X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্মাণের ১৫ দিনে হেলে পড়া সেতুটি ৪ বছরেও ‌‘সোজা’ হয়নি

আতাউর রহমান জুয়েল, ময়মনসিংহ
১৭ অক্টোবর ২০২১, ১৩:৪৫আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২১, ১৩:৪৫

ময়মনসিংহ সদরের খাগডহর ইউনিয়নের জেলখানা চরের কাটাখালি খালে ২০১৭ সালে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। এতে ব্যয় হয় ৫৪ লাখ টাকা। সেতু নির্মাণ হওয়ায় চরাঞ্চলবাসী ভেবেছিল, এবার তাদের ভোগান্তি লাঘবে হবে। কিন্তু সেই ভোগান্তি কমেনি, বরং বেড়েছে। ওই সেতুর পাশ দিয়ে ভোগান্তি নিয়েই চলাচল করছে তারা।

স্থানীয়রা জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের অধীনে ২০১৭ সালের এপ্রিলে কাটাখালি খালের ওপর ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। দরপত্রের মাধ্যমে জহিরুল ইসলাম নামে এক ঠিকাদার কাজটি করেন। বর্ষার আগ মুহূর্তে বৃষ্টির মধ্যেই কাজ চলে। খালে পানি জমে থাকা অবস্থায় সেচ দিয়ে জুলাইয়ের শেষে বেজের কাজ শেষ করা হয়। এরপর কাঠ ও খুঁটির মাধ্যমে সেতু ঢালাই দেয়। এরই মধ্যে বন্যার পানি চলে আসায় তীব্র স্রোতে বেজের নিচ থেকে মাটি সরে যায়। এতে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মাথায় সেতুটি হেলে পড়ে। 

সেতুর পাশ দিয়ে ভোগান্তি নিয়েই চলাচল করছে এলাকাবাসী

সেতু হেলে যাওয়ার পর সেই সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরেজমিন তদন্ত করেন। এরপর দীর্ঘ চার বছর কেটে গেলেও সেটা সংস্কার বা নতুন করে আর কোনও সেতু নির্মাণ হয়নি। 

স্থানীয় রায়হান আলী জানান, পানির মধ্যে তাড়াহুড়ো করে কাজটি শেষ করতে গিয়ে বন্যায় বেজমেন্টের নিচ থেকে মাটি সরে যায়। এতে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মাথায় সেতুটি হেলে পড়ে।চরাঞ্চলবাসীর যাতায়াতের দুর্ভোগ কমাতে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু তা আদৌ কমেনি। সেতুর পাশ দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, ব্রহ্মপুত্র নদ পার হয়ে একটি সড়ক কাটাখালি খালের বুক চিড়ে চরাঞ্চল পরানগঞ্জ ও বোরোরচর এলাকার দিকে গেছে। এই সড়ক হয়ে প্রতিদিন প্রায় ২৮টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ময়মনসিংহ শহরে যাতায়াত করে। খালের ওপর সেতুর কাজ শুরু হওয়ার পর চরাঞ্চলবাসী স্বপ্ন দেখেছিল, তাদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ ঘুচবে। কিন্তু সেতু নির্মাণের পর তা হেলে যাওয়ায় মানুষের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে রয়েছে।

 নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মাথায় সেতুটি হেলে পড়ে

স্থানীয়রা জানান, শুকনো মৌসুমে যাতায়াতের জন্য টাকা তুলে সেতুর পাশে খালের ওপর মাটি দিয়ে যাতায়াত করছেন তারা। তবে বর্ষাকালে যাতায়াতের জন্য নৌকা ছাড়া কোনও উপায় থাকে না।

চরাঞ্চলের মুদি দোকানি আব্দুর রহিম জানান, কয়েকশো’ শিক্ষার্থী ময়মনসিংহ শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে। সেুতটি হেলে যাওয়ায় বর্ষাকালে এসব শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না। বর্ষা আসলে তাদের ভোগান্তি আরও বাড়ে।

কৃষক কলিম উদ্দিন জানান, সেতু দিয়ে কোনোকিছুই চলতে পারে না। চরাঞ্চলের কৃষকরা তাদের কৃষিপণ্য ও উৎপাদিত সবজি শহরে নিয়ে বিক্রিতে ভোগান্তিতে পড়েন। এ কারণে পণ্যের ন্যায্যমূল্যও পান না  কৃষকরা। দ্রতই নতুন করে একটা সেতু নির্মাণের দাবি জানান তিনি।

ময়মনসিংহ সদর উপজেলা দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মনিরুল হক ফারুক জানান, তিনি যোগদানের আগেই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কাজ শেষ হওয়ার পর বন্যায় হেলে পড়ায় ঠিাকাদারকে কার্যাদেশের অনুমোদিত ৫৪ লাখ চার হাজার ৬৫০ টাকার বিপরীতে মাত্র ১৭ লাখ টাকার বিল দেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তদন্ত করে দেখেছেন, বন্যার পানির তোড়ে নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় সেতুটি হেলে গেছে। এই সেতু আর নতুন করে নির্মাণের সুযোগ নেই।

/এসএইচ/
সম্পর্কিত
রাজশাহীতে ঈদের আগেই বেপরোয়া কিশোর গ্যাং ও বাইকার পার্টি!
এবার এক লাফে ৬১.৩৪ শতাংশ পানির দাম বাড়াতে চায় চট্টগ্রাম ওয়াসা
ফয়েল পেপার আটকে ঘণ্টাখানেক বন্ধ ছিল মেট্রোরেল
সর্বশেষ খবর
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা