পরকীয়া প্রেমে বাধা দেওয়ার জেরেই গাইবান্ধায় দুই বন্ধুকে শ্বাসরোধে হত্যার পর এক রশিতে বেঁধে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। ঘটনাটি আত্মহত্যা নয়; এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
রবিবার (১৫ আগস্ট) গাইবান্ধা পিবিআই কার্যালয়ে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দুই বন্ধুর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের বিষয়ে কথা বলেন পিবিআই গাইবান্ধা পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এক রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় দুই বন্ধু মৃণাল চন্দ্র দাস (২৪) ও সুমন চন্দ্র দাসের (২৩) লাশ উদ্ধারের ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে প্রচার করে অভিযুক্তরা। এ ঘটনায় প্রদীপ ও নিতাই নামে দুই জনকে আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা করা হয়। পরে পুলিশ প্রদীপ চন্দ্র দাসকে গ্রেফতার করে। পলাতক রয়েছে অপর আসামি নিতাই চন্দ্র। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রদীপ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
প্রদীপের জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ বলেন, সুমন চন্দ্র দাসের পরিবারের এক সদস্যের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে নিতাই চন্দ্র দাস। বিষয়টি জানাজানি হলে সুমন তার বন্ধু মৃণালকে নিয়ে বাধা দেয়।
এ নিয়ে দুই বন্ধুর সঙ্গে নিতাই চন্দ্রের কথা কাটাকাটি হয়। গত ১১ আগস্ট নিতাই চন্দ্র দাস তার বন্ধু গ্রেফতার প্রদীপ চন্দ্রসহ কয়েকজন মৃণাল ও সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী কৌশলে নির্জন স্থানে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় দুই বন্ধুকে। এরপর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে এক দড়িতে তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ আরও বলেন, গ্রেফতার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে দ্রুত সময়ে হত্যার রহস্য উদঘাটন সম্ভব হয়েছে। হত্যায় জড়িত নিতাই চন্দ্রসহ অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার পাঠানডাংগা মাঝিপাড়া গ্রামের বাগানের গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মৃণাল ও সুমনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃণাল চন্দ্র দাস বাদিয়াখালি ইউনিয়নের পাঠানডাংগা মাঝিপাড়া গ্রামের রাম চন্দ্র দাসের ছেলে ও সুমন চন্দ্র দাস চুনিয়াকান্দি গ্রামের সুশান্ত চন্দ্র ওরফে মিঠা সাধু দাসের ছেলে।