মালয়েশিয়ান একটি নাম্বার থেকে ফোন করে জানানো হয়েছিল মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে বোমা আছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই ‘বোমা’ উদ্ধারের প্রচেষ্টা চালানো হয়। যদিও পুরো উড়োজাহাজে তল্লাশি করে বোমার কোনও অস্তিত পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) প্রথম প্রহরে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ-উল আহসান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
এর আগে, বুধবার (১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজে বোমা আছে এমন খবরে হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসসহ জরুরি সেবা সংস্থাগুলোকে খবর দেওয়া হয়, বাড়ানো হয় সার্বিক নিরাপত্তা। পরে উড়োজাহাজটিতে তল্লাশি চালানো হয়।
তল্লাশি অভিযান শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ-উল আহসান বলেন, একটি মালয়েশিয়ান নম্বর থেকে ফোন কল এসেছিল, বোমা থাকার বিষয়ে। র্যাব বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে এ তথ্য জানিয়েছিল। তবে আমরা সঙ্গত কারণে ওই নম্বর কিংবা কলারের পরিচয় প্রকাশ করছি না।
এ খবর পাওয়ার পর আমরা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা সংস্থাকে জানাই। বোম্ব থ্রেটের একটি এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড ওপারেটিং প্রসিডিউরস) এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে এ সংক্রান্ত একটি কমিটিও রয়েছে। আমরা এ খবর পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে একটি বৈঠক করি। বৈঠকে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের কাছেও বোম্ব থ্রেটের খবরের সত্যতা পাওয়া যায়নি। কিন্তু যেহেতু একটি থ্রেট এসেছে, সেটাকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। আমরা এসওপি অনুযায়ী সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছি।
তিনি আরও জানান, মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের এই ফ্লাইটটিতে ১৩৫ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে এক জন মালয়েশিয়ান নাগরিক, বাকিরা বাংলাদেশি। ফ্লাইটটি মালয়েশিয়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা নিয়মিত ফ্লাইট ছিল।
তারপরও এসওপি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিমান বাহিনীকে খবর দেওয়া হলে, তাদের বোম্ব ডিজপোজাল ইউনিট হাজির হয়। এ ছাড়াও পুলিশ, এপিবিএন, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস আসে। সেনা বাহিনীর সদস্য, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দাসহ অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিরাও আসেন।
তৌহিদ-উল আহসান বলেন, ৯টা ৩৮ মিনিটে ল্যান্ড করে ফ্লাইটটি। এসওপি অনুযায়ী যাত্রীদের উড়োজাহাজ থেকে এক এক করে নামিয়ে তল্লাশি করা হয়। এরপর উড়োজাহাজটির ভেতরে এবং কার্গো থেকে লাগেজ নামিয়ে তল্লাশি করা হয়। বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের ডগ স্কোয়াডের একটি চৌকস দল যাত্রীদের লাগেজে তল্লাশি চালায়। কিন্তু কোথাও বোমা কিংবা বিস্ফোরক জাতীয় কিছুর সন্ধান পাওয়া যায়নি। আমরা এসওপি অনুযায়ী পূর্ণ অ্যাকশন নিয়েছি। বোমার তথ্যের কোন ভিত্তি না থাকলেও আমরা গুরুত্ব দিয়ে অভিযান পরিচালনা করেছি। পরে উড়োজাহাজটিকে পরবর্তী ফ্লাইটের সেইফ ঘোষণা করা হয়েছে।