X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কার নয় পরিষ্কার করা হচ্ছে ‘অপরাজেয় বাংলা’

ঢাবি প্রতিনিধি
১৮ নভেম্বর ২০২১, ১১:৫২আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২১, ১১:৫২

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলা ভবনের সামনে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে ‘অপরাজেয় বাংলা’। স্বাধীনতা সংগ্রামে ছাত্রসমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণের দৃশ্য তুলে ধরে ভাস্কর্যটি। কলা ভবন নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ‘অপরাজেয় বাংলা’ অবায়ব। এখন যদি কেউ কলা ভবনের দিকে যান, তিনি কিঞ্চিৎ ধাক্কা খেতে পারেন। কেননা ভাস্কর্যটি তেরপালে মোড়ানো রয়েছে। মনে প্রশ্ন জাগতে পারে কী হচ্ছে ভেতরে?

তেরপালে মোড়ানোর কারণ কী জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রাব্বানী জানান, এ সংশ্লিষ্ট কমিটি রয়েছে, যার সদস্য কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নিসার হোসেন ও বিশ্ববিদ্যালয় ভাস্কর্য বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক নাসিমা হক মিতু। এ বিষয়ে তারা বলতে পারবেন।

তেরপালে মোড়ানো অপরাজেয় বাংলা কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার বলেন, ‘এটা ভৌগোলিকভাবে কলা ভবনের এলাকায় হওয়ায় আমরা এর তত্ত্বাবধানে রয়েছি। তবে সার্বিক তত্ত্বাবধান ও ব্যবস্থাপনায় রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য বিভাগ।’

ভাস্কর্য বিভাগের চেয়ারম্যান নাসিমা হক বলেন, ‘এটি সংস্কার নয় পরিষ্কারের কাজ চলছে। যদিও এটি আরও আগে করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু তখন দেশে ভাস্কর্য ইস্যু নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করায় পাবলিক সেন্টিমেন্ট বিবেচনায় তা করা হয়নি। এরপর বেশ কিছুদিন বৃষ্টি ছিল, আর এখন যেহেতু বৃষ্টি নেই, তাই পরিষ্কারের কাজ শুরু করেছি।’

ভাস্কর্য সংস্কারে কোনও নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভাস্কর্য সংস্কারের ক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু নিয়ম রয়েছে। এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হলো—যার ভাস্কর্য, তিনি জীবিত থাকলে আগে অবশ্যই তার অনুমতি নিতে হবে। এরপর সংস্কারের ক্ষেত্রে ভাস্কর্যটি যে মেটারিয়াল দিয়ে তৈরি তার চেয়ে তুলনামূলক কম শক্ত মেটেরিয়াল দিয়ে সংস্কারের কাজ করতে হবে। নতুবা এটির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’

অপরাজেয় বাংলা পরিষ্কার করা হচ্ছে সর্বস্তরের মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণের প্রতীক ‘অপরাজেয় বাংলা’। ১৯৭২-৭৩ সালে ডাকসুর ভিপি মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং জিএস মাহবুব জামানের উদ্যোগে ‘অপরাজেয় বাংলা’ নির্মাণ কাজে হাত দেওয়া হয়। এর তিনটি মানবমূর্তির একটির ডান হাতে দৃঢ় প্রত্যয়ে রাইফেলের বেল্ট ধরা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি। এর চোখে মুখে স্বাধীনতার চেতনা উদ্দীপ্ত। এর মডেল ছিলেন আর্ট কলেজের ছাত্র মুক্তিযোদ্ধা বদরুল আলম বেনু। থ্রি নট থ্রি রাইফেল হাতে সাবলীল ভঙ্গিতে দাঁড়ানো অপর মূর্তির মডেল ছিলেন সৈয়দ হামিদ মকসুদ ফজলে। আর নারী মূর্তির মডেল ছিলেন হাসিনা আহমেদ। ১৯৭৫ সালের পর অনেকদিন অপরাজেয় বাংলার নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল।

১৯৭৯ সালের ১৯ জানুয়ারি পূর্ণোদ্যমে অপরাজেয় বাংলার নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৯৭৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় এ ভাস্কর্যের উদ্বোধন করা হয়। তবে অপরাজেয় বাংলার কাছে ভাস্করের নাম খচিত কোনও শিলালিপি নেই। স্বাধীনতার এ প্রতীক তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন গুণীশিল্পী ভাস্কর সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনের বেদিতে দাঁড়ানো তিন মুক্তিযোদ্ধার প্রতিচ্ছবি যেন অন্যায় ও বৈষম্য দূর করে দেশে সাম্য প্রতিষ্ঠার গান গাইছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে।

 

/আইএ/
সম্পর্কিত
কোড সামুরাই হ্যাকাথনের দ্বিতীয় পর্বের ফল প্রকাশ, ৪৬ দল নির্বাচিত
ঢাবির সুইমিংপুলে শিক্ষার্থীর মৃত্যু: বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি
অ্যাকাডেমিক মান উন্নয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মাস্টারপ্ল্যান’
সর্বশেষ খবর
আগুন নেভাতে 'দেরি করে আসায়' ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে 'দেরি করে আসায়' ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা