পটুয়াখালীতে নৌপুলিশ সদস্যদের মারধরে মো. সুজন মিয়া (৩০) নামের এক জেলের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পটুয়াখালী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। তিনি বলেন, কোনও ব্যক্তির দায় পুলিশ নেবে না। ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনের জন্য জেলা পুলিশ ও নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কলাপাড়া উপজেলার বালিয়াতলী এলাকা তেতুলিয়া নদীতে কারেন্ট জাল জব্দ করার অভিযানকালে নৌ পুলিশের পিটুনিতে সুজন হাওলাদার নামের এক জেলের মৃত্যুর অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা নৌপুলিশের চার সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে।
নিহত জেলের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ সদস্যরা সুজনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী এক জেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন , নৌপুলিশের সদস্যরা ট্রলারযোগে জেলেদের অনেকক্ষণ ধাওয়া করলে জেলেরা তাদের ট্রলারটি তীরে ভিড়িয়ে চার জন দৌড়ে পালিয়ে যান। এসময় ট্রলারে থাকা সুজনকে পুলিশ সদস্যরা ধরে ফেলে এবং অনেক মারধর করে। এক পর্যায়ে ট্রলারে রাখা জালের ওপর সুজন অচেতন হয়ে পড়ে যান। এ সময় পুলিশ পিটিয়ে সুজনকে হত্যা করেছে এমন খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ সদস্যদের ট্রলারসহ অবরুদ্ধ করে রাখেন। অপরদিকে অচেতন সুজনকে প্রথমে স্থানীয় বাবলাতলা বাজারে নিয়ে যান স্থানীয়রা। ওই বাজারের এক পল্লী চিকিৎসক দেখে জানান সুজন জীবিত নেই। স্বজনরা সেখান থেকে তাকে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক সুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
বালিয়াতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবিএম হুমায়ুন কবির বলেন, স্থানীয় মানুষ পুলিশ সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। পরে কলাপাড়া ও মহিপুর থেকে ২০ থেকে ২৫ জন পুলিশ এসে স্থানীয়দের শান্ত করে পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
পটুয়াখালী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, স্থানীয় অনেক লোকজন জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছেন। সেখানে কলাপাড়া সার্কেলসহ মহিপুর থানার ওসির নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন। যদিও বিষয়টি নৌপুলিশের, সেখানে জেলা পুলিশের কোনও সদস্যদের সঙ্গে কিছু হয়নি। তারপরেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।