যাত্রা শুরু করলো ‘ইউল্যাব প্রেস’। ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের (ইউল্যাব) নতুন সংযোজন এটি। বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর রামচন্দ্রপুরে ইউল্যাবের স্থায়ী ক্যাম্পাসে ফিতা কেটে এর উদ্বোধন করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ১৩ জন লেখকের মন্তব্যের সংকলন ‘স্মরণে শেখ মুজিব’ প্রকাশ করেছে ইউল্যাব প্রেস। গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচনও করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে অংশ নেন ইউল্যাব বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ও সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ইউল্যাব প্রেসের যাত্রার শুরুতে বঙ্গবন্ধুর ওপর লেখা গ্রন্থ প্রকাশ করতে পেরে আমরা সত্যি আনন্দিত। এর লেখকরা সবাই ইউল্যাব পরিবারের সদস্য।’
কাজী নাবিল আহমেদ যোগ করেন, ‘একটি ভিশন সামনে রেখে আদর্শ মানুষ তৈরির জন্য ইউল্যাব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কাজী শাহেদ আহমেদ। আমাদের লক্ষ্য ছিল, শিক্ষার্থীরা শুধু বিবিএ বা কম্পিউটার সায়েন্স পড়বে না। একইসঙ্গে অর্থনীতি, ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি সম্পর্কেও জানবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ইউল্যাব প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় যারা বাংলা ভাষা শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছিল। আমাদের প্রচুর গবেষণা হচ্ছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যত গবেষণা করা সম্ভব সেই পরিমাণ সুযোগ আমরা এখনও পাচ্ছি না। সরকারিসহ বিভিন্ন সহায়তা পেলে আমাদের বিশ্বাস, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি ইউল্যাব গবেষণায় এগিয়ে থাকবে এবং স্বাধীন চিন্তায় আমরা এগিয়ে যেতে পারবো।’
ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় প্রকাশিত ‘স্মরণে শেখ মুজিব’ সম্পাদনা করেছেন ইউল্যাব বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এবং জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। তিনি ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আমাদের ধারণা ও মন্তব্য এই গ্রন্থে তুলে ধরেছি। এটি সম্পাদনার সুযোগ পেয়ে আমি সৌভাগ্যবান।’
স্বাগত বক্তব্যে ইউল্যাবের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক সামসাদ মর্তুজা উল্লেখ করেন, “এখন থেকে ইউল্যাব প্রেস থেকেই আমাদের সব প্রকাশনা বের হবে। এটি গত দুই বছরের প্রচেষ্টার ফসল। ‘স্মরণে শেখ মুজিব’ যাকে নিয়ে লেখা তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। আমাদের জন্য তিনি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্থপতি। আমাদের সহকর্মীরা তাদের নিজস্ব দৃষ্টি দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে বর্ণনা করেছেন এতে।’’
‘স্মরণে শেখ মুজিব’ প্রকাশের জন্য ইউল্যাবের ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রধান অতিথি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তার বক্তব্যে, “১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর আমাদের এমন একটা সময় এসেছিল যখন তাঁকে ভুলে যাওয়ার প্রচেষ্টা চলছিল। সেই অবস্থা পাল্টেছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা ‘কারাগারের রোজনামচা’ উপহার দিয়েছেন আমাদের। তিনি না থাকলে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ প্রকাশ হতো না। আমরাও বঙ্গবন্ধুকে সেভাবে জানতাম না। তার গড়ে ওঠার প্রতিটি ধাপ জানতাম না। আমরা সেসব জেনে সমৃদ্ধ হয়েছি। সেজন্যই আজ এমন গ্রন্থের প্রকাশনা দেখছি।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মুজিববর্ষ উদযাপন বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী। তার মন্তব্য, ‘তরুণ প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর দর্শন জানাতে হবে। তাঁর জাতীয়তাবাদ ছিল অসাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। বৈষম্যের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর জাতীয়তাবাদের ধারণাও সবার কাছে তুলে ধরতে হবে। তাহলেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমাদের শ্রেষ্ঠ অভিবাদন জানাতে পারবো।’
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের শুরুতে পরিবেশন করা হয় ইউল্যাবের সংগীত। এরপর দেখানো হয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউল্যাবের ওপর নির্মিত একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ইউল্যাব বোর্ড অব ট্রাস্টিজের বিশেষ উপদেষ্টা অধ্যাপক ইমরান রহমান।
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন ইউল্যাবের ট্রেজারার মিলন কুমার ভট্টাচার্য, রেজিস্ট্রার লে. কর্নেল (অব.) ফয়জুল ইসলাম, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।