X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মার ভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছেন হরিরামপুরবাসী

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:২১আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:২১

দুই সপ্তাহের ভাঙনে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের শতাধিক পরিবারের বসতভিটা, ফসলি জমি, পাকা সড়ক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, মসজিদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঘরবাড়ি, সহায়-সম্বল হারিয়ে এখানকার মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।   

এই এলাকায় এখনও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে আজিমনগর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়, ৫৭নং হারুকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুটি আশ্রয়ন প্রকল্প, দুটি আদর্শ গ্রাম, বাজারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। হাতিঘাটা পদ্মাপাড় ও আজিমনগর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে মঙ্গলবার মানববন্ধন করেন পাঁচ শতাধিক মানুষ।

এদিকে ভরা বর্ষায়ও মানিকগঞ্জে পদ্মার ভাঙনে হরিরামপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ১৩টি মৌজার মধ্যে ১২টিই পদ্মার পেটে চলে গেছে। একটি অবশিষ্ট থাকলেও সেটি যেকোনও সময় পদ্মা গিলে খাবে। এই বন্যায় সাত দিনে কম করে হলেও ২০টি পরিবার তাদের বসতবাড়ি পদ্মা কেড়ে নিয়ে সর্বস্বান্ত করেছে। তারা এখন গৃহহীন হয়ে অন্যের জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের মধ্যে কোর্টকান্দি গ্রামের গর্জন খাঁ, আবুল ফজল, ময়ফুল। কুশেরচর গ্রামের মানিকজান, বাবুল গায়ান ও বারেক গাজী। এছাড়া মুহাম্মদপুরের লালন শেখ সবাই পদ্মায় বাড়িঘর হারিয়ে আজ নিঃস্ব।

পদ্মার ভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছেন হরিরামপুরবাসী ওই ইউনিয়নের হুগলাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পদ্মার দূরত্ব মাত্র ৩শ’ মিটার। ভাঙনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন কাঞ্চনপুর থেকে আন্দারমানিক পর্যন্ত এলাকার লোকজন। হরিরামপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর থেকে আন্দারমানিক পর্যন্ত নদীভাঙনে অনেকে কৃষিজমি ও বাড়িঘর হারিয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এলাকার লোকজন আর ত্রাণ বা কোনও ধরনের সহযোগিতা চান না। তাদের দাবি একটাই, ভাঙন রোধ। আগে নদীর তীর দিয়ে নৌকা কিংবা লঞ্চ দেখলে এলাকার লোকজন ত্রাণের জন্য ছুটে আসতো। এখন তারা নৌকা ও লঞ্চ দেখলে একত্রিত হয়ে পদ্মার তীর রক্ষার্থে স্থায়ী বাঁধের দাবিতে প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন। তাদের দাবি একটাই, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ। তারা কোনও ধরনের ত্রাণ বা সাহায্য চান না।

একসময় জোতজমি বড় বড় ঘর সবই ছিল আফতাব মোল্লার (৬৭)। পদ্মা তার সব সহায়-সম্পদ গিলে খেয়েছে। পরিবার নিয়ে তিনি আশ্রিত অন্যের জমিতে। তিনি বলেন, ‘তিনবার আমার বাড়ি নদীতে ভেঙেছে। আমি পরের জায়গায় থাকি। অনেক বড় বড় লোক শুধু মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছেন শক্ত বাঁধ করে দেবেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। যেসব জায়গায় বালির বস্তা ফেলা হয়েছে সেখানে ভাঙেনি। যেখানে বালির বস্তা ফেলা হয়নি সেখানে ভাঙছে। সময়মতো বালির বস্তা দিলে আমরা ঠিকানা হারাতাম না।’

জেলা পরিষদের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার সালাম চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান সরকার নদীভাঙন রোধ ও নদী খনন, নদী শাসনসহ বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু এখানে কাজ হচ্ছে না কেন সেটা আমার বোধগম্য নয়। মাঝেমধ্যে কিছু বস্তা ফেলে নদীভাঙন রোধ করা যাবে না। সঠিক পরিকল্পনা করে স্থায়ী টেকসই বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।’

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

/এমএএ/
সম্পর্কিত
অসময়ে ভাঙছে ব্রহ্মপুত্রের পাড়, দুশ্চিন্তায় স্থানীয়রা
নদ থেকে অবৈধভাবে তোলা বালুতে পৌরসভার চত্বর তৈরি করছেন প্যানেল মেয়র
অসময়ে পদ্মার ভাঙনে আতঙ্কে এলাকাবাসী
সর্বশেষ খবর
আট বছর পর জাবিতে ডিন নির্বাচন
আট বছর পর জাবিতে ডিন নির্বাচন
তামাকে বিষ, তবুও ঝুঁকছেন কৃষক 
তামাকে বিষ, তবুও ঝুঁকছেন কৃষক 
এফএ কাপে হাল্যান্ডকে নিয়ে সংশয়ে সিটি
এফএ কাপে হাল্যান্ডকে নিয়ে সংশয়ে সিটি
মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেনের বহুল প্রতীক্ষিত সহায়তা বিলে ভোট আজ
মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেনের বহুল প্রতীক্ষিত সহায়তা বিলে ভোট আজ
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
দেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
সিনেমা সমালোচনাদেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা