X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাদা গরুর দাম কেন বেশি?

তানজিল হাসান, মুন্সীগঞ্জ
১৯ জুলাই ২০২১, ১৬:০০আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২১, ১৬:০০

পুরান ঢাকাবাসীদের কাছে কোরবানির পশু হিসেবে মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিমের সাদা গরুর চাহিদা আছে এখনও। ঐতিহ্য ধরে রাখতে কোরবানির জন্য এই গরু পছন্দ তাদের। বিশেষ যত্নে লালিত এই গরুর মাংসের স্বাদ দারুণ। কষ্ট করে হলেও মিরকাদিমের খামারিরা এখনও সাদা গরু লালন-পালন করেন। গত বছরের তুলনায় এবার খামারিদের সাদা গরুর সংখ্যা বেড়েছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একসময় পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জ হাটে উঠতো সাদা গরু। সময়ের পরিক্রমায় এই গরুর সংখ্যা কমেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় হাটে নেওয়ার আগেই খামারিরা ঘরে বসে বিক্রি করছেন। বেশ আগে থেকেই মিরকাদিমে সাদা গরুর পাশাপাশি পাওয়া যেত নেপালি, বুইট্টা, হাঁসা, পশ্চিমা ও সিন্ধি জাতের গরু।

মিরকাদিমের পাশে ধলেশ্বরী নদীর তীরে কমলা ঘাট প্রাচীন ব্যবসাকেন্দ্র। সেখানে আছে খৈল, ভুসি, খুদ ও কুঁড়ার ব্যবসা। মূলত চালকল ও তেলের ঘানির ব্যবসার সঙ্গে সঙ্গে এসব ব্যবসার প্রসার ছিল। তাই সাদা গরুর বিশেষ খাবার খৈল, ভুসি, খুদ ও কুঁড়ার কোনও অভাব ছিল না। এজন্য এই এলাকার খামারিরা তাদের গরুকে এসব খাবার দিতেন। 

কিন্তু দিন বদলের কারণে এসব খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাদা গরুকে খাওয়ানো ব্যয়বহুল হয়ে যায়। তাই লাভ গুনতে না পেরে সাদা গরু পালন কমে গেছে। বর্তমানে নগর কসবা ও আশপাশে ১০-১২টি পরিবার সাদা গরু পালন করছেন। যদিও আগে কোরবানির সময় দুই থেকে তিন হাজার সাদা গরুর দেখা মিলতো রহমতগঞ্জ হাটে।

খামারিদের দাবি, বিশেষ যত্নে লালিত এসব গরুর মাংসের স্বাদ দারুণ। গরুকে কখনও ক্ষতিকর ট্যাবলেট খাওয়ানো হয় না। মোটাতাজা করার ইনজেকশন দেওয়া হয় না। একেকটি গরু এক লাখ থেকে আট লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। কোরবানির ঈদের ৬-৮ মাস আগে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই জাতের বাছুর কিনে লালন-পালন করেন খামারিরা। ৬-৮ মাস লালনের পর বাছুরের দাম ও খাবারের খরচ মিলিয়ে যা ব্যয় হয়, বিক্রি করে সীমিত লাভ হয় খামারিদের।

একেকটি গরু এক থেকে আট লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়

মিরকাদিম অ্যাগ্রোর মালিক মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘বেশি খরচের কারণে অনেক বছর সাদা গরু লালন-পালন করিনি। দুই বছর ধরে আবার পালন শুরু করেছি। এসব গরুর দাম অন্য গরুর দামের সঙ্গে তুলনা করলে চলে না। এটি একান্তই পছন্দের ব্যাপার। সাদা বুইট্টা গরু দেখতে অনেক সুন্দর। তার ওপর দাম হাঁকা হয়। এবার কয়েকটি গরু পালন করেছি। ভালো দাম পেলে সামনের বছরও লালন-পালন করবো। আর না হয় ছেড়ে দেবো।’

স্থানীয় খামারি ইমন বেপারি বলেন, ‘আমার খামারে ৭০টি সাদা গরু আছে। মিরকাদিমের ঐতিহ্য সাদা ও বুইট্টা গরু। বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমরা কোনোমতে এই পেশায় টিকে আছি।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কুমুদ রঞ্জন মিত্র জানান, ‘দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সাদা গরুগুলো সংগ্রহ করে এবং লালন-পালন করেন মীরকাদিমের লোকজন। প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করছি; যেন গরুগুলো কম খরচে প্রাকৃতিকভাবে মোটাতাজা করতে পারেন খামারিরা। তারা লাভবান হলে মিরকাদিমের সাদা গরুর হারানো ঐতিহ্য ফিরে আসবে।’

/এএম/
সম্পর্কিত
বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলমানকে জয়ের ঈদ শুভেচ্ছা
যেখানে-সেখানে পশু কোরবানি, নির্ধারিত স্থানে যায়নি কেউ
এক হাট থেকে খুলনা সিটি আয় করেছে দুই কোটি ২১ লাখ টাকা
সর্বশেষ খবর
দেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
সিনেমা সমালোচনাদেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
দুবাই হয়ে ট্রানজিট ফ্লাইট স্থগিত করলো এমিরেটস
দুবাই হয়ে ট্রানজিট ফ্লাইট স্থগিত করলো এমিরেটস
ঢাকা শিশু হাসপাতালে আগুন
ঢাকা শিশু হাসপাতালে আগুন
রাজশাহীতে বইছে তাপদাহ, হাসপাতালে বাড়ছে রোগী
রাজশাহীতে বইছে তাপদাহ, হাসপাতালে বাড়ছে রোগী
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ