বান্দরবানের সাতটি উপজেলার বিভিন্ন সড়কের বেইলি ব্রিজগুলোর অবস্থা ভয়াবহ। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে ৭৩টি ব্রিজ। এর মধ্যে ৪০টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। এগুলো কোনোরকমে জোড়াতালি দিয়ে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। আর এসব ব্রিজ দিয়েই দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত চলছে যানবাহন।
সরেজমিন দেখা গেছে, সাতটি উপজেলার বিভিন্ন সড়কের বেশিরভাগ ব্রিজের কোথাও ধসে পড়েছে, কোথাও আবার পাটাতন ভেঙে গেছে। এসব ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে শত শত যানবাহন চলাচল করছে। যেকোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
গত ১৮ জুলাই রোয়াংছড়িতে কলারঝিরি এলাকায় একটি বেইলি ব্রিজের পাশের লোহার দেয়াল ভেঙে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ব্রিজটির নাট-বল্টু পুরাতন হয়ে ভেঙে যাওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) তথ্যমতে, বান্দরবানে ১৯৮০ সালে অস্থায়ীভাবে মোট ১৬৯টি বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে ৮৭টি আরসিসি। ৭৩টি ঝুঁকিপূর্ণ। এগুলোর মধ্যে ৪০টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
রোয়াংছড়ির বাসিন্দা উক্য মারমা জানান, ‘আগেও এসব বেইলি ব্রিজ ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমরা চাই না, ভবিষ্যতে আর কোনও দুর্ঘটনা ঘটুক।’
বাথোয়াই মারমা জানান, ‘এসব ব্রিজ দিয়ে শুধু বাসই নয়, গাছবোঝাই ট্রাক ও স্কেভেটরসহ মালামাল বহনকারী ছোট-বড় শত শত গাড়ি চলাচল করে। যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
ট্রাকচালক মিলন বলেন, ‘কিছু দিন আগেও একটা ব্রিজ ভেঙে গেছে। সেটা আবার জোড়াতালি দিয়ে ঠিক করা হয়েছে। এর উপর দিয়েই আমরা প্রতিনিয়ত মালবাহী ট্রাক চালিয়ে যাচ্ছি। এসব ব্রিজ পার হতে সব সময় আতঙ্কে থাকি।’
সওজের বান্দরবান শাখার অফিস সহকারী মো. শরিফ জানান, গত এক বছরে প্রায় ১১ লাখ টাকা ব্যয়ে জেলার ৭৩টি বেইলি ব্রিজ সংস্কার করা হয়েছে।
৪০টি অতি ঝুকিপূর্ণ ব্রিজ ভেঙে নতুনভাবে নির্মাণ এবং বাকিগুলো সংস্কারের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবান সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোসলেহ উদ্দিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ব্রিজগুলো বেশি পুরাতন হয়ে গেছে। এগুলোর ভারবহন ক্ষমতাও আগের মতো নেই। এসব বিষয় আমাদের মাথায় আছে। তাই যখনই কোনও প্রকল্প পাচ্ছি তা দিয়ে এগুলো সংস্কার করছি।