দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্য অনেক দেশের মতোই ডেল্টা সংক্রমণে বিপর্যস্ত হচ্ছে মালয়েশিয়া। মহামারির সবচেয়ে ভয়াবহ ঢেউয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশটি।
বর্তমানে সেখানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উর্ধ্বমুখী। দৈনিক ১৭ হাজারের বেশি মানুষের কোভিড শনাক্ত হচ্ছে। এ নিয়ে ১১ লাখ ১৩ হাজার ২৭২ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। কেবল ৩১ জুলাই শনিবারেই সরকারি হিসাবে মারা গেছেন ১৬৫ জন। এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট ৯ হাজার ২৪ জন মারা গেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরীক্ষার হার অনেক কম হওয়ায় প্রকৃত আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা আরও বেশি। হাসপাতালগুলো রোগীতে উপচে পড়ছে। রোগীরা সিট না পেয়ে চেয়ারে বসে আছে। অনেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার শেয়ার করে ব্যবহার করছে।
হাসপাতাল থেকে রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি যাদের ভর্তি করা হচ্ছে, তারা যে শয্যা পাবেন এমন নিশ্চয়তা নেই। এ পরিস্থিতিতে গত ২৬ জুলাই দেশটির কয়েক হাজার জুনিয়র চিকিৎসক হাসপাতাল থেকে ওয়াকআউট করেন। চাকরি স্থায়ীকরণ এবং অবস্থার উন্নয়নের দাবি জানান তারা।
হাসপাতালের মর্গে দাবানাহীন লাশের কারণে বাড়ছে লাশের দীর্ঘ সারি। একজন উচ্চপদস্থ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, ‘বিদেশি নাগরিকদের মৃতদেহগুলির ক্ষেত্রেও আমরা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি, কারণ সেখানে দূতাবাস রয়েছে যা পুরনো পদ্ধতির সঙ্গে লেগে থাকে যখন দেহাবশেষ দাবি করা হয়। ফলস্বরূপ, কিছু দূতাবাস থেকে রিলিজ লেটার পাওয়ার আগে, এন্ডারটেকারদের একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গড়ে এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হয়। বর্তমানে এই বিষয়টি আরও জটিল হয়ে পড়েছে। কেননা, এখন আন্তর্জাতিক বিমান খুব কম রয়েছে। ফলে মরদেহগুলো তাদের মাতৃভূমিতে ফেরার জন্য অপেক্ষমান রয়েছে।
অন্যদিকে, কোভিডে মারা যাওয়াদের দাফন ও অন্ত্যষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা কর্মীরা সাংবাদিকদের বলেছেন, লাশ দাফনের জন্য তাদের কাছে অসংখ্য অনুরোধ আসছে। দাফন ও শ্মশানকে ত্বরান্বিত করতে নীতি পরিবর্তনের আশা করছেন কর্মকর্তারা।
এদিকে ভাইরাস প্রতিরোধে টিকার প্রতি জোর দিয়েছে দেশটি। ৩১ জুলাই শনিবার পর্যন্ত উভয় ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন দুই কোটি ১৪ হাজার ৫৪৯ জন। ২ আগস্ট থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই করোনা সেন্টারে গিয়ে টিকা নেওয়া যাবে। সে দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি দেশটিতে থাকা বিদেশি বৈধ বা অবৈধ সবাই সরাসরি সেন্টারে গিয়ে ফ্রিতে ভ্যাকসিন নিতে পারবেন। তবে এ সুযোগ আপাতত কুয়ালালামপুর এবং সেলাংগর প্রদেশের জন্য প্রযোজ্য। শনিবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (ভ্যাকসিন) মন্ত্রী খায়রি জামাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।