X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্ববিদ্যালয় খুলে না দিলে উন্মুক্ত জায়গায় ক্লাস

ঢাবি প্রতিনিধি
২৪ আগস্ট ২০২১, ১৯:৩৮আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০২১, ১৯:৩৮

সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয় না খুলে দিলে উন্মুক্ত স্থানে শিক্ষকরা প্রতীকী ক্লাস নেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছে ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’।

মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) জুম অ্যাপের মাধ্যমে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন।

এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাইদুল ইসলাম।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার দাবিতে শিক্ষক নেটওয়ার্ক ১১টি প্রস্তাব পেশ করে। প্রস্তাবগুলো হচ্ছে—

১.  বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সেটি না করলে  প্রতিবাদ  কর্মসূচি হিসেবে শিক্ষকরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের  ক্যাম্পাসে উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতীকী ক্লাস নেওয়া শুরু করবেন। 

২. ১ সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে দিতে হবে।  আবাসিক  হলে প্রথমে  শুধু অনার্স এবং মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের অনুমতি থাকবে। আবাসিক হলে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত না করে কোনোভাবে  পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরু করা যাবে না।  এসব ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা কার্যক্রম শেষ হয়ে গেলে, পরবর্তী ব্যাচগুলোর ধাপে ধাপে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে।

৩. আবাসিক হলগুলোতে গণরুম তুলে দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই সঙ্গে আবাসিক হল ব্যবস্থাপনা পরিপূর্ণভাবে শিক্ষকদের মাধ্যমে পরিচালিত হতে হবে, ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের মাধ্যমে নয়।

৪. বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টেস্ট  এবং টিকাদানের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে হলে প্রবেশ করা শিক্ষার্থীরা কোভিড টেস্ট এবং টিকাগ্রহণে অগ্রাধিকার পায়। ক্যাম্পাসে ব্যবস্থা করা গেলে সবচাইতে ভালো হয়, তাতে শিক্ষার্থীরা ভিড় এড়িয়ে টিকা নিতে পারবে।  

৫. ক্যাম্পাসগুলোতে অবস্থিত মেডিক্যাল সেন্টারগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, আইসোলেশনের ব্যবস্থা, অসুস্থ হলে শিক্ষার্থীদের দেখাশুনার ব্যবস্থা উন্নত করার কোনও বিকল্প নেই। এ বিষয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। 

৬. পরীক্ষার কার্যক্রম শেষ হয়ে যাওয়ার পর শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষে নিয়মিত পাঠদানের কার্যক্রম শুরু করতে হবে। তবে এখানেও করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে  ৫০% অনলাইন এবং ৫০% অফ লাইন ক্লাস চালু করা যেতে পারে। ৫০% অফ লাইন ক্লাসের মধ্যে ব্যবহারিক ক্লাস এবং অন্যান্য কার্যক্রম যেগুলো অনলাইনে করা কঠিন, সেসব  থাকতে পারে। 

৭. অনলাইন ক্লাসেও হাইব্রিড পদ্ধতি চালু করা যেতে পারে। যে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসতে পারবে, তারা সশরীর অনসাইট ক্লাস করবে। যারা পারবে না তারা অনলাইন ক্লাসে অংশ নেবে। যে ক্লাসে এসেছিল সে অসুস্থ হলে সে অনলাইনে চলে যাবে। পরিস্থিতি বেশি খারাপ হলে, আবারও পুরো অনলাইনে যাওয়া যেতে পারে।

৮. শিক্ষকদের অনলাইন টিচিং লার্নিং ম্যানেজমেন্টের সিস্টেম তৈরি করার জন্য প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা কমিটি গঠন করে এর কাজ শুরু করতে হবে এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। 

৯. শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

১০. অনলাইনে সুষ্ঠুভাবে পড়াশুনা চালিয়ে নেওয়ার জন্য  শিক্ষার্থীদের জন্য স্বল্পমূল্যে দ্রুত গতির ইন্টারনেট সার্ভিসের বিশেষ প্যাকেজ ব্যবস্থা চালু করতে হবে। 

১১. ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করে তাদের শিক্ষায় ফিরিয়ে আনার সেফটি নেটের ব্যবস্থা করতে হবে।   

এ সময় আলোচনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক অধ্যাপক ড. আনু মোহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কামরুল হাসান মামুন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক  আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী , বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোপালগঞ্জ) শিক্ষক আরাফাত রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজী মারুফুল ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাসির উদ্দিন।

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ড. আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধাপে ধাপে খুলে দেওয়া হোক। আমরা বলছি না, সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একযোগে খুলতে হবে। আমাদের দাবি হলো, সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে শক্তিশালী করে খুলে দেওয়া হোক, যেখানে টিকা, টেস্ট এবং আইসিইউ’র ব্যবস্থা থাকবে।’

তিনি আরেও বলেন, ‘হলগুলোতে গণরুমের ব্যবস্থা বাদ দিয়ে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করে ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হোক। সরকার যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে আরও গড়িমসি করে, তাহলে আমরা প্রতিবাদ হিসেবে উন্মুক্ত স্থানে প্রতীকী ক্লাস নেবো। ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ক্লাস নিয়েছেন। আমরাও নেবো। প্রতীকী ক্লাস নেওয়ার আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি।’

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পণ্ড হলো না পরাগের শ্রম, দিল্লিকে হারালো রাজস্থান
পণ্ড হলো না পরাগের শ্রম, দিল্লিকে হারালো রাজস্থান
বাসের পেছনের অংশ খোয়া যাচ্ছে কেন?
বাসের পেছনের অংশ খোয়া যাচ্ছে কেন?
সর্বাধিক পঠিত
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি