X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

শেয়ালের জন্য ভালোবাসা

আব্দুর রউফ পাভেল, নওগাঁ
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৪৯আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৪৯

মানুষে পশুতে বন্ধুত্ব নতুন নয়। তবে বুনো শেয়ালের সঙ্গে মানুষের এমন মিতালির নজির বোধহয় আর কোথাও নেই। নওগাঁতে বিপন্ন প্রজাতির খেঁকশিয়ালের সঙ্গে মানুষের সখ্যতা আলোড়ন তুলেছে বেশ।

এমনটা সম্ভব করেছেন নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের দেখাদেখি গ্রামবাসীও এখন শেয়ালগুলোকে নিয়ে বেশ আগ্রহী। মাঝে মধ্যে তারাও সরবরাহ করছেন খাবার। বিলুপ্তপ্রায় এই লাজুক জাতের খেঁকশিয়ালগুলোর সংরক্ষণ ও বংশবৃদ্ধির সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা।

সূত্রে জানা গেছে, ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে বিপন্ন প্রজাতির প্রায় শ’খানেক খেঁকশিয়াল আছে। একসময় ওরা বিহারে আসা পর্যটকদের ফেলে দেওয়া এটা-ওটা খেতো। গত দেড়বছর ধরে করোনার কারণে বিহার বন্ধ থাকায় শেয়ালগুলো পড়ে যায় চরম খাদ্যসংকটে। ক্ষুধায় সারারাত ডাকতো ওরা।

বৌদ্ধ বিহারের কর্মচারীদের দেওয়া খাবার খাচ্ছে শেয়াল ওই সময় বিহারের কাস্টডিয়ান মুহাম্মদ ফজলুল করিম বিষয়টি বুঝতে পারেন। শেয়ালগুলোকে যৎসামান্য খাবার দিতে শুরু করেন তিনি। কয়েকজনকে জানালে তারাও রুটি কিনে আনতে লাগলো শেয়ালগুলোর জন্য। কেউ নিয়ে আসতে শুরু করলো বাড়ির রান্না করা খাবার। কিছুদিন যেতেই বিহারের মানুষগুলোকে বন্ধু ভাবতে শুরু করলো শেয়ালগুলো।  

এখন বিহারে কর্মীরাই শেয়ালগুলোর দেখভাল করছেন। প্রায় রাতেই খিচুড়ি রান্না করে খাওয়ানো হয় ওদের। বাইরে থেকেও অনেক পশুপ্রেমী নিয়ে আসছেন খাবার। রাতে ডাক দিলেই শেয়ালগুলো ছুটে আসে খেতে।

শেয়ালগুলোর খুব কাছে বসে খাওয়ান ফজলুল করিম। তার সঙ্গেই মূলত সখ্যতা বেশি। শেয়াল-মানুষের এমন মিতালি দেখতে রাতেও অনেকে ভিড় করছেন পাহাড়পুর বিহারে।

নওগাঁ থেকে আসা পর্যটক মাহফুজ রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘মানুষের সঙ্গে শেয়ালের এমন বন্ধুত্ব সত্যিই বিরল। এদের সংরক্ষণে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। তা না হলে এরা হারিয়ে যাবে।’

খাবার খেতে শেয়ালরা জড়ো হচ্ছে বিহারের কর্মচারী মাসুদ রানা বলেন, ‘শেয়ালগুলোর প্রতি মায়া জন্মে গেছে। এখানে বেড়াতে আসা কর্মকর্তাদের জানালে তারা মাঝে মাঝে খাবার দিয়ে সহায়তা করেন। তবে নিজেদের পকেট থেকে আর কতদিন এদের খাওয়াতে পারবো জানি না। তাই সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

ফজলুল করিম বলেন, ‘আমি যতদিন বিহারে আছি ততদিন এদের খাওয়ানোর চেষ্টা করবো। আগে এখানে পর্যটকরা পিকনিক করতো। শেয়ালগুলোর খাবারের সংকট হতো না। এখন পিকনিক বন্ধ।’

জেলা প্রশাসক মো. হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে শেয়ালগুলোর খাবারের ব্যবস্থা করার কোনো পদক্ষেপ এই মুহূর্তে নেই। তবে এদের যেন কেউ শিকার না করে সেই বিষয়ে নজর রাখা হবে।’

 

/এফএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী