জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় সরকারিভাবে বরাদ্দ ঘর নির্মাণ বাতিলের অভিযোগে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবার বিক্ষোভ করেছেন। রবিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে ব্যানার নিয়ে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।
স্থানীয়রা জানায়, দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার কালিকাপুর এলাকার অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাজু শেখ ‘বীর নিবাস’-এর একটি ঘর বরাদ্দ পান। কিন্তু তার জমিটি পুকুর পাড়ে হওয়ায় বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তারা বেশ কয়েকবার ইউএনও এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রশিদের কাছে গেছেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। তাই উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে একটি ব্যানার নিয়ে ঝাড়ু হাতে স্লোগান দিয়ে মিছিল করেছেন সাজু শেখের পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে পুলিশ ও কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা সেখানে উপস্থিত হন। পরে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে সেখান থেকে চলে যান তারা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সাজু শেখের ছেলে মো. মোস্তফা বলেন, ‘আমরা গরিব। অনেক কষ্টে কোনোরকমে সংসার চলে। বাবা মারা গেছেন ১৫ বছর আগে। এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের সুপারিশে একটি ঘরটি বরাদ্দ পাই। কিন্তু পুকুর পাড়ে জমি হওয়ার কারণ দেখিয়ে ঘর নির্মাণ বাতিল করা হয়েছে। আমাদের অন্য কোনও জমি নেই। ইউএনওকে অনেক অনুরোধ করেছিল আমার বোন। কিন্তু অনুরোধ রাখেননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুকুরের পাড় যাতে না ভাঙে সেজন্যে ঋণ করে টাকা তুলে পাড় ঢালায় করেছি।তারপরও ইউএনও সেখানে ঘর নির্মাণ বাতিল করে দিয়েছেন। কত কষ্ট করে ঘরটা বরাদ্দ পেয়েছি। কত জায়গায় ঘুরেছি। আমাদের থাকার মতো কোনও ঘর নেই।’
এ বিষয়ে ইউএনও আব্দুল্লাহ বিন রশিদ বলেন, বীর নিবাস নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে একটি পাঁচ সদস্যের কমিটি আছে। কমিটির সদস্যরা সরেজমিন দেখেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা ধনাঢ্য, একজনের জমির মাটি নতুন, আরেকজনের জমি পুকুরের পাশে। কমিটির সিদ্ধান্তে তিনটি ঘর নির্মাণের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। তারা বলেছেন, ঝুঁকিপূর্ণ কোনও জমিতে ঘর নির্মাণ সম্ভব নয়। কারণ ঘর নির্মাণের পর ভেঙে বা ফেটে গেলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। তাই মুক্তিযোদ্ধা সাজু শেখের ঘরটিও নির্মাণ সম্ভব নয়।