X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাতিসংঘভুক্তি নিয়ে সেবছর শুরু হয় বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতা

উদিসা ইসলাম
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮:০০আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১:৫০

(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বরের ঘটনা।)

জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্য পদ লাভের ব্যাপারে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর উদ্দেশ্যে এদিন দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গঠন করা হয়। দুই সদস্যের এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন তরুণ সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আমীর-উল-ইসলাম ও কূটনীতিক কে এম কায়সার। কে এম কায়সার সে সময় বার্মায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন।

ব্যারিস্টার আমীর-উল-ইসলাম তাদের কার্যক্রমের বিষয়ে জানান যে, তারা জাতিসংঘে প্রাথমিক কাজকর্ম করতে যাচ্ছেন। যদি প্রয়োজন হয়, তবে একটি বড় প্রতিনিধিদল পরবর্তীতে যেতে পারে। ঢাকার কূটনৈতিক মহল এই প্রতিনিধি দলে কে এম কায়সারের অন্তর্ভুক্তির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন। কারণ, তিনি চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাইয়ের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত ছিলেন। তৎকালীন রেঙ্গুনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত থাকাকালীন বার্মা চীনের ঘনিষ্ঠ মিত্র থাকায় কায়সারের সঙ্গে চৌ এন লাইয়ের ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। কূটনৈতিক মহল মনে করে, কায়সার চীনের সর্বোচ্চ কূটনৈতিক মহলের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করতে পারবেন। তিনি বাংলাদেশের জাতিসংঘভুক্তির প্রশ্নে চীনের মনোভাব সম্পর্কে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল বলে বিশ্লেষক মহলে কথা ওঠে। কিছু দিন আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন যখন চীনে তার প্রথম সফরে গিয়েছিলেন, তখন কে এম কায়সার তার সঙ্গে ছিলেন।

দৈনিক ইত্তেফাক, ২৪ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩ এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্য পদ লাভের প্রশ্নে মতামত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তিনি ফলপ্রসূ ভূমিকা গ্রহণ করতে পারবেন বলে আশা করা হয়। জোটনিরপেক্ষ শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষে বলিষ্ঠ তৎপরতা চালানোর জন্য তরুণ সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আমীর-উল-ইসলামের ভূমিকার প্রশংসা করেছিলেন খোদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ফলে প্রতিনিধি দলে এই দুই ব্যক্তির অন্তর্ভুক্তি কার্যকর হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল।

বাস্তুহারা ও বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা

বাস্তুহারা এবং বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য সরকার কয়েক কোটি টাকার একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানানো হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, দেশের প্রতিটি মহকুমায় একটি করে কুটির শিল্পকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। যারা বেকার এবং যাদের আর্থিক সচ্ছলতা নেই, তাদের এসব কেন্দ্রে নিয়োগ দেওয়া হবে। আরও পরিকল্পনা করা হয়, যাদের যে কাজের প্রতি স্পৃহা বেশি, তাদের পছন্দ অনুযায়ী সেই কাজ দেওয়া হবে। শুধু তা-ই নয়, কুটির শিল্পের কাজে যাদের নিয়োগ করা হবে, তাদের কাজের দক্ষতা অনুযায়ী উন্নত ধরনের ট্রেনিং প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। সরকার এই বৃহৎ পরিকল্পনা কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগের ব্যবস্থার কথা জানায়। এই উদ্দেশ্যে সাহায্য ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় সে সময় ৬২ মহকুমার জন্য এক কোটি টাকা বরাদ্দ করে। এই টাকা দিয়ে প্রতিটি মহকুমার কুটির শিল্প গড়ে তোলার জন্য জমি ক্রয় ও গৃহনির্মাণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাকিস্তানে বাঙালিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত

যেসব বাঙালি পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসবেন, তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করার জন্য পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশ প্রদান করেছে। এরমধ্যে জানানো হয়, এই নির্দেশ অনতি বিলম্বে কার্যকর হবে। এদিকে এরইমধ্যে চতুর্থবারের মতো আফগান বিমানযোগে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বাঙালিরা দেশে ফিরতে শুরু করেছেন। ১৯৭৩ সালের ২৮ আগস্ট সই করা ‘দিল্লি চুক্তি’ অনুযায়ী সামরিক-বেসামরিক ব্যক্তিদের সপরিবারে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ  নেওয়া হয়। 

ডেইলি অবজাভার, ২৪ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩ অর্থব্যবস্থা সংস্কারের প্রশ্নে মতানৈক্য

বিশ জাতি কমিটির অর্থমন্ত্রীরা অর্থব্যবস্থা সংস্কারের প্রশ্নে তাদের মতবিরোধ দূর করতে ব্যর্থ হন। তবে তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে আগামী বছরের (১৯৭৪) ৩১ জুলাইয়ের আগে একটি রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছাতে হবে। নাইরোবিতে অর্থমন্ত্রীরা দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে মিলিত হয়ে তাদের সহকারীদের প্রণীত খসড়া সম্পর্কে আলোচনা করেন। কিন্তু দুই ঘণ্টা পর দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে। এই খসড়া পরবর্তীতে সাধারণের জন্য প্রকাশ করা হবে। মন্ত্রীরা ১৯৭৪ সালের জানুয়ারিতে আবারও মিলিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ওয়াকিবহাল মহল মনে করে, মন্ত্রীরা যেসব বিষয়ে একমত হয়েছেন, খসড়ায় তা উল্লেখ করা হয়েছে।

/এপিএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
ভূমিহীনমুক্ত হচ্ছে সাতক্ষীরার ৬ উপজেলা, প্রস্তুত ৩৬৪টি ঘর
‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার বেঁচে থাকার সাহস জুগিয়েছে’
রাহমানের কণ্ঠে ‘জয় বাংলা’, ভিডিও করলেন মুগ্ধ প্রধানমন্ত্রী
সর্বশেষ খবর
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা