আত্মীয়-স্বজনে বাড়ি ভরপুর। চলছিল বিয়ের আয়োজন। দুই পরিবারের সদস্যরা বর-কনের গায়ে হলুদের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। দুপুরে বরকে সাজিয়ে কনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। অথচ সে বিয়েবাড়ির সাজানো প্যান্ডেলে জানাজা শেষে বরকে চিরবিদায় জানাতে হলো স্বজনদের।
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের রহবল দক্ষিণপাড়ায় হৃদয়বিদারক এ ঘটনা ঘটেছে। বিয়ের আগের রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আল আমিন (২৭) নামে ওই কলেজশিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) সকালে লাশ উদ্ধার করা হয়।
আল আমিন রহবল দক্ষিণপাড়া গ্রামের আলম আকন্দের ছেলে। তিনি বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার মৃত্যুতে দুই পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্থানীয়রা জানায়, আল আমিনের সঙ্গে একই উপজেলার এক তরুণীর (১৮) বিয়ে ঠিক হয়। সকালে ছিল গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান। দুপুরে কনের বাড়িতে বরযাত্রীর যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে বরের আসতে দেরি দেখে পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হয়। দরজা খুলে বিছানায় আল আমিনের লাশ দেখেন স্বজনেরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিয়েবাড়ির সাজানো প্যান্ডেলের পাশে বরের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
দেউলী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আল আমিনের মৃত্যু হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিল আল আমিন।
দেউলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল হাই প্রধান বলেন, আল আমিন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিল। স্বজনরা বলেছেন, ঘুমের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ছেলেটি।
আল আমিনের বাবা আলম আকন্দ বলেন, ছেলের মৃত্যুর ব্যাপারে আমাদের অভিযোগ নেই। বিয়ের দিন মৃত্যু হবে এটা তার কপালে লেখা ছিল।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে এ বিষয়ে পরিবারের সদস্যরা থানায় কিছুই জানায়নি। কেউ অভিযোগও দেয়নি।