X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

সড়কে বেড়েছে মানুষ ও যানবাহনের চলাচল

রিয়াদ তালুকদার
০৮ আগস্ট ২০২১, ১৭:৪৩আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২১, ১৭:৪৩

লকডাউনের মধ্যেই প্রতিনিয়ত রাজধানীর সড়কগুলোতে বাড়ছে মানুষের চলাচল ও ব্যক্তিগত যানবাহনের চাপ।

কোথাও কোথাও সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। লকডাউনের মধ্যে দেখা গেছে অনেকেই গ্রামের বাড়ি ছুটছেন, আবার অনেকেই দূরপাল্লার বিভিন্ন জায়গা থেকে রাজধানীতে আসছেন। এছাড়া সম্প্রতি গার্মেন্টস কারখানা খুলে দেওয়ায়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা দেখা গেছে আগের চেয়ে অনেকটাই ঢিলেঢালা। যদিও সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ১০ আগস্ট পর্যন্ত থাকবে সব ধরনের বিধিনিষেধ। এরমধ্যেই খুলতে শুরু করেছে দোকানপাট। এছাড়া অনেক হোটেল-রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়াও চলছে।

রবিবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর গাবতলীতে দায়িত্বরত একজন পুলিশ সদস্য গাড়ির কাগজপত্র চেক করছিলেন, পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় একজন বলছিলেন, চেক কইরা কি হবে। সবই খুইল্লা দিছে। শুধু জনগণের হয়রানি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সার্জেন্ট বলেন, কি আর বলবো, চেকপোস্টে চেক করতে গিয়ে মানুষের বিভিন্ন কথা আমাদের হজম করতে হয়। এভাবেই আমরা রোদ-বৃষ্টির মধ্যে জনগণের সেবায় কাজ করে যাচ্ছি।

ঈদের পর থেকে গার্মেন্টস কারখানা খুলে দেওয়ায় রাস্তায় ব্যক্তিগত যানবাহনের চাপ বেশি। গার্মেন্টস কারখানায় কাজের কথা বলে অনেকেই ছুটছেন অন্য কাজে। এদিকে ঈদের পর থেকে লকডাউন বাস্তবায়নে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা অনেকটাই ঢিলেঢালা। সম্প্রতি মাঠে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া, তাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আমাদের এই জোনে চারজনের করোনা পজিটিভ হয়েছে। তারা চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমরাও এর মধ্য দিয়ে ডিউটি পালন করছি। তবে আমরা লক্ষ্য করছি ঈদের পর থেকেই লকডাউনের মধ্যেও মানুষ রাস্তায় বের হচ্ছেন এবং যানবাহনের চাপ আগের চেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে আমরা আমাদের নিয়মিত মনিটরিং জোরদার রেখেছি।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রধান সড়ক ছাড়া অলিগলিতে, পাড়া-মহল্লায় রয়েছে নানা বয়সীদের পদচারণা। অনেকেই বন্ধু-বান্ধবের সাথে ঘুরতে বেরিয়েছেন। আবার অনেকেই চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছেন। আড্ডা দেওয়ার তালিকা রয়েছে বয়স্করাও। অনেকের মুখে ছিল না মাস্ক। করোনা সংক্রমণে ঝুঁকির বিষয়ে যেন নেই তাদের কোন চিন্তা! অনেকেই বেরিয়েছেন ঘুরতে, কেউ প্রাইভেটকার নিয়ে আবার কেউ মোটরসাইকেল নিয়ে প্রিয়জনদের সাথে, কেউ আবার পরিবারের সদস্যদের সাথে।

এ অবস্থায় রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। রাজধানীর সড়কগুলোতে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করছে বেশি। বিশেষ করে সড়কগুলোতে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের সংখ্যা বেশি। অনেকেই নানা ধরনের কাজে বের হয়েছেন ব্যক্তিগত যানবাহন নিয়ে। এছাড়া গণপরিবহন বন্ধ থাকায় রয়েছে রিকশার দৌরাত্ম্য। গন্তব্যে যেতে চাওয়া হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। জরুরি কাজে যারা বের হয়েছেন তারা পড়েছেন বিপাকে।

226239339_258141152535559_6223213091195005498_n তেজগাঁও বিভাগের দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট মোখলেসুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আজ মোটামুটি রাস্তায় গাড়ির চাপ রয়েছে। লকডাউনকে কেন্দ্র করে আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। লকডাউনের শেষের দিকে এসে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বিশেষ করে প্রাইভেট কারের সংখ্যা এবং মোটরসাইকেল চলাচল কিছুটা বেড়েছে।

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল জোনের ট্রাফিক সার্জেন্ট উজ্জ্বল হোসাইন বলেন, বিশেষ করে প্রাইভেটকার এবং মোটরসাইকেলের আনাগোনা রয়েছে সড়কে। তবে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা লোকজনদের বাইরে বের হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইছি। ‘অপ্রয়োজনীয়' বিষয় প্রতীয়মান হলে আমরা সেসব গাড়ি বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছি।

লকডাউন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, নগরবাসীকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রতিনিয়ত করোনার সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। যারা বাইরে বের হচ্ছেন, বের হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব কোনো না কোনো যুক্তি রয়েছে। নগরবাসী স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে অনেকটাই উদাসীন। যে কারণে সংক্রমণ হার কমানো যাচ্ছে না। একটি শ্রেণীর মানুষকে অভাবে রেখে খাদ্য কিংবা চিকিৎসা সংকট দূর না করে, কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ না করে মানুষকে আমরা ঘরে রাখতে পারব না। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষ প্রতিদিনের উপার্জনের উপর নির্ভরশীল। করোনার থেকে খাবারের সংকটকে বেশি ভয় পাবে এটাই স্বাভাবিক।

তিনি আরও বলেন, যারা ঘরে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে হাওয়া পরিবর্তন করার জন্য যারা বাইরে বের হচ্ছেন তাদের বিষয়ে কথা হচ্ছে, ঘরে থাকতে কষ্ট হচ্ছে‑ মানসিকভাবে সেটা ঠিক যেমন কিন্তু বৃহৎ কল্যাণের জন্য আমাকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে এসব বিষয় মেনে নিতে হবে। কিভাবে বাসায় বসে পরিবারের সাথে এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে সময় কাটানো যায় সে বিষয়গুলো নিজেদের মধ্যে ভাবনায় আনতে হবে। কারণ যে বাইরে বের হলো সে যেমন একটি করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে থেকে যায় ঠিক তেমনি তার পরিবারের সদস্য কিংবা বাসায় থাকা বয়স্করাও সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। আমরা সব শ্রেণি-পেশার মানুষ যদি নিজেরা সচেতন হই, দায়িত্বশীল আচরণ করি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, তাহলে এই করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়ানো অনেকটাই সম্ভব।

/আরটি/এমএস/
সম্পর্কিত
ফটোকপি দোকানের কর্মচারী, জেলে, রাজমিস্ত্রি তৈরি করতো জাল টাকা
রাজধানীকে সুন্দর করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি: আইইবি
যাত্রাবাড়ীতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো যুবকের
সর্বশেষ খবর
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পণ্ড হলো না পরাগের শ্রম, দিল্লিকে হারালো রাজস্থান
পণ্ড হলো না পরাগের শ্রম, দিল্লিকে হারালো রাজস্থান
বাসের পেছনের অংশ খোয়া যাচ্ছে কেন?
বাসের পেছনের অংশ খোয়া যাচ্ছে কেন?
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
মন্ত্রীর অপেক্ষায় তরমুজ বিক্রিতে দেরি, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা
মন্ত্রীর অপেক্ষায় তরমুজ বিক্রিতে দেরি, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা