X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

‘কোথায় যাবো জানি না’

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২১:৩৬আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২১:৪১

বছরের পর বছর নদী ভাঙনে আমরা দিশেহারা। দেখার কেউ নেই। কী অবস্থায় বসবাস করছি কেউ দেখে না। প্রতিদিনই নদী ভাঙছে। কোথায় যাবো জানি না। আমরা ত্রাণ চাই না, বেড়িবাঁধ চাই।

কথাগুলো বলছিলেন শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত রবিউল ইসলাম। তার মতো ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন অনেক। কেউ আবার ভাঙন আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরিয়ে অন্যত্র পাড়িয়ে দিয়েছেন।

জাজিরা উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে আবারও তীব্র নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। পদ্মার ভাঙনে গত দুই মাসে গৃহহীন হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে আরও শতাধিক পরিবারের। বিলীন হচ্ছে কৃষি জমি। সেই সঙ্গে নিঃস্ব হচ্ছে শত শত মানুষ। 

জাজিরা উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে তীব্র হয়েছে নদী ভাঙন

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে শরীয়তপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি নদী ভাঙন বেড়েছে। এর ফলে ভিটেবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষ। নদী তীর থেকে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে তারা। 

পূর্ব নাওডোবা, বিলাশপুর, পালেরচর, কুন্ডেরচর ও বড়কান্দি গ্রামে হঠাৎ করে আবারও পদ্মার ভাঙন তীব্র হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহে নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে শতাধিক পরিবার।

স্থানীয়রা বলছেন, দুই সপ্তাহ আগে পদ্মা নদীর পানি অস্বাভাবিক বেড়ে জাজিরায় তীব্র ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনের শিকার হয় পূর্ব নাওডোবা, বিলাশপুর, পালেরচর, কুন্ডের ও বড়কান্দি ইউনিয়নের ১২ গ্রামের ১২০টি পরিবার। আতঙ্কে শতাধিক পরিবার ইতোমধ্যে অন্যত্র চলে গেছে। হুমকিতে পড়েছে নদীর ১৪ কিলোমিটার এলাকায় বসবাসকারী কয়েক হাজার পরিবার। ভাঙন প্রতিরোধের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

সাহেব আলী মোল্লা, করিম সরদার ও কাদির ব্যাপারীসহ অন্যান্য ইউনিয়নের বাসিন্দারা বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে কেউ উদ্যোগ নিচ্ছে না। আমরা রিলিফ চাই না, স্লিপ চাই না, নদীভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান চাই।

কয়েক সপ্তাহে নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে শতাধিক পরিবার

পাতালিয়াকান্দি গ্রামের কৃষক সুমন মাঝি বলেন, ‘আমার চার শতাংশ জমির পাট নদীর ভাঙনে শেষ। এখনও ভাঙছে। কৃষি কাজ করে সংসার চলে। এই জমি না থাকলে না খেয়ে মরতে হবে।’

জাজিরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম রফিকুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক বছরের ভাঙনে ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ডের ৮০ ভাগ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। সেই সঙ্গে বিলীন হয়েছে এই ওয়ার্ডের পাতালিয়া কান্দি গ্রামের ১৩২ ঘরবাড়ি।

ভাঙন প্রতিরোধের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবিব বলেন, এ বছর জাজিরায় ভাঙন বেড়েছে। শুরু থেকেই জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও বস্তা ফেলে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্থায়ীভাবে তীর রক্ষার জন্য প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন হলে জাজিরার ওই সব এলাকা ভাঙন থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা পাবে।

শরীয়তপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সৈয়দ আজিম উদ্দিন জানান, আমরা নিয়মিত পানি ও নদী ভাঙন এলাকার মানুুষের খোঁজ-খবর রাখছি। ভাঙন এলাকার মানুষদের প্রত্যক পরিবারকে নগদ পাঁচ হাজার টাকা ও শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুই বান্ডিল করে ঢেউটিন দেওয়া হবে। আমাদের কাছে ৮০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১০ লাখ টাকা মজুত আছে।

/এসএইচ/
সম্পর্কিত
তলিয়ে গেছে দুবাই বিমানবন্দর, বিপাকে প্রবাসীরা
৭৫ বছরের মধ্যে রেকর্ড বৃষ্টি দেখলো আমিরাত, মরু শহর দুবাইয়ে বন্যা
কাজাখস্তানে ভয়াবহ বন্যা, প্রায় এক লাখ মানুষ স্থানান্তর
সর্বশেষ খবর
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী