিতে। উন্নত বাংলাদেশ গঠনে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার বাস্তবায়নে বাংলাদেশের অর্থ-সামাজিক ভিত্তিতে কোর্সগুলোকে আরও  আকর্ষণীয় করা হবে।’

অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, ‘যেসব বিষয়ে মাস্টার্স খোলা সম্ভব হয়নি, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনা করে সেসব বিষয়ে দ্রুত মাষ্টার্স প্রোগ্রাম চালুর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এলএলবি অনার্স শেষ করা শিক্ষার্থীদের জন্য এলএলএম চালুর বিষয়টি দ্রুত বিবেচনায় আনা হবে বলে জানান উপাচার্য।

সরকারের ২০৪১ সালের টার্গেট বাস্তবায়নে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজে এগিয়ে আসতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের  আহ্বান জানান উপাচার্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উচ্চশিক্ষা ছাড়াও  মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে কর্মমুখী শিক্ষা সংযুক্ত করা হবে। এসএসসি ও এইচএসসি প্রোগ্রামে এনরোলমেন্ট বাড়াতে স্টাডি সেন্টার বাড়ানোর পকিল্পনা রয়েছে। উচ্চশিক্ষাকে জনপ্রিয় করতে কর্মমুখী শিক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।

উপাচার্য বলেন, ‘দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার মহাসোপানে সংযুক্ত করতেই কর্মমুখী শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসা, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা কিংবা কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রোগ্রাম চালু হবে। মূল কারিকুলামের পাশাপাশি এ সব প্রোগ্রাম চালু করা হবে।’

চালু হবে স্কুল অব এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড কনজারভেশন

দেশের প্রয়োজনে বাস্তবভিত্তিক দক্ষতা ও জ্ঞান অর্জনে ‘স্কুল অব এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড কনজারভেশন’ নামের নতুন বিষয় নিয়ে আসছে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ল। এ বিষয়ে  জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, ‘‘দেশের প্রয়োজনে প্রয়োগিক জ্ঞান অর্জনে ‘স্কুল অব এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড কনজারভেশন’ কোর্স চালু করা হবে। ডিগ্রি ও মার্স্টাস যেভাবে পরিচালিত হবে, সেভাবে এটি পরিচালিত হবে।  উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি কোর্সটি চলবে।”

তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসীদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অনলাইনে শিক্ষা প্রোগ্রাম আরও বাড়ানো হবে। এভাবে প্রবাসীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের যোগ্যতা বাড়ানো হবে।’

কর্মমুখী শিক্ষার প্রয়োজনে বিভিন্ন শর্টকোর্স বা ডিপ্লোমা চালুর বিষয়ে উপাচার্য ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, ‘দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে গণমুখী, কর্মমুখী শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সমাজের পিছিয়ে পড়া নারী, ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীকে শিক্ষার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। নারী ও ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীসহ সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের ক্ষুদ্র ব্যবসা, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা কিংবা চাকরির ব্যবস্থা নিতে মূল কারিকুলামের সঙ্গে বিভিন্ন শর্টকোর্স চালু করা হবে।’

 

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
রেলের প্রতিটি টিকিটের জন্য গড়ে হিট পড়েছে ৫ শতাধিক
রেলের প্রতিটি টিকিটের জন্য গড়ে হিট পড়েছে ৫ শতাধিক
একসঙ্গে ইফতার করলেন ছাত্রলীগ-ছাত্রদলসহ সব ছাত্রসংগঠনের নেতারা
একসঙ্গে ইফতার করলেন ছাত্রলীগ-ছাত্রদলসহ সব ছাত্রসংগঠনের নেতারা
শনিবার সকালে আবার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা বুয়েট শিক্ষার্থীদের
শনিবার সকালে আবার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা বুয়েট শিক্ষার্থীদের
ইসরায়েল যা যা অস্ত্র চেয়েছিল সব পায়নি: মার্কিন সেনাপ্রধান
ইসরায়েল যা যা অস্ত্র চেয়েছিল সব পায়নি: মার্কিন সেনাপ্রধান
সর্বাধিক পঠিত
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছেন’
‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছেন’
২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেট্রোরেল লাইনের ওপর থেকে ক্যাবল সরানোর অনুরোধ
২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেট্রোরেল লাইনের ওপর থেকে ক্যাবল সরানোর অনুরোধ