পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ায় নবায়নের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এরপর ৫-৬ মাস পার হলেও এখনও পাসপোর্ট হাতে পাননি অনেক প্রবাসী। এ কারণে বিভিন্ন দেশে থাকা বাংলাদেশিরা পড়েছেন বিপত্তিতে। কেউ ভিসার মেয়াদ বাড়াতে পারছেন না, কেউ ছুটিতে দেশে আসতে পারছেন না, কেউবা রাস্তায় চলাচল কিংবা কর্মস্থলে পড়েছেন নানা রকম সমস্যায়। কয়েকটি দেশে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, বাংলাদেশ পাসপোর্ট ও বহিরাগমন অধিদফতরের সার্ভারের সমস্যা থাকায় পাসপোর্ট নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে সৌদি প্রবাসী মোহাম্মদ প্রিন্স বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৮ মাস আগে রিনিউ করতে দিয়েছিলাম। আবেদন জমা দেওয়ার ৫ মাস পার হয়ে গেছে। এখনও পাসপোর্ট পাইনি। এই ঈদে দেশে ছুটিতে যেতে চেয়েছিলাম, পাসপোর্টের মেয়াদ না থাকায় যেতে পারিনি।’
মালয়েশিয়ায় থাকেন মারুফ খান আলমগীর। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘এ বছর মার্চ মাসে পাসপোর্ট নবায়নের জন্য দূতাবাসে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু এ পর্যন্ত কোনও খবর নেই। দেশে যেতে চেয়েছিলাম, পাসপোর্টের জন্য যেতে পারছি না।’
মালয়েশিয়া প্রবাসী নূরল আমিনও পড়েছেন একই সমস্যায়। তার পসেপোর্টের মেয়াদ গত ২১ জুন শেষ হয়ে গেছে। যদিও তিনি ২৯ এপ্রিল নবায়নের জন্য আবেদন করেছেন, তবে এখনও হাতে পাননি পাসপোর্ট।
সৌদি আরববে থাকেন সামিউল। তিনি বলেন, ‘জিদ্দাহ বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসে ২ জুন পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন করেছি। তারা বলেছে, ৪ মাস পরে যোগাযোগ করতে। অথচ আমাদের সঙ্গে ভারতীয় অনেকে আছেন, তারা ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট পেয়ে যান। এমনকি তাদের দূতাবাসেও যেতে হয় না, তাদের বাসায় কিংবা অফিসের ঠিকানায় দূতাবাস থেকে পাসপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আমাদের প্রতিবেশী দেশের সেবার মান এত উন্নত হতে পারলে আমাদের কেন এত হয়রানি।’
গত ১১ জুলাই কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাস পাসপোর্ট সংক্রান্ত একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে— ‘ঢাকায় পাসপোর্ট অধিদফতরের মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট সার্ভারের কারিগরি ত্রুটি সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে বিদেশে বাংলাদেশের সকল মিশনে পাসপোর্ট প্রস্তুত কার্যক্রম ঢাকা থেকেই বন্ধ রয়েছে। ফলে যে সব প্রবাসী ২২ মে থেকে আবেদন জমা দিয়েছেন, তাদের পাসপোর্ট বিতরণ সার্ভারের ত্রুটি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।’
শুধু কুয়েতে নয়, আরও অনেক দেশে বাংলাদেশ দূতাবাস ও হাইকমিশন প্রবাসীদের উদ্দেশে এ রকম বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে যে, পাসপোর্ট সার্ভারে কারিগরি ত্রুটি দেখা দিয়েছে। গত ৭ আগস্ট মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, পাসপোর্ট অধিদফতরের সার্ভারের ধারণ ক্ষমতা শেষ হয়ে গেছে। যার কারণে পাসপোর্টের আবেদন পাইপলাইনে জমা আছে। অচিরেই সমস্যা সমাধান হবে— এমন আশা প্রকাশ করে হাইকমিশনের আওতা-বহিভূর্ত জটিলতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস গত ৬ আগস্ট এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায় যে, পাসপোর্ট অধিদফতরের কারগরি সমস্যার কারণে নতুন পাসপোর্ট বিতরণ সম্ভব হচ্ছে না। মালদ্বীপে অবস্থতি বাংলাদেশ হাইকমিশন এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দেয় ৯ আগস্ট।
এ বিষয়ে জানতে গত ২ দিন ধরে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ূব চৌধূরীকে ফোন করে এবং মেসেজ দিয়ে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।