আনারসের পর এবার মালটা চাষে সফলতা পেয়েছেন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার সন্তোষপুর গ্রামের আইয়ুব আলী। চলতি মৌসুমে বাগানের মালটা বিক্রি করে এক লাখ টাকা খরচ বাদে সাত লাখ টাকা আয় করেছেন। গত বছর মালটা বিক্রি করে আয় হয়েছিল ছয় লাখ টাকা।
আইয়ুব আলী তিন একর জমিতে এক লাখ টাকা খরচ করে মালটা চাষ করেছেন। তার বাগানে বারি-১ ও ভিয়েতনাম-৪ জাতের ১২০০ মালটা গাছ রয়েছে। চলতি মৌসুমে প্রতি গাছে প্রায় ৪০ কেজি মালটা হয়েছে। এবার বাগান থেকে প্রায় ২০০ মণ মালটা বিক্রি করেছেন। প্রতি মণ মালটা গড়ে বিক্রি হয়েছে চার হাজার টাকা। হিসাবে আট লাখ টাকার মালটা বিক্রি করেছেন। মালটা চাষে সার, সেচ এবং শ্রমিক বাবদ খরচ হয়েছে এক লাখ টাকা।
আইয়ুব আলী জানান, পাঁচ বছর আগে তিন একর জমিতে বারি-১ ও ভিয়েতনাম-৪ জাতের ১০০ চারা নিয়ে মালটা বাগান করেন। পরে বাগানের গাছ থেকে কলম তৈরি করে রোপণ করেন। এখন বাগানে গাছের সংখ্যা ১২০০। গত বছর প্রথমবারের মতো মালটার ফলন এসেছিল এবং বিক্রি করে খরচ বাদে ছয় লাখ টাকা আয় করেছেন।
তিনি আরও জানান, চলতি মৌসুমে বাগান থেকে প্রায় ২০০ মণ মালটা বিক্রি করেছেন। মালটা বিক্রি করে খরচ বাদে তার আয় হয়েছে সাত লাখ টাকা। বাগানের পরিপক্ক গাছ থেকে কলম প্রস্তুত করেছেন ১০ হাজারের মতো। প্রতিটি চারা বিক্রি করছেন ১০০ টাকা। হিসাবে এ বছর চারা বিক্রি করে ১০ লাখ টাকা আয় করবেন তিনি।
আইয়ুব আলীকে দেখে ওই এলাকায় মালটা চাষে ঝুঁকেছেন চাষিরা। উপজেলার প্রায় শতাধিক চাষি মালটা চাষ করছেন। সফল হয়েছেন তারা।
স্থানীয় চাষি আব্দুল মালেক জানান, তিন বছর আগে আইয়ুব আলীর বাগান থেকে মালটার ১০০ চারা নিয়ে ৫০ শতক জমিতে বাগান করেছেন। এবার প্রথম বাগানে মালটার ফলন হয়েছে। প্রতিটি মালটার গাছে ২০-২৫ কেজি ফল পাওয়া যায়। খরচ বাদে মালটা বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা মুনাফা হয়েছে তার। লাভজনক হওয়ায় আগামীতে মালটা বাগান আরও বড় করার কথা জানান মালেক।
জেলা কৃষি অধিদফতরের তথ্যমতে, ফুলবাড়িয়া, ভালুকা, ঈশ্বরগঞ্জ ও গৌরীপুর উপজেলার পাঁচ শতাধিক চাষি মালটার বাগান করেছেন। অনেকে এখন মালটা বিক্রি করে স্বাবলম্বী।
কৃষি অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. মতিউজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, লাভজনক হওয়ায় ময়মনসিংহের বিভিন্ন উপজেলায় চাষিরা বাণিজ্যিকভাবে মালটা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এই এলাকায় উৎপাদিত মালটা দেশের বিভিন্ন জায়গায় যায়। এখানকার মালটা মিষ্টি এবং সুস্বাদু।
এর আগে আইয়ুব আলী চলতি মৌসুমে ১০ একর জমির দুটি বাগানে আনারস চাষ করে খরচ বাদে ১৭ লাখ টাকা আয় করেছেন।