নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড কারখানায় আগুনের সময় ভবনের একটি সিঁড়ি বন্ধ ছিল, এ কারণে এত প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক অপারেশনস দেবাশীষ বর্ধন।
শুক্রবার (৯ জুলাই) বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য জানান তিনি।
দেবাশীষ বর্ধন বলেন, ‘ছাদের সিঁড়ি বন্ধ না থাকলে হাসেম ফুডসে অনেক প্রাণ বাঁচতো। আমরা একটি ভবন থেকে ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। তারা যদি ছাদে উঠতে পারতেন, তাহলে তাদের প্রাণে বাঁচানো যেত।’
ছয় তলা ভবনের ছাদে ওঠার জন্য দুটি সিঁড়ি রয়েছে, যার একটির দরজা বন্ধ ছিল বলে জানান তিনি।
দেবাশীষ বর্ধন বলেন, সিঁড়ির ল্যান্ডিংয়ে ছিল ভয়াবহ আগুন। ফলে তারা নিচের দিকে আসতে পারছিলেন না। আবার তালাবদ্ধ থাকায় ছাদেও যেতে পারেননি নিহত শ্রমিকরা।
প্রসঙ্গত, রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস কারখানায় বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টায় আগুনের সূত্রপাত হয়। এ সময় কারখানার ছয় তলা ভবনটিতে তখন প্রায় চারশ’র বেশি কর্মী কাজ করছিলেন। কারখানায় প্লাস্টিক, কাগজসহ মোড়কিকরণের প্রচুর সরঞ্জাম থাকায় আগুন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সব ফ্লোরে।
প্রচুর পরিমাণ দাহ্য পদার্থ থাকায় কয়েকটি ফ্লোরের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের ২০ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুরে কারখানার ভেতর থেকে ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে, আগুনে পুড়ে তিন জনের মৃত্যু হয়। সবমিলে এ পর্যন্ত ৫২ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। কারখানায় আগুনের ঘটনায় প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
দীর্ঘ সময়েও আগুন নেভাতে না পারায় স্থানীয়দের হামলা
যে কারণে দীর্ঘ সময়েও নিয়ন্ত্রণে আসেনি জুস ফ্যাক্টরির আগুন
১৭ ঘণ্টায় নেভেনি জুস কারখানার আগুন, নিহত ৩
কান্না চোখে স্বজনের খোঁজ (ফটো স্টোরি)
নারায়ণগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি
রূপগঞ্জে কারখানায় আগুন, হাতিয়ার ৩ শ্রমিক নিখোঁজ
কারখানার সামনে মেয়ের জন্য মায়ের আহাজারি
নারায়ণগঞ্জে আগুনে হতাহতের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর শোক