X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

এফবিআইকে যেভাবে ফাঁকি দেয় ৯/১১ হামলার মাস্টারমাইন্ড

বিদেশ ডেস্ক
১১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৫৯আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৫৯

২০ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ার হামলায় সবচেয়ে বেশিবার উচ্চারিত হওয়া আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন। তবে তার কাছে এই পরিকল্পনা নিয়ে যায় কে? এই হামলার তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের গঠিত ‘৯/১১ কমিশনের’ মতে এই হামলার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ খালিদ শেখ মোহাম্মদ, সংক্ষেপে কেএমএস নামে পরিচিত।

যাত্রীবাহী বিমান দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্থাপনায় হামলা চালানোর পরিকল্পনাটি আল কায়েদার কাছে নিয়ে যায় খালিদ শেখ মোহাম্মদ। আর তার পরিকল্পনা অনুযায়ী পাইলটদের প্রশিক্ষণ দিয়ে হামলাটি চালাতে সক্ষম হয় জঙ্গিগোষ্ঠীটি।

খালিদ শেখ মোহাম্মদের জন্ম কুয়েতে। পড়ালেখা আমেরিকায়। ১৯৮০’র দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েতবিরোধী লড়াই করেছে। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর হামলা চালানোর আগে থেকেই মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআই’র নজরদারিতে ছিল সে। এফবিআইয়ের সাবেক স্পেশাল এজেন্ট ফ্র্যাঙ্ক পেলিগ্রিনো ৯০’র দশক থেকেই তাকে অনুসরণ করছিলেন।

১৯৯৩ সালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বোমা হামলার ঘটনায় তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন ফ্র্যাঙ্ক পেলিগ্রিনো। ওই সময়ই তাদের সামনে আসে খালিদ শেখের নাম। পেলিগ্রিনো জানতে পারেন ওই হামলায় জড়িত এক ব্যক্তিকে অর্থ দেয় খালিদ।

১৯৯৫ সালে আবারও এফবিআই’র সামনে আসে খালিদ শেখ মোহাম্মদের নাম। ওই সময়ে প্রশান্ত মহাসাগরের আকাশসীমায় কয়েকটি বিমানে হামলার পরিকল্পনা করা হয়। সেই পরিকল্পনাতেও খালিদ শেখের সংশ্লিষ্টতা দেখেন এফবিআই কর্মকর্তারা। এ থেকে তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে ধারণা পায় মার্কিন তদন্ত সংস্থাটি।

দীর্ঘদিন ধরে অনুসরণের এক পর্যায়ে ১৯৯০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে খালিদ শেখ মোহাম্মদকে ধরে ফেলার সুযোগ আসে এফবিআই-এর সামনে। এফবিআই স্পেশাল এজেন্ট ফ্র্যাঙ্ক পেলিগ্রিনো একটি দল নিয়ে তাকে ধরতে ওমানে যান। তাদের পরিকল্পনা ছিল সীমান্ত অতিক্রম করে তারা কাতারে যাবেন আর খালিদ শেখকে গ্রেফতার করবেন। সন্দেহভাজন অপরাধীকে ফিরিয়ে আনতে একটি বিমানও প্রস্তুত রাখা হয়।

তবে ওই পরিকল্পনায় বাধা হয়ে দাঁড়ান মাঠ পর্যায়ে কর্মরত মার্কিন কূটনীতিকরা। স্পেশাল এজেন্ট ফ্র্যাঙ্ক পেলিগ্রিনো কাতারে চলে যান। সেখানে গিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং কূটনীতিকদের জানান যে, খালিদ শেখ বিমানে হামলার ষড়যন্ত্রে জড়িত। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা ওই দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে আশঙ্কায় পেলিগ্রিনোকে কাজ চালিয়ে যেতে অনুমতি দেননি।

পেলিগ্রিনো বলেন, ‘আমার ধারণা তারা ভেবেছিল এটা হয়তো নৌকা দোলানোর মতো কোনও ঘটনা।’ শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রদূত তাকে জানান যে, কাতারের কর্মকর্তারা বলছেন খালিদ শেখের কোনও খবর পাওয়া যাচ্ছে না। পেলিগ্রিনো জানান, ‘রাগ, ক্ষোভ, হতাশা নিয়ে বুঝতে পারলাম তাকে ধরার একটা সুযোগ আমরা হারিয়ে ফেললাম।’

মালয়েশিয়ার একটি হোটেলে বসে টেলিভিশনে টুইন টাওয়ার হামলার ছবি দেখেন ফ্র্যাঙ্ক পেলিগ্রিনো। ওই ছবি দেখার পরই তার প্রতিক্রিয়া ছিলো হায় ইশ্বর, ‘এটা খালিদ শেখ মোহাম্মদের কাজ।’

খালিদ শেখ মোহাম্মদ পরে জানতে পারে যুক্তরাষ্ট্র তাকে খুঁজছে। ফলে কাতার ছেড়ে আফগানিস্তানে পালিয়ে যায় সে। ২০০৩ সালে আবারও তাকে শনাক্ত করে পাকিস্তান থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে সিআইএ খালিদ শেখকে গোপন স্থানে নিয়ে উন্নত জিজ্ঞাসাবাদ কৌশল প্রয়োগ করে তথ্য আদায়ের চেষ্টা করে। পরে তাকে গুয়ানতানামো বে কারাগারেও আটক রাখা হয়। বর্তমানে চূড়ান্ত বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে এই সন্দেহভাজন অপরাধী।

/জেজে/এএ/
সম্পর্কিত
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পুরস্কার পেলেন কুবির চার শিক্ষার্থী
ন্যাটোর অংশীদার হতে আগ্রহী আর্জেন্টিনা
কানাডার ইতিহাসে বৃহত্তম স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার ৬
সর্বশেষ খবর
জেলেনস্কিকে হত্যার পরিকল্পনায় জড়িত অভিযোগে পোলিশ নাগরিক গ্রেফতার
জেলেনস্কিকে হত্যার পরিকল্পনায় জড়িত অভিযোগে পোলিশ নাগরিক গ্রেফতার
বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিলেন মিয়ানমারের আরও ১৩ সীমান্তরক্ষী
বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিলেন মিয়ানমারের আরও ১৩ সীমান্তরক্ষী
ভাসানটেকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ: ঝরে গেলো আরেকটি প্রাণ
ভাসানটেকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ: ঝরে গেলো আরেকটি প্রাণ
আজকের আবহাওয়া: ঢাকাসহ ৩ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস
আজকের আবহাওয়া: ঢাকাসহ ৩ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ