পটুয়াখালীর সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের ৭১নং নন্দীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ দখল করে বসবাস করছে একটি পরিবার। রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে স্কুল খুললেও পরিবারটি সেখানেই অবস্থান করছে।
বসবাসকারী ওই পরিবারটি স্থানীয় বাসিন্দা মোশারফ হোসেনের। এ বিষয়ে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুলের রুমে এভাবে থাকতে দেওয়া বিধিসম্মত নয়। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং দ্রুত বিদ্যালয়ের রুমটি দখলমুক্ত করা হবে।’
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ দখল করে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন মোশারফ হোসেন। কিছু বেঞ্চ একত্রিত করে বানিয়েছেন দুইটি চৌকি। সেখানে তিনি ও তার স্ত্রী থাকছেন। কিছু বেঞ্চ একত্রিত করে রাখা হয়েছে গৃহস্থালির মালামাল। রান্নার জন্য বারান্দার এক কোণায় চুলা বসানো হয়েছে। তার স্ত্রী রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সংবাদকর্মীদের দেখে তিনি দ্রুত শ্রেণিকক্ষে চলে যান।
বিদ্যালয়ের কর্মরত চার শিক্ষকের মধ্যে সহকারী শিক্ষকরা উপস্থিত থাকলেও পাওয়া যায়নি প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলামকে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও তেমন একটা চোখে পড়েনি।
সহকারী শিক্ষক জি এম হিলারী বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক ওই ব্যক্তিকে এখানে কয়েক মাস আগে থাকতে দিয়েছেন।’
আরেক শিক্ষক হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘সম্প্রতি বিদ্যালয় আংশিক খোলা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি তেমন একটা হচ্ছে না। পুরোপুরি খুললে এখানে ক্লাস বসাতে হবে।’
মোবাইল ফোনে প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘করোনাকালে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের অনুরোধে তাকে এখানে থাকতে দেওয়া হয়েছে। স্কুল পুরোপুরিভাবে খুললেই তাকে শ্রেণিকক্ষ ছাড়তে বলা হবে।’
মোশারফ হোসেন জানান, তার দাদা বিদ্যালয়ের জমিদাতা। কিন্তু তার নিজস্ব কোনও জমি না থাকায় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে একটি ঘর চেয়েছিলেন। তিনি ঘর দিতে না পেরে এখানে থাকতে দিয়েছেন।
মাদারবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মিলন মাঝি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।’
বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রিজিয়া বেগম জানান, ‘দুই-একদিনের মধ্যেই ওই ব্যক্তিকে রুম থেকে বের করে শ্রেণিকক্ষ দখলমুক্ত করা হবে।’