X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১

সায়মন ড্রিংয়ের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২০ জুলাই ২০২১, ১৯:৩৫আপডেট : ২০ জুলাই ২০২১, ২০:১২

বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু, ব্রিটিশ সাংবাদিক সায়মন ড্রিংয়ের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (২০ জুলাই) মহান মুক্তিযুদ্ধে সাংবাদিক সায়মন ড্রিংয়ের সাহসী অবদানের কথা উল্লেখ করে এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কাল রাত্রিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ভয়াবহ গণহত্যার তথ্য ও প্রতিবেদন তিনি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেন।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জনমত সৃষ্টিতে তিনি ভূমিকা রেখেছেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশের গণমাধ্যমের বিকাশেও তার অবদান রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

গত শুক্রবার রুমা‌নিয়ার এক‌টি হাসপাতা‌লে মারা যান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু ব্রিটিশ সাংবাদিক সায়মন ড্রিং। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। কিছু‌ দিন ধ‌রে তি‌নি রুমা‌নিয়ায় বসবাস কর‌ছি‌লেন। হা‌র্নিয়ার অপা‌রেশনের পর হাসপাতা‌লে তিনি হৃদ‌রো‌গে আক্রান্ত হন।

রয়টার্স, টেলিগ্রাফ ও বিবিসির হয়ে সায়মন ড্রিং দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। এ ছাড়া বৈদেশিক সংবাদদাতা, টেলিভিশন উপস্থাপক এবং তথ্যচিত্র নির্মাতা হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।

বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশন স্টেশন একুশে টেলিভিশনের যাত্রা শুরুর সময় সাইমন ড্রিংয়ের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গণহত্যা শুরু করার আগে ঢাকায় অবস্থানরত প্রায় দুইশ’ বিদেশি সাংবাদিককে আটকে ফেলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে। তাদের হোটেল থেকে সরাসরি বিমানে তুলে ঢাকা ছাড়তে বাধ্য করা হয়, যাতে গণহত্যার কোনও খবর সংগ্রহ করতে না পারে বিশ্বগণমাধ্যম। তাদের মধ্যে ছিলেন ব্রিটিশ সাংবাদিক সায়মন ড্রিং। পাকিস্তানি সামরিক আইন না মেনে তিনি হোটেলে লুকিয়ে পড়েন। শ্বাসরুদ্ধকর ৩২ ঘণ্টা সময় কাটে হোটেলের লবি, ছাদ, বার, কিচেনের মতো জায়গায়। পরবর্তীতে তার তথ্য থেকেই বিশ্ব জানতে পারে গণহত্যার বাস্তব চিত্র। ২৭ মার্চ কারফিউ উঠে গেলে সায়মন ড্রিং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হল, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকাসহ ধানমন্ডি  ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ঘুরে দেখেন।

১৯৭১-এর ৩০ মার্চ লন্ডনে ফিরে যেতে বাধ্য হলেও আবারও ফিরে আসেন বন্ধুদেশে, সাংবাদিকতার স্বপ্ন নিয়ে। গড়ে তোলেন দেশের প্রথম আধুনিক বেসরকারি টিভি একুশে টেলিভিশন। ২০০২ সালে সে সময়ের সরকার তাকে বাংলাদেশ ত্যাগে বাধ্য করে। এরপর আবার ২০১৩ সালে বাংলাদেশে আসেন সায়মন। বারবার এই বন্ধু ফিরে এসেছেন নানা স্বপ্ন বুনতে। মানসম্মত ও পেশাদার সাংবাদিক, কলাকুশলীদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে তৈরি করেন অনেক নামকরা সংবাদকর্মী।

সাইমন ড্রিংয়ের জন্ম ইংল্যান্ডে, ১৯৪৫ সালে। তিনি সংবাদপত্র ও টেলিভিশনের সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন ১৮ বছর বয়স থেকে। বিশ্ব আজ স্মরণ করছে এই বন্ধুকে গভীর শ্রদ্ধায়।

 

/পিএইচসি/আইএ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
দুই বলের ম্যাচে জিতলো বৃষ্টি!
পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড প্রথম টি-টোয়েন্টিদুই বলের ম্যাচে জিতলো বৃষ্টি!
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন