X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

পশুবাহী গাড়িতেও গ্রামে ছুটছে মানুষ

গাজীপুর প্রতিনিধি
১৯ জুলাই ২০২১, ১৯:৪৬আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২১, ১৯:৪৮

আগামী পরশু ঈদুল আজহা। স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে শহর ছেড়ে গ্রামে ছুটছে মানুষ। করোনাকালে গণপরিবহনে সিট পাওয়া মুশকিল, তার ওপর ভাড়াও বেশি। তাই শহরে পশু পৌঁছে দিয়ে গ্রামের দিকে ফিরে যাওয়া পিকআপ ভ্যান ও ট্রাকে বাড়ি ফিরছেন অনেকে।

সোমবার (১৯ জুলাই) সকালের দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর মহানগরের কলেজ গেট, বড়বাড়ি, বোর্ডবাজার ও গাজীপুর এলাকায় যানবাহনের চাপ তেমন লক্ষ্য করা যায়নি। তবে গাড়ি না পেয়ে পশু রেখে গ্রামের দিকে ফেরা বাহনগুলোতে উঠতে দেখা গেছে অনেককে। এদিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে, বিশেষ করে দুপুর ১২টার পর থেকে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। তবে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে সকাল থেকেই চাপ ছিল। 

সরেজমিন চান্দনা চৌরাস্তা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চৌরাস্তা এলাকায় কোনও গণপিরবহন দাঁড়াতে দিচ্ছে না পুলিশ। যানজট এড়াতে এলাকাটি ফাঁকা রাখা হচ্ছে।

যাত্রীদের চাপ বেড়েছে

ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজার হাজার যাত্রী উত্তরবঙ্গের প্রবেশপথ চন্দ্রা ত্রিমোড়ে ভিড় করছে। শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুরের পোশাক কারখানা ছুটি হওয়ায় যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। গণপরিবহনের স্বল্পতার কারণে অনেককেই গরুবাহী ট্রাক ও পিকআপে ফিরতে দেখা গেছে।

রাজেন্দ্রপুরের ডার্ড কম্পোজিট কারখানায় চাকরি করেন সাইদুল ইসলাম। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‌১০ দিনের ছুটি পেয়েছি। বাড়ি ফেরার জন্য রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তায় এসে বসে আছি দেড় ঘণ্টা ধরে। তারপরও গাইবান্ধার কোনও গাড়ি পাচ্ছি না।

চন্দ্রা এলাকায় গাড়ির অপেক্ষায় বসে ছিলেন সিরাজগঞ্জের বাচ্চু মিয়া। তিনি টঙ্গীর একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। ভেঙে ভেঙে এসেছিলেন চন্দ্রা পর্যন্ত। এরপর আর গাড়ি পাচ্ছিলেন না। 

বাচ্চু মিয়া বলেন, এত কষ্ট করে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছি। যদি লকডাউন আবার ২৩ তারিখ থেকে নিশ্চিত হয়, তাহলে ঈদের পরের দিনই চলে আসতে হবে।

দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও গাড়ি পাচ্ছেন না অনেকে

এদিকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা ও ভোগড়া বাইপাস মোড়ে যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহনের চাপ বেড়েছে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বাড়ছে রাস্তার দুই পাশে। দুপুরের পর কারখানা ছুটি হলে যারা গন্তব্যে যাবেন, তাদের জন্য চান্দনা চৌরাস্তা ও ভোগড়া বাইপাস এলাকায় যাত্রীবাহী বাসগুলো রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। অনেকে অগ্রিম টিকিট করে রেখেছেন। আবার অনেকে বাস স্টপেজে এসে টিকিট করবেন।

গাজীপুর সদর উপজেলার মাস্টারবাড়ি এলাকার এসএম নিটওয়্যার লিমিটেডের অপারেটর লোকমান হোসেনের বাড়ি নেত্রকোনার বাউসী গ্রামে। স্ত্রী-সন্তান ও মালামালসহ দুপুর ১টা থেকে অপেক্ষা করছিলেন বাসের জন্য। নেত্রকোনাগামী একটি বাসে ভাড়া বেশি চাওয়ায় তিনি ওঠেননি। এদিকে সব বাস না থামিয়ে চলে যাচ্ছিল। অবশেষে দুপুর তিনটার দিকে শহরে গরু রেখে গ্রামের দিকে ফিরে যাওয়া একটি ট্রাকে ওঠেন তিনি। তার সঙ্গে আরও অনেক যাত্রী ওঠেন।

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ট্রাকচালক জানে আলম বলেন, ট্রাকে করে যাত্রী নিলেও যাত্রী কমবে না। সড়কে যাত্রীবাহী পরিবহনের সংখ্যা অনেক কম। মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করেই তারা ফিরতি পথে যাত্রী পরিবহন করছেন।

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার লাভলু শেখ বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এলাকায় সকাল থেকেই অনেক গাড়ি দেখা যাচ্ছে। কিন্তু যাত্রীবাহী গাড়ীর সংখ্যা কম। যেসব গাড়ি ঢাকা থেকে আসছে সেগুলো যাত্রীবোঝাই করে আসছে। পিকআপ, ট্রাক ও পণ্যবাহী গাড়ির সংখ্যাই বেশি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সড়কের চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় দাঁড়িয়ে থেকেও কোনও বাসে উঠা যাচ্ছে না। বাড়ি ফেরার সময় এত দুর্ভোগ, লকডাউন যদি ২৩ তারিখ দেয়, তাহলে ঈদের পরের দিন ফিরতে গিয়ে আরও দুর্ভোগে পড়তে হবে।

মাওনা চৌরাস্তা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন জানান, সড়কে দাঁড়িয়ে কোনও গাড়ির যাত্রী ওঠা-নামা করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাছাড়া পিকআপ ও ট্রাকে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রী পরিবহন করতে দেওয়া হচ্ছে না। এরকম হয়ে থাকলে তা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে হয়তো একটা-দুইটা ঘটনা ঘটছে। তবে ট্রাকে সাধারণত পণ্য বা পশু পরিবহন করা হচ্ছে।

শহরে গরু রেখে গ্রামের দিকে ফিরে যাওয়া গাড়িতে ওঠেন অনেকে

কোনাবাড়ি হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর গোলাম ফারুক জানান, শিল্প-কারখানা ছুটি হওয়ায় মহাসড়কে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। সবগুলো প্রতিষ্ঠান ছুটি হলে চাপ আরও বাড়বে। তবে আমরা যানজট ও যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিতে তৎপর রয়েছি। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

গাজীপুর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান আহমাদ সরকার জানান, সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালানোর জন্য গাড়ির স্টাফদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক গাড়িতেই স্যানিটাইজার রাখা ও ব্যবহারের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। মাস্ক ব্যবহারের বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়েছে। যাত্রী ওঠা-নামা বা কিছুটা চাপ থাকলে হয়তো কোনও কোনও স্থানে ব্যত্যয় ঘটছে, তবে তা সাময়িক।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক বিভাগ) মেহেদী হাসান বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের ভিড় দুপুরের পর বাড়ে। কিছু শিল্প-কারখানা রবিবার (১৮ জুলাই) ছুটি হয়েছে। আবার কিছু সোমবার হয়েছে। চাপ আরও বাড়বে। যানবাহন ও সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় ট্রাফিক বিভাগ তৎপর রয়েছে।

/এসএইচ/
সম্পর্কিত
হেলমেটের মান নির্ধারণ হবে কবে?
মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
৫৫০ টাকার ভাড়া ৭০০ নেওয়ায় লাল সবুজ পরিবহনকে ২০ হাজার জরিমানা
সর্বশেষ খবর
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
দিল্লিকে ভয় ধরিয়ে হারলো গুজরাট
দিল্লিকে ভয় ধরিয়ে হারলো গুজরাট
ডিইউজে নির্বাচনে সভাপতি পদের মীমাংসা মামলার শুনানি ২৫ এপ্রিল
ডিইউজে নির্বাচনে সভাপতি পদের মীমাংসা মামলার শুনানি ২৫ এপ্রিল
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী