শিশুদের নোবেলখ্যাত আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার-২০২১-এর জন্য মনোনীত হয়েছে নাটোরের শেখ রিফাদ মাহমুদ। শিশুদের অধিকার উন্নয়ন ও নিরাপত্তায় অসাধারণ অবদানের জন্য প্রতিবছর এই পুরস্কার দেওয়া হয়। শিশুশ্রম ও স্বাস্থ্য ক্যাটাগরিতে বিশ্বের অন্যান্য শিশুর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে মাহমুদ।
রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে কম্পিউটার টেকনোলজি বিষয়ে তৃতীয় পর্বে অধ্যয়নরত মাহমুদ শহরের কানাইখালী এলাকায় বসবাস করে। তার বাবা-মা শিক্ষক।
২০১৭ সালে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘ নামে স্বেচ্ছাসবী সংগঠন গড়েছে মাহমুদ। ওই সংগঠনের ব্যানারে শিশুশ্রম বন্ধের পক্ষে পথ শিশুদের নিয়ে কাজ শুরু করে। বিভিন্ন সময় বিতরণ করে শিক্ষা উপকরণ, করোনা সচেতনতা বিষয়ক লিফলেট। শিশুদের নিয়ে স্বাস্থ্য সচেতনতা ক্যাম্পেইন করে।
গত এপ্রিল মাসে শিশু শান্তি পুরস্কারের আবেদন করে। এরপর ‘কিডস রাইটস ফাউন্ডেশন’র ওয়েবসাইটে বিষয়টি প্রকাশ করা হয়। ওয়েব সাইটে দেখা যায়, সবুজ উন্নয়ন সংঘের জন্য মনোনীত হয়েছে মাহমুদ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শেখ রিফাদ মাহমুদ জানায়, অংশগ্রহণকারী শিশুদের মধ্যে থেকে এক জনকে বিজয়ী ঘোষণা করবে আয়োজক কমিটি। আমি বিজয়ী হওয়ার আশাবাদী।
জানা যায়, ২০০৫ সালে রোমে অনুষ্ঠিত নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীদের এক শীর্ষ সম্মেলন থেকে এই পুরস্কার চালু করে ‘কিডস-রাইটস’ নামে ফাউন্ডেশন। শিশুদের অধিকার, উন্নয়ন ও নিরাপত্তায় অনবদ্য অবদানের জন্য প্রতিবছর আন্তর্জাতিক শিশুশান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়। ১২-১৮ বছর বয়সীরা পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য। ২০১৩ সালে এই পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই পরের বছর জয় করেছিলেন নোবেল শান্তি পুরস্কার। এ ছাড়া ২০২০ সালে বাংলাদেশ থেকে সাদাত রহমান এই পুরস্কার অর্জন করেন।
পুরস্কারটির অর্থমূল্য এক লাখ ইউরো। এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক শিশুদের পদক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আগামী ১৩ নভেম্বর নেদারল্যান্ডসে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা।
এক প্রশ্নের জবাবে শেখ রিফাদ মাহমুদ জানায়, আমি ভবিষ্যতে শিশু অধিকার নিশ্চিত ও শিশুশ্রম বন্ধে কাজ করতে চাই। শুধু আমাদের মুখের কথায় এবং সচেতনতার বার্তায় শিশুশ্রম রোধ হবে না। রোধ করতে হলে প্রথমে কর্মহীন অভিভাবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। তবেই প্রকৃতপক্ষে শিশুশ্রম বন্ধ সম্ভব। এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে চাই। জাতিসংঘ প্রণীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে সামাজিক কার্যক্রমে ভূমিকা রাখতে চাই।